ঢাকা ১২:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
বিশ্ব সমুদ্র দিবস আজ ঈদের দ্বিতীয় দিন চলবে অধিকাংশ আন্তঃনগর ট্রেন, যুক্ত হচ্ছে অতিরিক্ত কোচ লন্ডনে যুক্তরাষ্ট্র-চীন বাণিজ্য বৈঠক সোমবার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে হামলায় বিএনপি নেতার মৃত্যু ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র স্বীকৃতি দেওয়া থেকে সরে দাঁড়াল ইউরোপের দুই প্রভাবশালী দেশ ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় যুবক নিহত ঢাকা থেকে বিদায় নিয়েছে ভুটান দল, রাতে আসছে সিঙ্গাপুরের ৪২ সদস্য বরগুনায় কোরবানির দিনে পশু কাটতে গিয়ে আহত ২০ জন ষাটগম্বুজ মসজিদে ঈদুল আজহার প্রধান জামাত সম্পন্ন : মুসল্লিদের উপচে পড়া ভিড় ডিসেম্বরে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব পুনর্ব্যক্ত করলো বিএনপি

নিষেধাজ্ঞা পেরিয়ে আবারও রপ্তানির পথে সুগন্ধি চাল

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৩৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • / 42

ছবি সংগৃহীত

 

দেড় বছর পর খুলল আন্তর্জাতিক বাজারের দরজা, কৃষি খাতে ফিরছে সম্ভাবনার সুবাস
দীর্ঘ দেড় বছর পর অবশেষে উঠে গেল সুগন্ধি চাল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা। সরকার চলতি মাসের শুরুতে একটি আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু চাল রপ্তানির দ্বারই উন্মুক্ত হলো না, বরং দেশের কৃষি খাত এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে ফিরে এল এক নতুন সম্ভাবনার জোয়ার।

২০২3 সালের মাঝামাঝি সময়ে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার সুগন্ধি চালসহ অন্যান্য চাল রপ্তানির উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। দেশজুড়ে খাদ্য মজুতের ঘাটতি, দুর্যোগ এবং বাজার অস্থিরতার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যদিও এই সিদ্ধান্ত কৃষকদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসে, কারণ সুগন্ধি চাল একটি লাভজনক কৃষিপণ্য, যার চাহিদা আন্তর্জাতিক বাজারে বরাবরই ছিল বেশ উঁচু।

সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যন্তরীণ খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় এবং উৎপাদন বাড়ায় সরকার এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন দেশের পার্বত্য ও উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা, যাঁরা পার্বত্য রাঙামাটি, দিনাজপুর, বগুড়া ও নওগাঁ অঞ্চলে সুগন্ধি চালের চাষ করেন।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (FBCCI) এক সদস্য জানান,
“আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের সুগন্ধি চালের বিশেষ চাহিদা রয়েছে। রপ্তানি শুরু হলে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন এবং বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়বে।”

বাংলাদেশি সুগন্ধি চাল যেমন ‘কালোজিরা’, ‘চিনি আতপ’, এবং ‘রাজশাহী চাল’ আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, এবং প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে এই চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভারতের বাসমতি চালের পাশাপাশি বাংলাদেশি সুগন্ধি চালও একটি প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সম্ভাবনা রাখে, যদি রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে চালু রাখা যায়।

এই রপ্তানি অনুমতির ফলে দেশে চালের দাম সামান্য বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ, তবে সরকার বলছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পরে বাকি চালই রপ্তানি করা হবে। এছাড়া কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সুগন্ধি চাল চাষে আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং এটি কৃষি রপ্তানি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হবে।

নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছেছে। সুগন্ধি চাল রপ্তানির পুনরায় অনুমতি শুধু একটি পণ্যের রপ্তানি নয়, বরং একটি খাতকে পুনর্জীবিত করার পদক্ষেপ। সরকার, কৃষক এবং রপ্তানিকারকদের মধ্যে সমন্বয় থাকলে এই খাত আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে।

বিষয় :

নিউজটি শেয়ার করুন

নিষেধাজ্ঞা পেরিয়ে আবারও রপ্তানির পথে সুগন্ধি চাল

আপডেট সময় ১১:৩৭:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

 

দেড় বছর পর খুলল আন্তর্জাতিক বাজারের দরজা, কৃষি খাতে ফিরছে সম্ভাবনার সুবাস
দীর্ঘ দেড় বছর পর অবশেষে উঠে গেল সুগন্ধি চাল রপ্তানির নিষেধাজ্ঞা। সরকার চলতি মাসের শুরুতে একটি আনুষ্ঠানিক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিয়েছে। এর মাধ্যমে শুধু চাল রপ্তানির দ্বারই উন্মুক্ত হলো না, বরং দেশের কৃষি খাত এবং গ্রামীণ অর্থনীতিতে ফিরে এল এক নতুন সম্ভাবনার জোয়ার।

২০২3 সালের মাঝামাঝি সময়ে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম বৃদ্ধি এবং খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতে সরকার সুগন্ধি চালসহ অন্যান্য চাল রপ্তানির উপর সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। দেশজুড়ে খাদ্য মজুতের ঘাটতি, দুর্যোগ এবং বাজার অস্থিরতার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। যদিও এই সিদ্ধান্ত কৃষকদের জন্য বড় ধাক্কা হয়ে আসে, কারণ সুগন্ধি চাল একটি লাভজনক কৃষিপণ্য, যার চাহিদা আন্তর্জাতিক বাজারে বরাবরই ছিল বেশ উঁচু।

সাম্প্রতিক সময়ে অভ্যন্তরীণ খাদ্য সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ায় এবং উৎপাদন বাড়ায় সরকার এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়। এতে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবেন দেশের পার্বত্য ও উত্তরাঞ্চলের কৃষকরা, যাঁরা পার্বত্য রাঙামাটি, দিনাজপুর, বগুড়া ও নওগাঁ অঞ্চলে সুগন্ধি চালের চাষ করেন।
বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (FBCCI) এক সদস্য জানান,
“আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশের সুগন্ধি চালের বিশেষ চাহিদা রয়েছে। রপ্তানি শুরু হলে কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাবেন এবং বৈদেশিক মুদ্রার আয় বাড়বে।”

বাংলাদেশি সুগন্ধি চাল যেমন ‘কালোজিরা’, ‘চিনি আতপ’, এবং ‘রাজশাহী চাল’ আন্তর্জাতিক বাজারে বেশ জনপ্রিয়। বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপ, এবং প্রবাসী বাঙালিদের মধ্যে এই চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভারতের বাসমতি চালের পাশাপাশি বাংলাদেশি সুগন্ধি চালও একটি প্রিমিয়াম ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠা পাওয়ার সম্ভাবনা রাখে, যদি রপ্তানি ধারাবাহিকভাবে চালু রাখা যায়।

এই রপ্তানি অনুমতির ফলে দেশে চালের দাম সামান্য বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন কেউ কেউ, তবে সরকার বলছে, অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণের পরে বাকি চালই রপ্তানি করা হবে। এছাড়া কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে সুগন্ধি চাল চাষে আধুনিক প্রযুক্তি ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে।
অর্থনীতিবিদরা মনে করছেন, এই সিদ্ধান্ত সময়োপযোগী এবং এটি কৃষি রপ্তানি খাতকে আরও সমৃদ্ধ করতে সহায়ক হবে।

নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে একটি ইতিবাচক বার্তা পৌঁছেছে। সুগন্ধি চাল রপ্তানির পুনরায় অনুমতি শুধু একটি পণ্যের রপ্তানি নয়, বরং একটি খাতকে পুনর্জীবিত করার পদক্ষেপ। সরকার, কৃষক এবং রপ্তানিকারকদের মধ্যে সমন্বয় থাকলে এই খাত আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান আরও শক্তিশালী করতে পারবে।