হাওরের উঁচু জমিতে ভুট্টার সোনালি বিপ্লব, বদলে যাচ্ছে কৃষকের জীবন

- আপডেট সময় ০২:০২:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
- / 30
কিশোরগঞ্জের হাওরের চরে এখন চোখে পড়ছে সোনালি ভুট্টার সমারোহ। এক সময় যেখানে কৃষকের ভরসা ছিল ধান, সেখানে এখন জেগে উঠেছে ভুট্টার সম্ভাবনা। খরচ কম, লাভ বেশি আর প্রাকৃতিক দুর্যোগের শঙ্কাও তুলনামূলকভাবে কম এসব কারণেই কৃষকেরা ঝুঁকছেন এই ফসলের দিকে।
মাঠ পর্যায়ে দেখা গেছে, এবার হাওরের বিস্তীর্ণ জমিতে বাম্পার ফলন হয়েছে ভুট্টার। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছর জেলায় ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১২ হাজার ১০০ হেক্টর জমি, কিন্তু বাস্তবে আবাদ হয়েছে ১২ হাজার ২১০ হেক্টর জমিতে।
সবচেয়ে বেশি ভুট্টা চাষ হয়েছে নিকলী, মিঠামইন, বাজিতপুর ও অষ্টগ্রাম উপজেলায়। এর মধ্যে নিকলী উপজেলায় ৩ হাজার ১১০ হেক্টর, মিঠামইনে ২ হাজার ৮৮০ হেক্টর, বাজিতপুরে ২ হাজার ১০ হেক্টর এবং অষ্টগ্রামে ৯৮০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকেরা জানালেন, ভুট্টা চাষে ঝুঁকি কম হওয়ায় অনেক পতিত জমিও এখন কাজে লাগানো যাচ্ছে। মিঠামইনের কৃষক আব্দুর রহিম বলেন, ‘বর্ষার আগেই ফসল ঘরে তোলা যায়। তাই আগাম বন্যার ভয় থাকে না। আবার খরচ কম, ফলে লাভও বেশি।’
ইটনার কৃষক নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘ভুট্টা শুধু বিক্রি করেই লাভ হয় না, কাঁচা পাতা গরুকে খাওয়ানো যায়, শুকনো গাছ আবার জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। তিন দিক থেকেই লাভ।’
কৃষি কর্মকর্তারাও আশাবাদী। কিশোরগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. সাদিকুর রহমান বলেন, ‘হাওরের জন্য নিরাপদ ফসল হিসেবেই ভুট্টা কৃষকেরা বেছে নিচ্ছেন। আগাম বন্যার কারণে ধানের ক্ষতি হলেও ভুট্টা চাষে সেই সম্ভাবনা কম।’
স্থানীয় বাজারে ইতোমধ্যেই মনপ্রতি ভুট্টা বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে ১১০০ টাকায়। ফলে কৃষকের মুখে হাসি। তবে বাজার ব্যবস্থাপনায় সহায়তা পেলে এই সোনালি ফসল হাওরের কৃষকদের জন্য আরও বড় আশীর্বাদ হয়ে উঠবে এমনটাই আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।