ঢাকা ০৯:০১ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৩ অগাস্ট ২০২৫, ১৯ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শহীদ মিনারে এনসিপির ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা মানিক মিয়া অ্যাভিনিউতে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য আয়োজন ‘৩৬ জুলাই’ “শেখ হাসিনা: সব অপরাধের নিউক্লিয়াস, বললেন চিফ প্রসিকিউটর” ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত “১০ লাখ টাকার বেশি আমানত ও সঞ্চয়পত্রে আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক” কুষ্টিয়ায় স্বামীকে বেঁধে স্ত্রীকে দলবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগে, আটক ৫ সাইবার সিকিউরিটিখাতে এ বছরের সবচেয়ে বড় ডিল – ইসরায়েলি কোম্পানি বিক্রি হচ্ছে ২৫ বিলিয়ন ডলারে “ইরান চায় চীন-পাকিস্তান সিল্ক রোডে যুক্ত হতে: প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ান” “রাজসাক্ষী হয়ে ট্রাইব্যুনালে সাবেক আইজিপি মামুন: নিরাপত্তা জোরদার” “হ্যামস্ট্রিং চোটে ভুগছেন মেসি: মাঠ ছাড়লেন ১১ মিনিটে”

ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:৩৩:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫
  • / 2

ছবি সংগৃহীত

 

উজানের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে ধাপে ধাপে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। সকাল ৬টায় পানি ছিল ৫২.১৩ সেন্টিমিটার, যা ৯টায় পৌঁছে যায় ৫২.১৫ সেন্টিমিটারে—এটাই বিপদসীমা। এরপর দুপুর ১২টার দিকে পানি দাঁড়ায় ৫২.২০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার নুরুল ইসলাম জানান, “উজানে পানির প্রবাহ বাড়ায় দ্রুতই তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বেড়েছে।” পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ রয়েছে সতর্কাবস্থায়।

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল ও চরগ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভাষ্যমতে, ৮ থেকে ১০ হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ডিমলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, “অন্তত ১০টি চরগ্রামের মানুষ বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন। খগাখাড়িবাড়ির বাইশপুকুর গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে।”

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, “সবচেয়ে বড় চরগ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। ফসলের জমি, ধানের বীজতলা ডুবে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি দ্রুতই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।”

অপরদিকে, ব্যারাজের ভাটি অঞ্চলে লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার নদীবেষ্টিত চর ও নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। হাঁটুসমান পানি প্রবেশ করেছে বাড়িঘরে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম বলেন, “উজানের ভারী বর্ষণ ও বৃষ্টির কারণে পানি বেড়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে আরও পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।”

ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, “আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আছি এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে।”

নীলফামারী জেলা প্রশাসন নদীতীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, তারা যেন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যান এবং স্থানীয় প্রশাসনের দিক নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপরে, নিম্নাঞ্চল প্লাবিত

আপডেট সময় ০৬:৩৩:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৫

 

উজানের টানা ভারী বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলের কারণে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর ফলে জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলগুলোতে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

রবিবার (৩ আগস্ট) সকাল থেকে ধাপে ধাপে তিস্তার পানি বাড়তে শুরু করে। সকাল ৬টায় পানি ছিল ৫২.১৩ সেন্টিমিটার, যা ৯টায় পৌঁছে যায় ৫২.১৫ সেন্টিমিটারে—এটাই বিপদসীমা। এরপর দুপুর ১২টার দিকে পানি দাঁড়ায় ৫২.২০ সেন্টিমিটার অর্থাৎ বিপদসীমার ৫ সেন্টিমিটার ওপরে।

ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) গেজ রিডার নুরুল ইসলাম জানান, “উজানে পানির প্রবাহ বাড়ায় দ্রুতই তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বেড়েছে।” পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারাজের ৪৪টি স্লুইসগেট খুলে দেওয়া হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট বিভাগ রয়েছে সতর্কাবস্থায়।

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই, খগাখড়িবাড়ী, টেপাখড়িবাড়ী, খালিশা চাপানী, ঝুনাগাছ চাঁপানী, গয়াবাড়ী এবং জলঢাকা উপজেলার গোলমুন্ডা, ডাউয়াবাড়ী, শৌলমারী ও কৈমারী ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ নিম্নাঞ্চল ও চরগ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে।

স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের ভাষ্যমতে, ৮ থেকে ১০ হাজার পরিবারের বাড়িঘরে পানি ঢোকার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

ডিমলার টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রবিউল ইসলাম শাহিন জানান, “অন্তত ১০টি চরগ্রামের মানুষ বন্যা আতঙ্কে রয়েছেন। খগাখাড়িবাড়ির বাইশপুকুর গ্রাম ইতোমধ্যেই প্লাবিত হয়েছে।”

পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) চেয়ারম্যান হাফিজুর রহমান বলেন, “সবচেয়ে বড় চরগ্রাম ঝাড়সিংশ্বরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। ফসলের জমি, ধানের বীজতলা ডুবে গেছে। বন্যা পরিস্থিতি দ্রুতই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।”

অপরদিকে, ব্যারাজের ভাটি অঞ্চলে লালমনিরহাট জেলার হাতিবান্ধা ও কালিগঞ্জ উপজেলার নদীবেষ্টিত চর ও নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে। হাঁটুসমান পানি প্রবেশ করেছে বাড়িঘরে। অনেকে পরিবার-পরিজন নিয়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন।

ডালিয়া ডিভিশনের উপসহকারী প্রকৌশলী তহিদুল ইসলাম বলেন, “উজানের ভারী বর্ষণ ও বৃষ্টির কারণে পানি বেড়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে আরও পানি বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।”

ডিভিশনের নির্বাহী প্রকৌশলী অমিতাভ চৌধুরী জানান, “আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারিতে আছি এবং বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি রয়েছে।”

নীলফামারী জেলা প্রশাসন নদীতীরবর্তী ও চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন, তারা যেন নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যান এবং স্থানীয় প্রশাসনের দিক নির্দেশনাগুলি অনুসরণ করেন।