ঢাকা ০১:০৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ অগাস্ট ২০২৫, ৩১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
এআই চ্যাটবট নিয়ে গুরুতর তথ্য ফাঁস স্বীকার করল মেটা নবীগঞ্জে ৩০ কেজি গাঁজাসহ দুই মাদককারবারি আটক সংগ্রাম-শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় ৮১ বছরে খালেদা জিয়া রাশিয়ার সম্ভাব্য হুমকি মোকাবিলায় ড্রোন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র খুলছে লিথুয়ানিয়া এআই–ভিত্তিক হার্ডওয়্যারে বড় উদ্যোগ নিচ্ছে অ্যাপল জেরুজালেমকে চিরতরে ছিনিয়ে নিতে ই-ওয়ান বসতি প্রকল্প পুনরুজ্জীবনের ঘোষণা ইসরাইলি অর্থমন্ত্রীর ইউক্রেনকে অস্ত্র সহায়তায় যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলল ইউরোপ সিরিয়ার পুনর্গঠনে ইদলিব হবে কেন্দ্রবিন্দু: প্রেসিডেন্ট শারআ নির্বাচন করলে তফসিলের আগেই উপদেষ্টার পদ ছেড়ে দেব: আসিফ মাহমুদ রাজনীতি থেকে মাইনাস হবে, যারা নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করবে: সালাহউদ্দিন

ভ্যাট ব্যবস্থায় বিপর্যয়: দুর্নীতির জালে রাজস্ব ঘাটতি ৫৮ হাজার কোটি টাকা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:১৫:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫
  • / 57

ছবি: সংগৃহীত

 

বাংলাদেশে রাজস্ব আয়ের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)। কিন্তু ব্যবসায়ীদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার ফলে এই খাতে রাজস্ব আদায় অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি ব্যবসায়ী নিবন্ধিত হলেও, এনবিআরের কাছে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র ৫ লাখের কিছু বেশি। তার মধ্যে আবার বেশিরভাগই ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয় না।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের রাজস্ব ঘাটতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা চলতি বছরে ছয় মাসেই ৫৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে ডিজিটাইজেশনের অভাবে ভ্যাট আদায়ে নানা ফাঁকিবাজি চলে আসছে। রাজস্ব কর্তৃপক্ষ বারবার ভ্যাটের হার বাড়িয়ে সমস্যার সমাধান করতে চাইছে, কিন্তু নতুন ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্ত না করার ফলে সেই বাড়তি ভ্যাট আদায়ও সম্ভব হচ্ছে না।

২০১৮ সালে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও সাভারের ২৫টি বাজারে চালানো এক জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৮৮% প্রতিষ্ঠানই ভ্যাট ফাঁকি দেয়। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভ্যাট প্রদান থেকে বিরত থাকলেও, রাজস্ব কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। বরং ম্যানুয়াল পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীলতার কারণে ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে নানা ধরনের ঘুষ-দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, “ভ্যাট আদায় বাড়ানোর জন্য অটোমেশন চালু করা উচিত, যাতে নতুন ব্যবসায়ীদেরও সঠিকভাবে ভ্যাটের আওতায় আনা যায়।” কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, অটোমেশন প্রক্রিয়া স্থগিত থাকায় এবং ম্যানুয়াল পদ্ধতির উপর নির্ভরশীলতার কারণে দেশের রাজস্ব আদায় কমছে।

এদিকে, বেশ কিছু বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যেমন এস আলম গ্রুপ ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে চাপে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ভ্যাট প্রদান না করার কারণে সরকারের রাজস্ব খাতে বিশাল অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে। সরকার এখন অটোমেশন পদ্ধতির আওতায় ভ্যাট আদায়ের উদ্যোগ নিতে চাইলেও, এর বাস্তবায়ন সেভাবে কার্যকর হচ্ছে না।

রাজস্ব আদায় সুনির্দিষ্ট করতে হলে ভ্যাট সিস্টেমে আরো বেশি শৃঙ্খলা আনা জরুরি। অটোমেশন চালু করে, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কার্যকরভাবে ভ্যাট আদায়ের আওতায় আনা গেলে, দেশের রাজস্ব ঘাটতি কমানো সম্ভব হতে পারে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ভ্যাট ব্যবস্থায় বিপর্যয়: দুর্নীতির জালে রাজস্ব ঘাটতি ৫৮ হাজার কোটি টাকা

আপডেট সময় ১২:১৫:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারী ২০২৫

 

বাংলাদেশে রাজস্ব আয়ের সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট)। কিন্তু ব্যবসায়ীদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার ফলে এই খাতে রাজস্ব আদায় অত্যন্ত সীমিত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে দেশের ব্যবসায়ী সংগঠন এফবিসিসিআইয়ে প্রায় সাড়ে তিন কোটি ব্যবসায়ী নিবন্ধিত হলেও, এনবিআরের কাছে ভ্যাট নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা মাত্র ৫ লাখের কিছু বেশি। তার মধ্যে আবার বেশিরভাগই ভ্যাট রিটার্ন জমা দেয় না।

এমন পরিস্থিতিতে দেশের রাজস্ব ঘাটতি বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা চলতি বছরে ছয় মাসেই ৫৮ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে ডিজিটাইজেশনের অভাবে ভ্যাট আদায়ে নানা ফাঁকিবাজি চলে আসছে। রাজস্ব কর্তৃপক্ষ বারবার ভ্যাটের হার বাড়িয়ে সমস্যার সমাধান করতে চাইছে, কিন্তু নতুন ভ্যাটদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে তালিকাভুক্ত না করার ফলে সেই বাড়তি ভ্যাট আদায়ও সম্ভব হচ্ছে না।

২০১৮ সালে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও সাভারের ২৫টি বাজারে চালানো এক জরিপে দেখা যায়, প্রায় ৮৮% প্রতিষ্ঠানই ভ্যাট ফাঁকি দেয়। এসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভ্যাট প্রদান থেকে বিরত থাকলেও, রাজস্ব কর্তৃপক্ষ তাদের বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। বরং ম্যানুয়াল পদ্ধতির ওপর নির্ভরশীলতার কারণে ভ্যাট আদায়ের ক্ষেত্রে নানা ধরনের ঘুষ-দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হচ্ছে।

এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, “ভ্যাট আদায় বাড়ানোর জন্য অটোমেশন চালু করা উচিত, যাতে নতুন ব্যবসায়ীদেরও সঠিকভাবে ভ্যাটের আওতায় আনা যায়।” কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত, অটোমেশন প্রক্রিয়া স্থগিত থাকায় এবং ম্যানুয়াল পদ্ধতির উপর নির্ভরশীলতার কারণে দেশের রাজস্ব আদায় কমছে।

এদিকে, বেশ কিছু বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান যেমন এস আলম গ্রুপ ভ্যাট ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে চাপে রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠান ভ্যাট প্রদান না করার কারণে সরকারের রাজস্ব খাতে বিশাল অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে। সরকার এখন অটোমেশন পদ্ধতির আওতায় ভ্যাট আদায়ের উদ্যোগ নিতে চাইলেও, এর বাস্তবায়ন সেভাবে কার্যকর হচ্ছে না।

রাজস্ব আদায় সুনির্দিষ্ট করতে হলে ভ্যাট সিস্টেমে আরো বেশি শৃঙ্খলা আনা জরুরি। অটোমেশন চালু করে, ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও কার্যকরভাবে ভ্যাট আদায়ের আওতায় আনা গেলে, দেশের রাজস্ব ঘাটতি কমানো সম্ভব হতে পারে।