ঢাকা ১০:০৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গণমাধ্যম সংস্কারে ১২টি নতুন সিদ্ধান্ত, অগ্রাধিকার পাচ্ছে সাংবাদিকদের অধিকার পলিথিন বন্ধে কঠোর অভিযান শিগগিরই শুরু: পরিবেশ উপদেষ্টা বিআরটিসির দরজা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সর্বদা খোলা: চেয়ারম্যান নীলফামারীতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা বিদ্যালয়ে এসএসসিতে সবাই ফেল, বইছে সমালোচনার ঝড় নাইজেরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৩০ সশস্ত্র দস্যু নিহত সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১২৮৪ জন তরুণদের হতে হবে ডিজিটাল ভবিষ্যতের সহ-নির্মাতা: জাতিসংঘ মহাসচিব লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে মোংলা বন্দরে রেকর্ড রাজস্ব আদায় ও জাহাজ আগমন ইসির তফসিলে যুক্ত হচ্ছে আরও ৪৬টি প্রতীক, তফসিলে মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ১১৫ এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু ১১ জুলাই থেকে

মানিকগঞ্জে সাপের কামড়ে মৃত্যু নয়, গাফিলতিতেই গেল ৬ বছরের মুন্নির প্রাণ

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৩৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫
  • / 4

ছবি সংগৃহীত

 

সরকারি হাসপাতালের চরম অব্যবস্থাপনা ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে মানিকগঞ্জে মুন্নি আক্তার (৬) নামে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড় থেকে সময়মতো চিকিৎসা পেলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যেত শিশুটি। কিন্তু এন্টিভেনোম না থাকায় এক হাসপাতাল থেকে আরেকটিতে ঘুরতে ঘুরতেই থেমে যায় ছোট্ট মুন্নির নিঃশ্বাস।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায়। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জাবরা চরপাড়া গ্রামের সাগর বিশ্বাসের মেয়ে মুন্নিকে সাপে কামড় দেওয়ার পর দ্রুতই মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখনও সে সচেতন ছিল এবং কথা বলছিল। কিন্তু সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানান, হাসপাতালে এন্টিভেনোম নেই। এরপর মুন্নিকে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেখানেও ছিল না এই জীবনরক্ষাকারী ওষুধ।

অবশেষে কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়। কিন্তু ঢাকায় নেওয়ার পথেই, রাত ৮টা ৩০ মিনিটে নয়াডিঙ্গী এলাকায় মৃত্যু হয় মুন্নির।

শিশুটির চাচা এরশাদ অভিযোগ করে বলেন,“সদর হাসপাতালে নিলে তখনও ওর জ্ঞান ছিল, এমনকি মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পরও বেঁচে ছিল। কিন্তু দুইটি সরকারি হাসপাতালে এন্টিভেনোম না পাওয়ার কারণে আমাদের মুন্নিকে হারাতে হলো। এটা সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এক চরম ব্যর্থতা।”

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন বলেন, আমরা অনেক আগেই এন্টিভেনোমের চাহিদা পাঠিয়েছি, কিন্তু এখনও সরবরাহ আসেনি। সাধারণত সাপের কামড়ে রোগীদের সিম্পটোমেটিক ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। তবে শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি আমি আগামীকাল হাসপাতালে গিয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখব।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন প্রয়োজনীয় ওষুধ ছাড়া কীভাবে চালানো হচ্ছে জেলা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল? শিশুটির মৃত্যু কি শুধুই ‘দুর্ভাগ্য’, নাকি এটি একটি এড়ানো সম্ভব গাফিলতি?

নিউজটি শেয়ার করুন

মানিকগঞ্জে সাপের কামড়ে মৃত্যু নয়, গাফিলতিতেই গেল ৬ বছরের মুন্নির প্রাণ

আপডেট সময় ০৪:৩৬:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫

 

সরকারি হাসপাতালের চরম অব্যবস্থাপনা ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে মানিকগঞ্জে মুন্নি আক্তার (৬) নামে এক শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। সাপের কামড় থেকে সময়মতো চিকিৎসা পেলে হয়তো প্রাণে বেঁচে যেত শিশুটি। কিন্তু এন্টিভেনোম না থাকায় এক হাসপাতাল থেকে আরেকটিতে ঘুরতে ঘুরতেই থেমে যায় ছোট্ট মুন্নির নিঃশ্বাস।

ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায়। মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলার জাবরা চরপাড়া গ্রামের সাগর বিশ্বাসের মেয়ে মুন্নিকে সাপে কামড় দেওয়ার পর দ্রুতই মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। তখনও সে সচেতন ছিল এবং কথা বলছিল। কিন্তু সেখানকার কর্তৃপক্ষ জানান, হাসপাতালে এন্টিভেনোম নেই। এরপর মুন্নিকে মানিকগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সেখানেও ছিল না এই জীবনরক্ষাকারী ওষুধ।

অবশেষে কর্তৃপক্ষ শিশুটিকে ঢাকায় পাঠানোর পরামর্শ দেয়। কিন্তু ঢাকায় নেওয়ার পথেই, রাত ৮টা ৩০ মিনিটে নয়াডিঙ্গী এলাকায় মৃত্যু হয় মুন্নির।

শিশুটির চাচা এরশাদ অভিযোগ করে বলেন,“সদর হাসপাতালে নিলে তখনও ওর জ্ঞান ছিল, এমনকি মেডিকেল কলেজে নেওয়ার পরও বেঁচে ছিল। কিন্তু দুইটি সরকারি হাসপাতালে এন্টিভেনোম না পাওয়ার কারণে আমাদের মুন্নিকে হারাতে হলো। এটা সরকারের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এক চরম ব্যর্থতা।”

এ বিষয়ে মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ বাহাউদ্দিন বলেন, আমরা অনেক আগেই এন্টিভেনোমের চাহিদা পাঠিয়েছি, কিন্তু এখনও সরবরাহ আসেনি। সাধারণত সাপের কামড়ে রোগীদের সিম্পটোমেটিক ট্রিটমেন্ট দেওয়া হয়। তবে শিশুটির মৃত্যুর বিষয়টি আমি আগামীকাল হাসপাতালে গিয়ে বিস্তারিত খতিয়ে দেখব।

এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ প্রশ্ন তুলছেন প্রয়োজনীয় ওষুধ ছাড়া কীভাবে চালানো হচ্ছে জেলা হাসপাতাল ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল? শিশুটির মৃত্যু কি শুধুই ‘দুর্ভাগ্য’, নাকি এটি একটি এড়ানো সম্ভব গাফিলতি?