ঢাকা ০২:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গণমাধ্যম সংস্কারে ১২টি নতুন সিদ্ধান্ত, অগ্রাধিকার পাচ্ছে সাংবাদিকদের অধিকার পলিথিন বন্ধে কঠোর অভিযান শিগগিরই শুরু: পরিবেশ উপদেষ্টা বিআরটিসির দরজা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সর্বদা খোলা: চেয়ারম্যান নীলফামারীতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা বিদ্যালয়ে এসএসসিতে সবাই ফেল, বইছে সমালোচনার ঝড় নাইজেরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৩০ সশস্ত্র দস্যু নিহত সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১২৮৪ জন তরুণদের হতে হবে ডিজিটাল ভবিষ্যতের সহ-নির্মাতা: জাতিসংঘ মহাসচিব লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে মোংলা বন্দরে রেকর্ড রাজস্ব আদায় ও জাহাজ আগমন ইসির তফসিলে যুক্ত হচ্ছে আরও ৪৬টি প্রতীক, তফসিলে মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ১১৫ এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু ১১ জুলাই থেকে

নিষেধাজ্ঞা শেষে তেঁতুলিয়া নদীর উপকূলে ফিরেছে জেলেদের কর্মচাঞ্চল্য

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৬:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫
  • / 19

ছবি: সংগৃহীত

 

দীর্ঘ দুই মাস পর তেঁতুলিয়া নদীতে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার মধ্য রাত থেকেই আবারও জেগে উঠেছে নদী ও তার তীরঘেঁষা জেলে পল্লীগুলো। প্রাণ ফিরে পেয়েছে পটুয়াখালীর ঘাটগুলো। দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাল ও ট্রলার নিয়ে সকালেই নদীতে নেমেছেন জেলেরা।

প্রতিবছরের মতো এবারও মার্চ ও এপ্রিল এই দুই মাস দেশের ছয়টি ইলিশ অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। মূলত জাটকা রক্ষায় এই সময়টিতে কার্যকর হয় কড়া নিষেধাজ্ঞা। এর আওতায় ছিল পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চররুস্তুম থেকে ভোলার ভেদুরিয়া পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা।

এই দুই মাসে দুর্বিষহ সময় পার করেছেন উপকূলের হাজারো জেলে পরিবার। কেউ কেউ পেয়েছেন সরকার প্রদত্ত খাদ্য সহায়তা, তবে তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে অনেক পরিবারই নিরুপায় হয়ে পড়েছে ঋণের ফাঁদে। স্থানীয় মহাজনদের চড়া সুদে ধার নিয়ে কোনোভাবে বেঁচে ছিলেন তারা।

রাঙ্গাবালীর জেলে হারুন মাঝি বলেন, “এতদিন কর্মহীন ছিলাম, অনেক সময় না খেয়ে দিন কেটেছে। এখন যদি নদীতে ভালো মাছ ধরি, তবে ধার শোধ করে নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামার সুযোগ পাওয়ায় নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন জেলেরা। নদীর বুক চিরে চলা ট্রলারগুলো এখন শুধু মাছ নয়, বয়ে আনছে হাজারো পরিবারের নতুন স্বপ্ন। জেলে পল্লীগুলোতে আবারও দেখা যাচ্ছে শিশুদের হাসি, নারীদের ব্যস্ততা, আর জেলেদের টানাটানিতে ভরা সকাল।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, “ইলিশের প্রজনন ও জাটকা সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়ে থাকে। এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক যৌক্তিকতা। মধ্য রাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। এখন ভালো মাছের মৌসুম শুরু হলে জেলেদের কষ্ট কিছুটা হলেও সার্থক হবে।”

দুই মাসের স্থবিরতা পেরিয়ে উপকূলজুড়ে এখন বইছে নতুন প্রাণের বাতাস। তেঁতুলিয়ার জলে আবারও গর্জে উঠছে জীবনের সুর।

নিউজটি শেয়ার করুন

নিষেধাজ্ঞা শেষে তেঁতুলিয়া নদীর উপকূলে ফিরেছে জেলেদের কর্মচাঞ্চল্য

আপডেট সময় ০৬:৫৪:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

 

দীর্ঘ দুই মাস পর তেঁতুলিয়া নদীতে ফিরেছে কর্মচাঞ্চল্য। নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ার মধ্য রাত থেকেই আবারও জেগে উঠেছে নদী ও তার তীরঘেঁষা জেলে পল্লীগুলো। প্রাণ ফিরে পেয়েছে পটুয়াখালীর ঘাটগুলো। দীর্ঘ অপেক্ষার পর জাল ও ট্রলার নিয়ে সকালেই নদীতে নেমেছেন জেলেরা।

প্রতিবছরের মতো এবারও মার্চ ও এপ্রিল এই দুই মাস দেশের ছয়টি ইলিশ অভয়াশ্রমে সব ধরনের মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। মূলত জাটকা রক্ষায় এই সময়টিতে কার্যকর হয় কড়া নিষেধাজ্ঞা। এর আওতায় ছিল পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালীর চররুস্তুম থেকে ভোলার ভেদুরিয়া পর্যন্ত তেঁতুলিয়া নদীর প্রায় ১০০ কিলোমিটার এলাকা।

এই দুই মাসে দুর্বিষহ সময় পার করেছেন উপকূলের হাজারো জেলে পরিবার। কেউ কেউ পেয়েছেন সরকার প্রদত্ত খাদ্য সহায়তা, তবে তা ছিল প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। ফলে অনেক পরিবারই নিরুপায় হয়ে পড়েছে ঋণের ফাঁদে। স্থানীয় মহাজনদের চড়া সুদে ধার নিয়ে কোনোভাবে বেঁচে ছিলেন তারা।

রাঙ্গাবালীর জেলে হারুন মাঝি বলেন, “এতদিন কর্মহীন ছিলাম, অনেক সময় না খেয়ে দিন কেটেছে। এখন যদি নদীতে ভালো মাছ ধরি, তবে ধার শোধ করে নতুনভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”

নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে নামার সুযোগ পাওয়ায় নতুন করে আশায় বুক বাঁধছেন জেলেরা। নদীর বুক চিরে চলা ট্রলারগুলো এখন শুধু মাছ নয়, বয়ে আনছে হাজারো পরিবারের নতুন স্বপ্ন। জেলে পল্লীগুলোতে আবারও দেখা যাচ্ছে শিশুদের হাসি, নারীদের ব্যস্ততা, আর জেলেদের টানাটানিতে ভরা সকাল।

পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কামরুল ইসলাম জানান, “ইলিশের প্রজনন ও জাটকা সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়ে থাকে। এর পেছনে রয়েছে বৈজ্ঞানিক যৌক্তিকতা। মধ্য রাত থেকে নিষেধাজ্ঞা উঠে গেছে। এখন ভালো মাছের মৌসুম শুরু হলে জেলেদের কষ্ট কিছুটা হলেও সার্থক হবে।”

দুই মাসের স্থবিরতা পেরিয়ে উপকূলজুড়ে এখন বইছে নতুন প্রাণের বাতাস। তেঁতুলিয়ার জলে আবারও গর্জে উঠছে জীবনের সুর।