ধুনটে তিল চাষে কৃষকের অভাবনীয় লাভ, বাড়ছে জনপ্রিয়তা

- আপডেট সময় ০৪:৩৯:০২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩১ মে ২০২৫
- / 9
খরচ কম, রোগবালাই প্রায় নেই, পরিচর্যার ঝামেলাও অল্প এসব সুবিধার কারণে বগুড়ার ধুনট উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে তিল চাষ। ভোজ্যতেলের চাহিদা বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজারে তিলের ভালো দাম পাওয়ায় কৃষকের আগ্রহও বেড়েছে। অন্য ফসলের তুলনায় তিনগুণের বেশি লাভ হওয়ায় অনেকেই এখন ধান বাদ দিয়ে তিল আবাদে ঝুঁকছেন।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ধুনটে ৪৮ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের তিল চাষ হয়েছে, যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বেশি। অথচ কয়েক বছর আগেও এই অঞ্চলে তিল চাষ প্রায় বিলুপ্তির পথে ছিল। উচ্চ ফলনশীল জাত ও কৃষি বিভাগের ধারাবাহিক প্রচেষ্টায় কৃষকেরা আবারও তিল চাষে ফিরেছেন।
স্থানীয় কৃষকদের মতে, এক বিঘা জমিতে তিল চাষে খরচ হয় আনুমানিক ৩ হাজার টাকা। প্রতি বিঘা জমিতে গড়ে উৎপাদন হয় ৪ মণ তিল, যার বাজারদর বর্তমানে প্রতি মণ ৪ হাজার টাকা। ফলে খরচ বাদে একজন কৃষক সহজেই প্রায় ১৩ হাজার টাকা আয় করতে পারছেন। তুলনামূলকভাবে ধান বা অন্যান্য ফসলের চেয়ে এই আয় অনেক বেশি লাভজনক।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছা. নুর নাহার বলেন, “তিল গাছের পাতা জমিতে পড়ে পচে সবুজ সারে পরিণত হয়, যা মাটির উর্বরতা বাড়ায়। টানা কয়েক বছর তিল চাষ করলে রাসায়নিক সার ছাড়াই অন্যান্য ফসলের চাষ সম্ভব। তাছাড়া, গাছের ডাঁটা জ্বালানির বিকল্প এবং তিল থেকে উৎপাদিত তেল ও খৈলও নানা কাজে ব্যবহৃত হয়।”
তিনি আরও জানান, তিল চাষে যেমন কৃষকের লাভ হচ্ছে, তেমনি জমির জৈব গুণও বাড়ছে। স্থানীয়ভাবে তিলের তেল ও খৈলের চাহিদাও বাড়ছে, যা বাজার সম্প্রসারণের সুযোগ তৈরি করছে।
কৃষকেরা মনে করছেন, যদি সরকার প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ ব্যবস্থায় সহযোগিতা করে, তবে তিল চাষ হবে তাদের আয়ের একটি কার্যকর ও স্থায়ী উৎস।