ইউক্রেনে রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা জেলেনস্কির

- আপডেট সময় ০২:৪৪:৫০ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫
- / 8
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি দেশটির রাজনৈতিক অঙ্গনে বড় ধরনের পরিবর্তনের ঘোষণা দিয়েছেন। সোমবার তিনি জানিয়েছেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ডেনিস শ্মিহালকে সরিয়ে তার স্থলাভিষিক্ত হিসেবে নতুন প্রধানমন্ত্রী নিয়োগের পরিকল্পনা করছেন।
দেশে যুদ্ধক্ষেত্রে বারবার ব্যর্থতা এবং জনমনে বাড়তে থাকা হতাশার প্রেক্ষিতে এই পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। তিনি প্রথম উপপ্রধানমন্ত্রী ইউলিয়া সভিরিদেঙ্কোর নাম প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য প্রস্তাব করবেন বলে জানিয়েছেন।
জেলেনস্কি তার ফেসবুক পোস্টে বলেন, দেশের অভ্যন্তরীণ নীতি পুনর্গঠনের অংশ হিসেবে এই রদবদল জরুরি হয়ে পড়েছে। সভিরিদেঙ্কো যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক সম্পদ চুক্তির আলোচনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।
২০২০ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা ডেনিস শ্মিহালকে সরিয়ে তার জায়গায় সভিরিদেঙ্কোকে বসানোর এই প্রস্তাব এখন পার্লামেন্টে ভোটের অপেক্ষায় রয়েছে। তবে জেলেনস্কির দলের ‘সার্ভান্ট অব দ্য পিপল’ পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় অনুমোদন পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, একজন উপপ্রধানমন্ত্রীকে প্রধানমন্ত্রী বানানো আসলে কতটা বাস্তব পরিবর্তন আনবে, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। অনেকের মতে, এটি কেবলমাত্র একজন ঘনিষ্ঠ অনুগতকে বসিয়ে প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা আরও কেন্দ্রীভূত করার একটি কৌশল।
অন্যদিকে, ইউক্রেনে সামরিক আইনের অজুহাতে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের সরিয়ে সামরিক প্রশাসক নিয়োগ, রাজনৈতিক বিরোধীদের দমন, এবং যুদ্ধবিরতি নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব সব মিলিয়ে জেলেনস্কির বিরুদ্ধে অসন্তোষ বাড়ছে।
সভিরিদেঙ্কোকে নিয়ে নতুন সরকারের লক্ষ্য থাকবে দেশীয় অস্ত্র উৎপাদন বাড়ানো এবং যুদ্ধকবলিত জনগণের জন্য সামাজিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা। জেলেনস্কি জানিয়েছেন, এই দুটি বিষয় এখন সরকারের অগ্রাধিকার।
এদিকে, যুদ্ধ নিয়ে দেশজুড়ে হতাশা বাড়ছে। যুদ্ধের প্রথমদিকে প্রবল আশাবাদ থাকলেও এখন অনেক ইউক্রেনীয় নাগরিক সমঝোতার পক্ষে মত দিচ্ছেন। তবে রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা এখনও রাজনৈতিকভাবে অজনপ্রিয়।
প্রসঙ্গত, ইউক্রেনের সংবিধান অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী দেশের অভ্যন্তরীণ নীতিতে বড় ভূমিকা পালন করেন। জেলেনস্কির দল পার্লামেন্টে নিয়ন্ত্রণ রাখায় প্রেসিডেন্ট-প্রধানমন্ত্রীর দ্বন্দ্বের সম্ভাবনা কম হলেও, রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা থেকেই যাচ্ছে।
পার্লামেন্ট মঙ্গলবার বসছে, তবে সভিরিদেঙ্কোর নিয়োগ নিয়ে ভোট কবে হবে, তা এখনো নির্ধারিত হয়নি।