জলাবদ্ধতায় নোয়াখালীতে পানিবন্দী প্রায় দুই লাখ মানুষ, বাড়ছে দুর্ভোগ

- আপডেট সময় ১১:৪৬:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
- / 11
নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীসহ আশপাশের এলাকায় টানা বৃষ্টির পর সৃষ্ট জলাবদ্ধতা কিছুটা কমলেও এখনও দুর্ভোগ কাটেনি সাধারণ মানুষের। বৃষ্টি না থাকায় পরিস্থিতির সামান্য উন্নতি হলেও বহু রাস্তা ও ঘরবাড়ি এখনো পানির নিচে।
জেলা প্রশাসনের তথ্য অনুযায়ী, এখনো জেলা সদরসহ সুবর্ণচর, কবিরহাট, কোম্পানীগঞ্জ, হাতিয়া ও সেনবাগ উপজেলায় প্রায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছেন।
শনিবার সকালে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, মাইজদীর লক্ষ্মীনারায়ণপুর, কলেজপাড়া, পূর্ব মাইজদী, জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, পুলিশ সুপারের কার্যালয়, জেলা জজ আদালত সড়ক, সেন্ট্রাল রোড, দরগাবাড়ি ও পৌর বাজার এলাকায় সড়কে পানি জমে আছে। যদিও আগের তুলনায় পানি অনেকটাই নেমেছে।
পূর্ব মাইজদীর জমাদারবাড়ির বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, কয়েকটি ঘরে পানি ঢুকে পড়েছিল। বৃষ্টি না থাকায় গত ২৪ ঘণ্টায় পানি অনেকটা কমেছে। তবে উঠানে ও চলাচলের পথে এখনো প্রায় এক ফুট পানি রয়ে গেছে। তাঁর অভিযোগ, এলাকায় কার্যকর ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা দেখা দেয়।
অটোরিকশাচালক মো. রুবেল জানান, মাইজদীর হাকিম কোয়ার্টার সড়কে হাঁটুপানি জমে ছিল পাঁচ দিন ধরে। ফলে যাত্রী পরিবহন বন্ধ রাখতে হয়েছিল। আজ কিছুটা পানি কমলেও সড়কের অনেক জায়গায় এখনো পানি জমে আছে এবং ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের উচ্চ পর্যবেক্ষক মো. আজরুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় উল্লেখযোগ্য কোনো বৃষ্টি হয়নি। আপাতত ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই, তবে হালকা গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হতে পারে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. মাসুদুর রহমান জানান, শুক্রবার দুপুর তিনটা পর্যন্ত পাওয়া সর্বশেষ তথ্যমতে, জেলার ৬টি উপজেলায় ৪৬ হাজার ৭০টি পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় রয়েছে। এসব পরিবারের সদস্য সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার। আশ্রয়কেন্দ্রে উঠেছেন ১ হাজার ৮৫০ জন। এ ছাড়া জলাবদ্ধতা ও বন্যায় ৪৬টি কাঁচাঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
জলাবদ্ধতার কারণে জনজীবন এখনো বিপর্যস্ত। যদিও পানি কমতে শুরু করেছে, তবুও স্থায়ী সমাধান না এলে এমন দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে না বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।