হাইকোর্টের ৯ দফা নির্দেশনা:
অনলাইন ব্যবসায় প্রতারণা বন্ধে ও গ্রাহক সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ
অনলাইন ব্যবসায় প্রতারণা বন্ধ এবং গ্রাহকদের সচেতন করতে হাইকোর্ট ৯ দফা নির্দেশনা প্রদান করেছে। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এস এম মাসুদ হোসেন দোলনের বেঞ্চ এই রুলের ওপর চূড়ান্ত রায় দিয়েছে। বিশেষ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচিত নারী উদ্যোক্তা রোবাইয়াত ফাতেমা তনির মালিকানাধীন ‘সানভিস বাই তনি’ শোরুম খোলার বিষয়ে হাইকোর্টের রায় প্রকাশের পরই এই নির্দেশনাগুলি জারি হয়।
আদালতে তনির পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খালেকুজ্জামান, অপরপক্ষে ছিলেন আইনজীবী লুবনা ইয়াসমিন।
এই নির্দেশনাগুলির মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিধান রয়েছে, যার মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসায় স্বচ্ছতা ও গ্রাহক সুরক্ষা নিশ্চিত করা হবে।
হাইকোর্টের ৯ দফা নির্দেশনা:
১) সবাইকে বাংলাদেশের প্রচলিত আইন মেনে চলতে হবে এবং অনলাইন মালিক ও ভোক্তাদের মধ্যে সম্পর্ক বজায় রাখতে হবে।
২) অনলাইন ব্যবসায় আইন লঙ্ঘন হলে, ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষ আইনের সমান সুরক্ষা পাবে।
৩) প্রত্যেক নাগরিকের বৈধ ব্যবসা পরিচালনার অধিকার থাকবে এবং আইনের প্রক্রিয়া ছাড়া ব্যবসা বন্ধ করা যাবে না।
৪) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগকে সব অনলাইন ব্যবসায়ী ও সদস্যদের নিবন্ধন নিশ্চিত করতে হবে এবং তাদের অনুমোদন দিতে হবে।
৫) অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অননুমোদিত ব্যবসা চালানো এবং নকল পণ্য বিক্রয় বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।
৬) সকল অনলাইন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের প্রশাসক, মালিক ও ভোক্তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে যাচাই করা উচিত।
৭) বিটিআরসি ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনলাইন ব্যবসায়িক তথ্য সংরক্ষণে সহযোগিতা করতে হবে।
৮) গ্রাহকদের সচেতন করতে হবে যেন তারা অনুমোদন ছাড়া অনলাইন পণ্য না কিনে এবং প্রতারণার শিকার না হয়।
৯) ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিভাগকে প্রতারণা করা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।
সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্তৃপক্ষকে অনলাইন ব্যবসায়ীদের তথ্য সংগ্রহ এবং তাদের নিবন্ধন নিশ্চিত করার জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলা হয়েছে। এছাড়াও, গ্রাহকদের সচেতন করতে এবং প্রতারণা থেকে রক্ষা করতে সরকারি উদ্যোগ জরুরি।
এই আইনগত পদক্ষেপগুলো গ্রহণের মাধ্যমে অনলাইন ব্যবসা সুরক্ষিত হবে এবং গ্রাহকদের আস্থা পুনর্স্থাপন সম্ভব হবে, যা দেশের ই-কমার্স খাতকে আরও শক্তিশালী করবে।