ঢাকা ১০:১৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ১০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
শাহাদাতের রক্তে রাঙা অবিনাশী চেতনা শীর্ষক কনফারেন্স সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। আন্তর্জাতিক মজলিসে তাহাফফুজে খতমে নবুওয়তের সভাপতি নির্বাচিত হলেন আল্লামা শায়েখ সাজিদুর রহমান খন্দকার মোশাররফের নেতৃত্বে যমুনায় বিএনপির প্রতিনিধি দল থাইল্যান্ডে পুলিশ হেলিকপ্টার বিধ্বস্তে ৩ জন নিহত চার দাবিতে এনবিআরে পূর্ণাঙ্গ কর্মবিরতি চলবে রোববার সর্বদলীয় বৈঠক ডাকলেন প্রধান উপদেষ্টা নবীনগরে গলায় লিচুর বিচি আটকে শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু ভারতের টেস্ট দলের নতুন অধিনায়ক হলেন শুভমান গিল পুঁজিবাজার থেকে উধাও ১৫ হাজার কোটি টাকা: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের বিস্ফোরক দাবি ওষুধ ছাড়াই ইউরিক এসিড নিয়ন্ত্রণে যেসব খাবার খাবেন!

টক-মিষ্টি তেঁতুল: পাহাড়ের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত, স্থানীয়দের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৫৮:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • / 30

ছবি সংগৃহীত

 

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার নাম তেঁতুল। কলা, কাঁঠাল, আম, আদা, হলুদসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের পাশাপাশি এখন টক-মিষ্টি তেঁতুলও স্থানীয় হাট-বাজারে দাপট দেখাচ্ছে। একসময় অবহেলিত এই ফল এখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দ্বার উন্মোচন করছে।

তেঁতুলের নাম শুনলেই অনেকের মুখে জল এসে যায়। খাগড়াছড়ির তেঁতুলের স্বাদ ও গুণগত মানের জন্য এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। আচার ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য তৈরির জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন এই তেঁতুল কিনতে। বিশেষ করে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহের বাজারে খাগড়াছড়ির তেঁতুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

গুইমারা ও মাটিরাঙ্গার কৃষিপণ্য বাজারে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার কেজি তেঁতুল কেনাবেচা হয়। মঙ্গলবার গুইমারা এবং শনিবার মাটিরাঙ্গা বাজারে ভোর থেকেই স্থানীয় কৃষকরা তেঁতুল নিয়ে হাজির হন। দুপুরের আগেই এসব তেঁতুল চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাজারেই খোসা ছাড়িয়ে বা আস্ত অবস্থায় কার্টুনে প্যাকেজিং করে পাঠানো হয়। প্রতি সপ্তাহে গুইমারা ও মাটিরাঙ্গা বাজার থেকে গড়ে ৪০-৫০ মেট্রিক টন তেঁতুল বিক্রি হচ্ছে।

এক সময় ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া তেঁতুল এখন পাইকারি বাজারে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কোনো ধরনের কীটনাশক বা কৃত্রিম পরিচর্যা ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হওয়ায় খাগড়াছড়ির তেঁতুলের চাহিদা আরও বেশি।

গুইমারার হাফছড়ির হলাপ্রু মারমা জানান, কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই তেঁতুল বিক্রি করে তার পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে। একই অভিজ্ঞতা বড়পিলাকের মো. আব্দুল হাই ও তবলছড়ির আব্দুর রহমানেরও। তারা জানান, আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হতো, কিন্তু এখন পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।

দেশব্যাপী খাগড়াছড়ির তেঁতুলের বাজার তৈরি হওয়ায় এটি কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্প আরও প্রসার লাভ করবে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী জানান, তেঁতুল গাছ লাগানোর পর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় না, অথচ প্রতি বছর একটি বড় গাছ থেকে কয়েকশ মণ ফল পাওয়া যায়।

খাগড়াছড়ির তেঁতুল এখন শুধু পাহাড়ের সৌন্দর্য নয়, বরং অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকা শক্তি হয়ে উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

টক-মিষ্টি তেঁতুল: পাহাড়ের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত, স্থানীয়দের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন

আপডেট সময় ০৪:৫৮:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

 

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার নাম তেঁতুল। কলা, কাঁঠাল, আম, আদা, হলুদসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের পাশাপাশি এখন টক-মিষ্টি তেঁতুলও স্থানীয় হাট-বাজারে দাপট দেখাচ্ছে। একসময় অবহেলিত এই ফল এখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দ্বার উন্মোচন করছে।

তেঁতুলের নাম শুনলেই অনেকের মুখে জল এসে যায়। খাগড়াছড়ির তেঁতুলের স্বাদ ও গুণগত মানের জন্য এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। আচার ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য তৈরির জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন এই তেঁতুল কিনতে। বিশেষ করে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহের বাজারে খাগড়াছড়ির তেঁতুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

গুইমারা ও মাটিরাঙ্গার কৃষিপণ্য বাজারে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার কেজি তেঁতুল কেনাবেচা হয়। মঙ্গলবার গুইমারা এবং শনিবার মাটিরাঙ্গা বাজারে ভোর থেকেই স্থানীয় কৃষকরা তেঁতুল নিয়ে হাজির হন। দুপুরের আগেই এসব তেঁতুল চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাজারেই খোসা ছাড়িয়ে বা আস্ত অবস্থায় কার্টুনে প্যাকেজিং করে পাঠানো হয়। প্রতি সপ্তাহে গুইমারা ও মাটিরাঙ্গা বাজার থেকে গড়ে ৪০-৫০ মেট্রিক টন তেঁতুল বিক্রি হচ্ছে।

এক সময় ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া তেঁতুল এখন পাইকারি বাজারে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কোনো ধরনের কীটনাশক বা কৃত্রিম পরিচর্যা ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হওয়ায় খাগড়াছড়ির তেঁতুলের চাহিদা আরও বেশি।

গুইমারার হাফছড়ির হলাপ্রু মারমা জানান, কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই তেঁতুল বিক্রি করে তার পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে। একই অভিজ্ঞতা বড়পিলাকের মো. আব্দুল হাই ও তবলছড়ির আব্দুর রহমানেরও। তারা জানান, আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হতো, কিন্তু এখন পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।

দেশব্যাপী খাগড়াছড়ির তেঁতুলের বাজার তৈরি হওয়ায় এটি কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্প আরও প্রসার লাভ করবে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী জানান, তেঁতুল গাছ লাগানোর পর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় না, অথচ প্রতি বছর একটি বড় গাছ থেকে কয়েকশ মণ ফল পাওয়া যায়।

খাগড়াছড়ির তেঁতুল এখন শুধু পাহাড়ের সৌন্দর্য নয়, বরং অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকা শক্তি হয়ে উঠেছে।