ঢাকা ১২:৫৪ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
গণমাধ্যম সংস্কারে ১২টি নতুন সিদ্ধান্ত, অগ্রাধিকার পাচ্ছে সাংবাদিকদের অধিকার পলিথিন বন্ধে কঠোর অভিযান শিগগিরই শুরু: পরিবেশ উপদেষ্টা বিআরটিসির দরজা অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য সর্বদা খোলা: চেয়ারম্যান নীলফামারীতে শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব বালিকা বিদ্যালয়ে এসএসসিতে সবাই ফেল, বইছে সমালোচনার ঝড় নাইজেরিয়ায় নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ৩০ সশস্ত্র দস্যু নিহত সারাদেশে পুলিশের বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ১২৮৪ জন তরুণদের হতে হবে ডিজিটাল ভবিষ্যতের সহ-নির্মাতা: জাতিসংঘ মহাসচিব লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে মোংলা বন্দরে রেকর্ড রাজস্ব আদায় ও জাহাজ আগমন ইসির তফসিলে যুক্ত হচ্ছে আরও ৪৬টি প্রতীক, তফসিলে মোট সংখ্যা দাঁড়াবে ১১৫ এসএসসির ফল পুনর্নিরীক্ষণের আবেদন শুরু ১১ জুলাই থেকে

রাঙামাটির তাঁতপল্লীতে উৎসবের প্রস্তুতি: অর্ধকোটি টাকার বিক্রির আশা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:৩১:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫
  • / 46

ছবি সংগৃহীত

 

তাঁতের খটখট ও ঝুমঝুম শব্দ জানান দিচ্ছে, সামনে আসছে ঈদ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির তাঁতপল্লীগুলো কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। ঈদের পোশাক তৈরিতে তাঁত মালিক ও শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন, আর কারখানার কোলাহলে সরগরম হয়ে উঠেছে তাঁতপল্লী।

ঈদের ছুটিতে রাঙামাটি ভ্রমণে আসেন হাজারো পর্যটক, যাদের আগ্রহ থাকে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে তৈরি তাঁতের পণ্যে। এই পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে তাঁতপল্লীগুলো দিন-রাত সরব। শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে, কিন্তু এ ব্যস্ততার মধ্যে খুশি তাঁত মালিক ও শ্রমিকরা।
দেশের অন্যান্য তাঁতপল্লীগুলোর মতো ঈদের পোশাক নিয়ে ব্যস্ত হলেও রাঙামাটির তাঁতগুলো কিছুটা ভিন্ন। পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে শ্রমিকরা কাজ করছেন। স্থানীয়দের তুলনায় পর্যটকদের কাছে তাঁতপণ্যের আকর্ষণ বেশি, তবে পাঞ্জাবির চাহিদা স্থানীয়দের মধ্যেও রয়েছে।

শহরের টেক্সটাইল কারখানাগুলোতে দেখা যায়, শ্রমিকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পোশাক তৈরির কাজে ব্যস্ত। চাহিদা বেশি থাকায় উৎপাদনের তাগিদও বেড়েছে। পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় পিনন-হাদি, তাঁতের পাঞ্জাবি, ফতুয়া, জামা, রুমাল, গামছাসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা রয়েছে। শতভাগ কটনের তৈরি এসব পোশাক পরিধানে আরামদায়ক এবং দামেও কিছুটা বেশি।

শহরের আসামবস্তী টেক্সটাইলের শ্রমিক জোনাকি চাকমা বলেন, “ঈদ আসলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ঈদের ছুটিতে অনেক পর্যটক রাঙামাটিতে বেড়াতে আসেন এবং তাঁতের তৈরি পণ্য কিনে নিয়ে যান।”

স্বর্ণটিলা আরএস টেক্সটাইলের মাস্টার রনি মারমা বলেন, “রাঙামাটির অন্যান্য টেক্সটাইলগুলোর মতো আমাদের এখানে কাজের চাপ বেড়েছে। শ্রমিকরা প্রতিদিন ওভারটাইম করছেন, ঈদকে সামনে রেখে আমরা আমাদের পণ্যগুলো প্রস্তুত করছি।”

কারখানায় উৎপাদিত পণ্যগুলো চলে যাচ্ছে স্থানীয় শো-রুমগুলোতে। শহরের তবলছড়ি টেক্সটাইল মার্কেট, রিজার্ভ বাজার, কাঁঠালতলী ও পর্যটক এলাকায় দোকানগুলো নতুন নতুন পণ্যে ভরে উঠছে। রমজান মাসে পর্যটক না আসায় বিক্রি কম হলেও ঈদের আগে দোকানগুলোতে এখন সাজসাজ রব। প্রতিদিন নতুন কালেকশন আসছে এবং বিক্রয়কর্মীরা ব্যস্ত এসব পণ্য দিয়ে দোকান সাজাতে।

পর্যটন ঝুলন্ত সেতু এলাকার বনানী টেক্সটাইলের স্বত্বাধিকারী রাহুল চাকমা বলেন, “ঈদ উপলক্ষে আমরা নতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শাড়ি, ফতুয়া, গামছাসহ ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি পণ্য তুলেছি। আশা করছি, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের আগমনে ভালো বিক্রি হবে।”

চাহিদা থাকায় পর্যটকদের জন্য নতুন ডিজাইনের পোশাক তৈরি হচ্ছে বলে জানান রাঙামাটি টেক্সটাইল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলা মিত্র। তিনি বলেন, “রাঙামাটিতে টেক্সটাইল একটি ঐতিহ্যবাহী পণ্য। যারা দূরদূরান্ত থেকে এখানে বেড়াতে আসেন, তারা উপহার হিসেবে আমাদের পণ্য নিয়ে যান। ঈদ উপলক্ষে আমরা পর্যাপ্ত পণ্য তৈরি করে রেখেছি।”

আসন্ন ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে অর্ধ কোটি টাকার তাঁতপণ্য বিক্রির আশা প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

রাঙামাটির তাঁতপল্লীতে উৎসবের প্রস্তুতি: অর্ধকোটি টাকার বিক্রির আশা

আপডেট সময় ১২:৩১:৫৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

 

তাঁতের খটখট ও ঝুমঝুম শব্দ জানান দিচ্ছে, সামনে আসছে ঈদ। মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসবকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি জেলা রাঙামাটির তাঁতপল্লীগুলো কর্মমুখর হয়ে উঠেছে। ঈদের পোশাক তৈরিতে তাঁত মালিক ও শ্রমিকরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন, আর কারখানার কোলাহলে সরগরম হয়ে উঠেছে তাঁতপল্লী।

ঈদের ছুটিতে রাঙামাটি ভ্রমণে আসেন হাজারো পর্যটক, যাদের আগ্রহ থাকে স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতে তৈরি তাঁতের পণ্যে। এই পর্যটকদের চাহিদা মেটাতে তাঁতপল্লীগুলো দিন-রাত সরব। শ্রমিকদের ব্যস্ততা বেড়ে গেছে, কিন্তু এ ব্যস্ততার মধ্যে খুশি তাঁত মালিক ও শ্রমিকরা।
দেশের অন্যান্য তাঁতপল্লীগুলোর মতো ঈদের পোশাক নিয়ে ব্যস্ত হলেও রাঙামাটির তাঁতগুলো কিছুটা ভিন্ন। পর্যটকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে শ্রমিকরা কাজ করছেন। স্থানীয়দের তুলনায় পর্যটকদের কাছে তাঁতপণ্যের আকর্ষণ বেশি, তবে পাঞ্জাবির চাহিদা স্থানীয়দের মধ্যেও রয়েছে।

শহরের টেক্সটাইল কারখানাগুলোতে দেখা যায়, শ্রমিকরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত পোশাক তৈরির কাজে ব্যস্ত। চাহিদা বেশি থাকায় উৎপাদনের তাগিদও বেড়েছে। পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় পিনন-হাদি, তাঁতের পাঞ্জাবি, ফতুয়া, জামা, রুমাল, গামছাসহ বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা রয়েছে। শতভাগ কটনের তৈরি এসব পোশাক পরিধানে আরামদায়ক এবং দামেও কিছুটা বেশি।

শহরের আসামবস্তী টেক্সটাইলের শ্রমিক জোনাকি চাকমা বলেন, “ঈদ আসলে আমাদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। ঈদের ছুটিতে অনেক পর্যটক রাঙামাটিতে বেড়াতে আসেন এবং তাঁতের তৈরি পণ্য কিনে নিয়ে যান।”

স্বর্ণটিলা আরএস টেক্সটাইলের মাস্টার রনি মারমা বলেন, “রাঙামাটির অন্যান্য টেক্সটাইলগুলোর মতো আমাদের এখানে কাজের চাপ বেড়েছে। শ্রমিকরা প্রতিদিন ওভারটাইম করছেন, ঈদকে সামনে রেখে আমরা আমাদের পণ্যগুলো প্রস্তুত করছি।”

কারখানায় উৎপাদিত পণ্যগুলো চলে যাচ্ছে স্থানীয় শো-রুমগুলোতে। শহরের তবলছড়ি টেক্সটাইল মার্কেট, রিজার্ভ বাজার, কাঁঠালতলী ও পর্যটক এলাকায় দোকানগুলো নতুন নতুন পণ্যে ভরে উঠছে। রমজান মাসে পর্যটক না আসায় বিক্রি কম হলেও ঈদের আগে দোকানগুলোতে এখন সাজসাজ রব। প্রতিদিন নতুন কালেকশন আসছে এবং বিক্রয়কর্মীরা ব্যস্ত এসব পণ্য দিয়ে দোকান সাজাতে।

পর্যটন ঝুলন্ত সেতু এলাকার বনানী টেক্সটাইলের স্বত্বাধিকারী রাহুল চাকমা বলেন, “ঈদ উপলক্ষে আমরা নতুন ডিজাইনের পাঞ্জাবি, শাড়ি, ফতুয়া, গামছাসহ ঐতিহ্যবাহী পাহাড়ি পণ্য তুলেছি। আশা করছি, ঈদের ছুটিতে পর্যটকদের আগমনে ভালো বিক্রি হবে।”

চাহিদা থাকায় পর্যটকদের জন্য নতুন ডিজাইনের পোশাক তৈরি হচ্ছে বলে জানান রাঙামাটি টেক্সটাইল মালিক সমিতির সভাপতি বাবলা মিত্র। তিনি বলেন, “রাঙামাটিতে টেক্সটাইল একটি ঐতিহ্যবাহী পণ্য। যারা দূরদূরান্ত থেকে এখানে বেড়াতে আসেন, তারা উপহার হিসেবে আমাদের পণ্য নিয়ে যান। ঈদ উপলক্ষে আমরা পর্যাপ্ত পণ্য তৈরি করে রেখেছি।”

আসন্ন ঈদের ছুটিতে রাঙামাটিতে অর্ধ কোটি টাকার তাঁতপণ্য বিক্রির আশা প্রকাশ করছেন ব্যবসায়ীরা।