টমেটো চাষের দুঃস্বপ্ন: সুনামগঞ্জের চাষিরা বিপদে
সুনামগঞ্জের চাষিরা এবার টমেটো চাষে ভেবেছিলেন স্বপ্ন পূরণ হবে, কিন্তু এখন তা হয়ে দাঁড়িয়েছে এক দুঃস্বপ্নে। লাখ টাকা বিনিয়োগের পরেও চাষিরা তাদের ফসল বাজারে বিক্রি করতে না পেরে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। ক্ষেতেই ঝরে পড়ছে টমেটো, আর যা বেচতে পারছেন তা বিক্রি করে শ্রমিক ও পরিবহন খরচও উঠছে না।
জামালগঞ্জ, মান্নানঘাট, গজারিয়া, কাশীপুর, শরীফপুরসহ ১৫টি গ্রামের চাষিরা এ বছর বড় ক্ষতির মুখে। কাশীপুর গ্রামের চাষি আব্দুল কাদির বলেন, “এই বছর প্রায় ৮০ হাজার টাকা খরচ করেছি টমেটো চাষে, কিন্তু এখন পর্যন্ত ১০ হাজার টাকারও টমেটো বিক্রি করতে পারিনি। বাকি সব ক্ষেতেই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।” বাজারে চাহিদা না থাকার কারণে, চাষিরা যে কয়টি টমেটো বিক্রি করেছেন তাও তিক্ত অভিজ্ঞতায় পরিণত হয়েছে।
এছাড়া, জামালগঞ্জের হারুন মিয়া বলেন, “এলাকায় টমেটোর দাম এখন এক টাকা কেজি, যা শ্রমিক ও পরিবহন খরচও পুষিয়ে দিচ্ছে না। ব্যাংক ও এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে চাষ করেছি, এখন মনে হচ্ছে ঋণের বোঝা নিয়ে এলাকা ছাড়তে হবে।” পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে, চাষিরা হিমাগারের অভাবে টমেটো সংরক্ষণ করতে পারছেন না। এতে তাদের পরিশ্রম এবং বিনিয়োগ পুরোপুরি অপচয় হয়ে যাচ্ছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, সুনামগঞ্জে এবছর টমেটো চাষের পরিমাণ প্রায় দুই হাজার হেক্টর। কিন্তু প্রকৃত সমস্যার অন্যতম কারণ হলো হিমাগারের অভাব, যা সবজি সংরক্ষণ করতে না পারার ফলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে।
এতসব সমস্যার মধ্যে, চাষিরা মনে করছেন সরকারের উচিত দ্রুত একটি আধুনিক সবজি সংরক্ষণাগার স্থাপন করা। এতে তারা সহজেই তাদের উৎপাদিত সবজি সংরক্ষণ করে সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে পারবেন। এখন শুধু প্রয়োজন সরকার ও স্থানীয় প্রশাসনের সহায়তার, যাতে চাষিরা তাদের ফসলের ন্যায্য দাম পেতে পারেন।