৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞার কাটিয়ে আজ মধ্যরাতে থেকে সাগরে ফিরছে জেলেরা

- আপডেট সময় ০৭:০৩:২২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ জুন ২০২৫
- / 7
৫৮ দিনের দীর্ঘ নিষেধাজ্ঞা শেষে আজ মধ্যরাত থেকেই আবারও সাগরে নামছেন উপকূলের জেলেরা। নিষেধাজ্ঞা শেষের খবরে সাগরপাড়ের বাতাসে বইছে উচ্ছ্বাস আর প্রত্যাশার সুর। ইতিমধ্যে দৌলতখান, চরফ্যাশন, মনপুরাসহ ভোলার উপকূলীয় ঘাটগুলোতে চলছে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি। কেউ জাল ঠিক করছেন, কেউ বরফ সংগ্রহে ব্যস্ত, আবার কেউ ফিসিং বোটে মালামাল তুলছেন। সবার মুখে একটাই কথা “ফের সাগরের টানে ফিরছি জীবিকার পথে।”
প্রসঙ্গত, ইলিশসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন ও সংরক্ষণের স্বার্থে ভারত সরকারের সঙ্গে সমন্বয় রেখে গত ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সমুদ্রগামী মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দেয় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এর লক্ষ্য ছিল সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই আহরণ নিশ্চিত করা।
নিষেধাজ্ঞার সময়কালে স্থবির হয়ে পড়া জেলে পল্লীগুলোতে এখন ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য। ভোলার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রগুলোয় জমজমাট অবস্থা, ব্যস্ততা বেড়েছে মাছ ঘাটে। একদিকে যেমন প্রস্তুত হচ্ছে ট্রলারগুলো, অন্যদিকে জেলেদের পরিবারগুলোতেও দেখা দিয়েছে আশার আলো দীর্ঘ বিরতির পর তারা আবার আয়-রোজগারের পথে ফিরছেন।
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ কুমার দেব জানান, নিষেধাজ্ঞা কার্যকালে নিয়ম ভঙ্গের দায়ে মোট ১৮টি ট্রলার আটক করা হয়েছে, যার মধ্যে ১৪টি ছিল ট্রলিং বোট। এসব ট্রলারকে মোট দুই লাখ ৯০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, “নিষেধাজ্ঞা সফলভাবে কার্যকর করতে জেলা প্রশাসন, কোস্ট গার্ড, নৌবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযানে সমুদ্র এলাকায় নিয়মিত টহল দেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতেও যেন এই নিয়ম মানা হয়, সে জন্য জেলেদের সচেতন করা হচ্ছে।”
সাগরে মাছ ধরা শুরু হলেও জেলেরা যেন আইন মেনে চলে, সেদিকে কড়া নজর রাখবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। কারণ, এই নিষেধাজ্ঞা শুধু জীবিকা নয়, সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য রক্ষার একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবেও দেখা হচ্ছে।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর আবারও প্রাণচঞ্চল হয়ে উঠেছে ভোলার উপকূল। জেলেদের সাগরে ফেরা যেন শুধু জীবিকার শুরু নয়, বরং একটা নতুন আশার সূচনা।