ভূমিসেবা
ভূমিসেবায় স্থবিরতা: সরকারের বিভ্রান্তি, বাড়ছে জনগণের দুর্ভোগ

- আপডেট সময় ১০:৫৬:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
- / 51
গত বছরের নভেম্বর থেকে রাজধানীসহ সারাদেশে ভূমিসেবা কার্যক্রম কার্যত অচল। নামজারি থেকে শুরু করে খাজনা পরিশোধ কিংবা খতিয়ান সংগ্রহ সব কিছুতেই দেখা দিচ্ছে জটিলতা। ভূমি অফিসে দিনের পর দিন দৌড়ঝাঁপ করেও মিলছে না সমাধান, আর প্রতিবারই একই অজুহাত সার্ভার ত্রুটি।
সরেজমিনে বিভিন্ন ভূমি অফিস ঘুরে দেখা গেছে, জমির হস্তান্তর, দলিল রেজিস্ট্রেশন, এমনকি ব্যাংক ঋণ নিতেও সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। সন্তানকে বিদেশ পাঠানো, মেয়ের বিয়ে কিংবা জরুরি চিকিৎসার খরচ জোগাতে জমি বিক্রি করতে পারছেন না অনেকে। খাজনা পরিশোধ বাধ্যতামূলক হওয়ায় দলিল রেজিস্ট্রেশন আটকে আছে। একই কারণে গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংযোগও স্থগিত। নির্মাণ শিল্পেও এর প্রভাব পড়েছে; রড, সিমেন্ট, টাইলসসহ সংশ্লিষ্ট খাতগুলো ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
ভুক্তভোগীরা বলছেন, এটি কেবল প্রযুক্তিগত সমস্যাই নয়, বরং ইচ্ছাকৃতভাবে দুর্ভোগ সৃষ্টি করা হচ্ছে। কেউ কেউ মনে করছেন, সরকারকে বিব্রত করতে একটি চক্র সক্রিয় রয়েছে। অন্যদিকে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় মাঝেমধ্যে দুঃখ প্রকাশ করলেও বাস্তবসম্মত কোনো সমাধান দিতে পারছে না।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব এ এস এম সালেহ আহমেদ জানিয়েছেন, সফটওয়্যার আপডেটের কারণে সাময়িক সমস্যা তৈরি হয়েছে, তবে মার্চের মধ্যে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে। ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্পের পরিচালক মোহাম্মদ ইফতেখার হোসেন বলেছেন, পূর্বের একাধিক সফটওয়্যার একত্রিত করায় কিছু ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। তবে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের মাধ্যমে সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা চলছে।
এদিকে, ভূমি অফিসগুলোতে নাগরিকরা দিনের পর দিন ঘুরলেও কর্তব্যরত কর্মকর্তারা কার্যত নিস্ক্রিয়। কাজের চেয়ে সময় কাটছে গল্প-আড্ডায়। জনগণের প্রশ্ন সরকারের ডিজিটালাইজেশনের যে স্বপ্ন, তা কি কেবলই কাগজে-কলমে সীমাবদ্ধ? ভূমিসেবা স্বাভাবিক করতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা না নিলে সরকারের রাজস্ব ক্ষতির পাশাপাশি জনঅসন্তোষ বাড়বে, যা শাসনব্যবস্থার ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলতে পারে।