রোহিঙ্গাদের আগামী বছর পাঠানো সম্ভব হবে কি না, এখনই নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না – প্রেস সচিব।

- আপডেট সময় ০২:১০:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫
- / 50
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, আগামী বছরের মধ্যে রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফেরত পাঠানো যাবে কি না, তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। শনিবার ভোরে নিজের ফেসবুক পোস্টে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
তিনি লেখেন, “রোহিঙ্গা ইস্যুতে আমাদের দায়িত্ব এখানেই শেষ নয়। চাপ সৃষ্টি করে যেতে হবে, যাতে তারা স্বেচ্ছায়, পূর্ণ মর্যাদা ও নিরাপত্তার সঙ্গে নিজভূমিতে ফিরতে পারে।”
শফিকুল আলম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বার্মিজ জান্তাকে খুশি করতে কিছু কূটনীতিক এবং কথিত মানবতাবাদীরা রোহিঙ্গাদের ‘FDMN’ বা ‘জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিক’ নামে অভিহিত করেন। এই পরিভাষা রোহিঙ্গা গণহত্যার প্রকৃত ইতিহাস আড়াল করার একটি চাতুর্য, যেখানে তাদের জাতিসত্তা ও পরিচয় অস্বীকার করা হয়। অথচ রোহিঙ্গারা শুধুই উদ্বাস্তু নয়—তারা মিয়ানমারের শতাব্দীপ্রাচীন সংস্কৃতি ও ইতিহাসের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ।
তিনি আরও জানান, চীনের কুনমিং এবং থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত BIMSTEC সম্মেলনে রোহিঙ্গাদের নিয়ে আলোচনা চলাকালে জান্তার কর্মকর্তারাও শেষ পর্যন্ত ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করতে বাধ্য হন। এই বৈঠকগুলোর সময় আমি নিজেই উপস্থিত ছিলাম।
রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের ক্ষেত্রে বর্তমানে রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির দখল কার্যক্রম পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তবে আশার কথা হচ্ছে, সাম্প্রতিক আলোচনায় মিয়ানমার জান্তা কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাংলাদেশও সাহসী ও সুসংগঠিত কূটনৈতিক অবস্থান নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, “এখন দরকার ধারাবাহিক ও কঠোর কূটনৈতিক চাপ। যাতে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের স্বেচ্ছায়, মর্যাদার সঙ্গে, নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ফিরিয়ে নিতে বাধ্য হয়।”
বিশ্লেষকদের মতে, এ সংকটের রাজনৈতিক সমাধান যতটা জটিল, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশকে সক্রিয় ও সুপরিকল্পিতভাবে অবস্থান ধরে রাখা। নতুবা মানবতার এই ভয়াবহ ট্র্যাজেডি আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে।