লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে মোংলা বন্দরে রেকর্ড রাজস্ব আদায় ও জাহাজ আগমন

- আপডেট সময় ০৬:৪৫:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
- / 3
এক সময়ের মৃতপ্রায় মোংলা বন্দর এখন দেশের দ্বিতীয় সমুদ্রবন্দর হিসেবে অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে রেকর্ড সংখ্যক জাহাজ আগমন ও কার্গো হ্যান্ডলিংয়ের মাধ্যমে বন্দরটি রাজস্ব, মুনাফা এবং কার্যক্রমে প্রত্যাশার চেয়েও ভালো ফলাফল অর্জন করেছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুর ১২টায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, চলতি অর্থবছরে ৮০০টি জাহাজ আগমনের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও ৮৩০টি জাহাজ এসেছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৩০টি বেশি এবং বৃদ্ধি পেয়েছে ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ। কার্গো হ্যান্ডলিং হয়েছে ১০৪ দশমিক ১২ লাখ মেট্রিক টন, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮৮ দশমিক ৮০ লাখ টন। এতে ১৭ দশমিক ২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ হাজার টিইইউজ, তবে বন্দরে হ্যান্ডলিং হয়েছে ২১ হাজার ৪৫৬ টিইইউজ, যা ৭ দশমিক ২৮ শতাংশ বেশি। রাজস্ব আয়ে ৩৩ হাজার ৩৮৭ লাখ টাকার লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে আদায় হয়েছে ৩৪ হাজার ৩৩৩ লাখ টাকা। এতে দুই দশমিক ৮৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি এসেছে। পাশাপাশি নীট মুনাফা লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২০ কোটি ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকা, যেখানে অর্জন হয়েছে ৬২ কোটি ১০ লাখ টাকা—যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮০ হাজার টাকা বেশি।
বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল শাহীন রহমান জানান, স্টেকহোল্ডার, শিপিং এজেন্ট, সি অ্যান্ড এফ এজেন্টসহ সংশ্লিষ্ট সবার আন্তরিক সহযোগিতা এবং অভ্যন্তরীণ ব্যবসা উন্নয়ন কমিটির কার্যকরী ভূমিকা এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে। তিনি বলেন, বন্দরে কোনো জাহাজজট নেই এবং কন্টেইনার খালাসের টার্ন অ্যারাউন্ড টাইম গড়ে ১.৬৬-৪০ ঘণ্টা, যা আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে প্রশংসনীয়।
বর্তমানে মোংলা বন্দরে সাতটি কন্টেইনার ইয়ার্ড, ৩৮টি সহায়ক জলযান, নিরাপত্তায় আইএসপিএস কোড অনুসরণ এবং কোস্টগার্ডের টহলের মাধ্যমে জাহাজ আগমন-নির্গমন নির্বিঘ্নভাবে সম্পন্ন হচ্ছে। ১৪৪ কিলোমিটার দীর্ঘ বন্দর চ্যানেলে লাইটেড বয়া ও লাইট টাওয়ার স্থাপন করে দিন-রাত নিরাপদ জাহাজ চলাচল নিশ্চিত করা হয়েছে। বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজের জন্য ৪৯টি বার্দিং পয়েন্টও রয়েছে।
উপ-পরিচালক মো. মাকরুজ্জামান জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের দিকনির্দেশনায় ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের সময়োপযোগী পরামর্শে মোংলা বন্দরে কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে এবং এ সাফল্য অর্জন সম্ভব হয়েছে।