০৬:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
মোহাম্মদপুরে মা–মেয়েকে হত্যা: গৃহকর্মী আয়েশা ঝালকাঠিতে গ্রেপ্তার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হচ্ছেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ঢাকা-১১ আসনে নির্বাচন করবেন এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম থাই–কাম্বোডিয়া সীমান্তে পুনরায় উত্তেজনা: অস্ত্রবিরতি ভেঙে বিমান হামলা, নিহত ১ সৈন্য ইসির সঙ্গে বৈঠকে জামায়াতের প্রতিনিধি দল জার্মান সেনাবাহিনী বাড়ছে: ২০৩৫ সালের মধ্যে ২,৬০,০০০ সক্রিয় সদস্যের লক্ষ্য অনুমোদন মধ্যপ্রাচ্যের কঠিনতম পানি প্রকল্প সম্পন্ন করল ইরান ফিনল্যান্ডে ডাটা সেন্টারের নির্গত  তাপে গরম হচ্ছে পুরো শহর চীন কোয়ান্টাম কম্পিউটারে সফলতা পেলে যুক্তরাষ্ট্রকে এক নিমেষে প্রস্তরযুগে পাঠিয়ে দেবে যুক্তরাষ্ট্রের F-35 যুদ্ধবিমান প্রকল্পে ফিরে আসার বিষয়ে আরো একধাপ এগিয়ে গেল তুরস্ক: এমনটাই জানিয়েছেন তুরস্কে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত টম ব্যারাক।

টক-মিষ্টি তেঁতুল: পাহাড়ের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত, স্থানীয়দের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৫৮:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫
  • / 145

ছবি সংগৃহীত

 

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার নাম তেঁতুল। কলা, কাঁঠাল, আম, আদা, হলুদসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের পাশাপাশি এখন টক-মিষ্টি তেঁতুলও স্থানীয় হাট-বাজারে দাপট দেখাচ্ছে। একসময় অবহেলিত এই ফল এখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দ্বার উন্মোচন করছে।

তেঁতুলের নাম শুনলেই অনেকের মুখে জল এসে যায়। খাগড়াছড়ির তেঁতুলের স্বাদ ও গুণগত মানের জন্য এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। আচার ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য তৈরির জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন এই তেঁতুল কিনতে। বিশেষ করে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহের বাজারে খাগড়াছড়ির তেঁতুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গুইমারা ও মাটিরাঙ্গার কৃষিপণ্য বাজারে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার কেজি তেঁতুল কেনাবেচা হয়। মঙ্গলবার গুইমারা এবং শনিবার মাটিরাঙ্গা বাজারে ভোর থেকেই স্থানীয় কৃষকরা তেঁতুল নিয়ে হাজির হন। দুপুরের আগেই এসব তেঁতুল চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাজারেই খোসা ছাড়িয়ে বা আস্ত অবস্থায় কার্টুনে প্যাকেজিং করে পাঠানো হয়। প্রতি সপ্তাহে গুইমারা ও মাটিরাঙ্গা বাজার থেকে গড়ে ৪০-৫০ মেট্রিক টন তেঁতুল বিক্রি হচ্ছে।

এক সময় ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া তেঁতুল এখন পাইকারি বাজারে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কোনো ধরনের কীটনাশক বা কৃত্রিম পরিচর্যা ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হওয়ায় খাগড়াছড়ির তেঁতুলের চাহিদা আরও বেশি।

গুইমারার হাফছড়ির হলাপ্রু মারমা জানান, কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই তেঁতুল বিক্রি করে তার পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে। একই অভিজ্ঞতা বড়পিলাকের মো. আব্দুল হাই ও তবলছড়ির আব্দুর রহমানেরও। তারা জানান, আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হতো, কিন্তু এখন পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।

দেশব্যাপী খাগড়াছড়ির তেঁতুলের বাজার তৈরি হওয়ায় এটি কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্প আরও প্রসার লাভ করবে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী জানান, তেঁতুল গাছ লাগানোর পর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় না, অথচ প্রতি বছর একটি বড় গাছ থেকে কয়েকশ মণ ফল পাওয়া যায়।

খাগড়াছড়ির তেঁতুল এখন শুধু পাহাড়ের সৌন্দর্য নয়, বরং অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকা শক্তি হয়ে উঠেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

টক-মিষ্টি তেঁতুল: পাহাড়ের অর্থনীতির নতুন দিগন্ত, স্থানীয়দের জীবনযাত্রায় ইতিবাচক পরিবর্তন

আপডেট সময় ০৪:৫৮:৩৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ মার্চ ২০২৫

 

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনার নাম তেঁতুল। কলা, কাঁঠাল, আম, আদা, হলুদসহ অন্যান্য কৃষিপণ্যের পাশাপাশি এখন টক-মিষ্টি তেঁতুলও স্থানীয় হাট-বাজারে দাপট দেখাচ্ছে। একসময় অবহেলিত এই ফল এখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দ্বার উন্মোচন করছে।

তেঁতুলের নাম শুনলেই অনেকের মুখে জল এসে যায়। খাগড়াছড়ির তেঁতুলের স্বাদ ও গুণগত মানের জন্য এর চাহিদা বেড়েই চলেছে। আচার ও অন্যান্য খাদ্যপণ্য তৈরির জন্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা আসছেন এই তেঁতুল কিনতে। বিশেষ করে, ঢাকা, চট্টগ্রাম, নরসিংদী, ফেনী, কুমিল্লা, নোয়াখালী ও ময়মনসিংহের বাজারে খাগড়াছড়ির তেঁতুলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

গুইমারা ও মাটিরাঙ্গার কৃষিপণ্য বাজারে প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার কেজি তেঁতুল কেনাবেচা হয়। মঙ্গলবার গুইমারা এবং শনিবার মাটিরাঙ্গা বাজারে ভোর থেকেই স্থানীয় কৃষকরা তেঁতুল নিয়ে হাজির হন। দুপুরের আগেই এসব তেঁতুল চলে যায় দেশের বিভিন্ন জেলায়। বাজারেই খোসা ছাড়িয়ে বা আস্ত অবস্থায় কার্টুনে প্যাকেজিং করে পাঠানো হয়। প্রতি সপ্তাহে গুইমারা ও মাটিরাঙ্গা বাজার থেকে গড়ে ৪০-৫০ মেট্রিক টন তেঁতুল বিক্রি হচ্ছে।

এক সময় ২০-২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া তেঁতুল এখন পাইকারি বাজারে ১২০-১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। কোনো ধরনের কীটনাশক বা কৃত্রিম পরিচর্যা ছাড়াই প্রাকৃতিকভাবে উৎপাদিত হওয়ায় খাগড়াছড়ির তেঁতুলের চাহিদা আরও বেশি।

গুইমারার হাফছড়ির হলাপ্রু মারমা জানান, কোনো বিনিয়োগ ছাড়াই তেঁতুল বিক্রি করে তার পরিবারে আর্থিক স্বচ্ছলতা এসেছে। একই অভিজ্ঞতা বড়পিলাকের মো. আব্দুল হাই ও তবলছড়ির আব্দুর রহমানেরও। তারা জানান, আগে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছে কম দামে বিক্রি করতে হতো, কিন্তু এখন পাইকারি ব্যবসায়ীরা আসায় ভালো দাম পাওয়া যাচ্ছে।

দেশব্যাপী খাগড়াছড়ির তেঁতুলের বাজার তৈরি হওয়ায় এটি কৃষিভিত্তিক শিল্প গড়ে তোলার সুযোগ সৃষ্টি করেছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এই শিল্প আরও প্রসার লাভ করবে। মাটিরাঙ্গা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সবুজ আলী জানান, তেঁতুল গাছ লাগানোর পর বিশেষ যত্নের প্রয়োজন হয় না, অথচ প্রতি বছর একটি বড় গাছ থেকে কয়েকশ মণ ফল পাওয়া যায়।

খাগড়াছড়ির তেঁতুল এখন শুধু পাহাড়ের সৌন্দর্য নয়, বরং অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম চালিকা শক্তি হয়ে উঠেছে।