নীতিসুদ কমাল বাংলাদেশ ব্যাংক, ঋণপ্রবাহ বাড়াতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক

- আপডেট সময় ১১:৫৩:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫
- / 5
ঋণপ্রবাহ বাড়াতে এবং বাজারে তারল্য জোগাতে নীতিসুদের হার কমানোর ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। গতকাল মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, রেপো রেট বা নীতিসুদের হার ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্ত আজ বুধবার থেকে কার্যকর হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মনিটারি পলিসি বিভাগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, স্ট্যান্ডিং ল্যান্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) সুদের হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ এবং আভার নাইট রেপো সুদের হার ১০ শতাংশে অপরিবর্তিত থাকবে। তবে রেপো হার কমানোয় বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে তুলনামূলক কম সুদে অর্থ ধার নিতে পারবে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে সাধারণ মানুষ ও ব্যবসায়ীদের ঋণগ্রহণেও।
বিশ্লেষকরা বলছেন, নীতিসুদের হার কমানো হলে ব্যাংকগুলো কম সুদে ঋণ দিতে উৎসাহ পাবে। এতে বিনিয়োগ বাড়বে, পণ্য উৎপাদন ও বাজারে অর্থের সরবরাহ বাড়বে। যদিও একই সঙ্গে তারা সতর্ক করে দিচ্ছেন, অর্থের সরবরাহ বৃদ্ধি পেলে ভোক্তা চাহিদা বাড়বে, ফলে মূল্যস্ফীতির চাপও বাড়তে পারে।
অর্থনীতিবিদদের মতে, এটি একটি সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি যা মূলত বেসরকারি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে নেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ ছিল নিম্নমুখী। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের মে মাসে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ছিল ৭ দশমিক ১৭ শতাংশ, যা এপ্রিল মাসে ছিল ৭ দশমিক ৫০ শতাংশ। এ প্রবৃদ্ধি গত কয়েক মাস ধরেই কমতির দিকে রয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি বিভিন্ন অনুষ্ঠানে জানিয়েছিলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে এলে ধাপে ধাপে সুদহার কমানো হবে। তিনি আশাবাদ প্রকাশ করেছিলেন, আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশের নিচে নেমে আসবে।
তবে তার আগেই ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এবং অর্থনীতির গতি ফিরিয়ে আনতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতিসুদের হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিল। উল্লেখ্য, গত জুন মাসে দেশের সার্বিক মূল্যস্ফীতি কমে দাঁড়ায় ৮ দশমিক ৪৮ শতাংশে, যা গত প্রায় তিন বছরে সর্বনিম্ন।
নীতিসুদের হার কমানোর এই সিদ্ধান্তের ফলে বেসরকারি বিনিয়োগ ও উৎপাদন খাতের গতি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সতর্কভাবে তারল্য ও মুদ্রাস্ফীতির ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।