রপ্তানির অপেক্ষায় মধুপুরের আনারস, লোকসানের শঙ্কায় চাষিরা

- আপডেট সময় ১১:৩৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই ২০২৫
- / 7
আনারসের রাজধানীখ্যাত টাঙ্গাইলের মধুপুরে এবার চাষিদের মুখে হাসি নেই। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়া ও বাজারে দাম কমে যাওয়ায় লোকসানের আশঙ্কায় দিন কাটছে তাদের। এই সংকট কাটাতে সরকারকে রপ্তানির উদ্যোগ নিতে আহ্বান জানিয়েছেন তারা। কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, মধুপুরের আনারস বিদেশে রপ্তানির জন্য কার্যক্রম শুরু হয়েছে, অচিরেই ফল মিলবে বলেও আশা করছে তারা।
টাঙ্গাইলের মধুপুরে প্রায় ৮২ বছর ধরে আনারস চাষ হচ্ছে। এখানকার উঁচু-নিচু টিলাভূমি ও অনুকূল আবহাওয়ায় আনারসের উৎপাদন ভালো হয়। এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে থাকা চাষের জমি, রাস্তার পাশে স্তূপ করে রাখা আনারস ও মৌ মৌ গন্ধ জানান দেয় এর বিস্তার কতটা।
মধুপুরে সবচেয়ে বেশি চাষ হয় হানিকুইন, জলডুগি, ঘোড়াশাল ও ক্যালেন্ডার জাতের আনারস। তবে সংরক্ষণ সুবিধা না থাকায় দ্রুত নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। এর ওপর, চলতি মৌসুমে আগের বছরের তুলনায় উৎপাদন খরচ বেড়েছে কিন্তু বাজারে দাম কম। এতে লোকসানের মুখে পড়ছেন চাষিরা।
স্থানীয় চাষিরা বলছেন, আগের মতো বাজারের চাহিদা নেই। মানুষ কম আনারস কিনছেন। ফলে বাজারে বিক্রি কমে গেছে, দামও মিলছে না খরচ অনুযায়ী। তাদের দাবি, সরকার যেন আনারস রপ্তানিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করে। তাহলেই মিলবে সঠিক মূল্য, টিকবে চাষাবাদ।
এদিকে কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চাষিদের শুধু কাঁচা আনারস বিক্রির ওপর নির্ভর না করে প্রক্রিয়াজাত পণ্যের দিকেও নজর দিতে বলা হচ্ছে। আনারস থেকে জ্যাম, জেলি, জুস ও আচার তৈরি করে বাজারজাত করলে মূল্য সংযোজন সম্ভব। এতে চাষিরা লাভবান হবেন এবং দেশীয় পণ্য বিদেশেও পরিচিতি পাবে।
টাঙ্গাইল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আশেক পারভেজ বলেন, “আমরা চাষিদের আনারস প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন খাদ্যপণ্য তৈরির পরামর্শ দিচ্ছি। পাশাপাশি আনারস রপ্তানির জন্য কাজও চলছে।”
জেলার কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, চলতি মৌসুমে প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে আনারসের চাষ হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রায় পৌনে ৩ লাখ মেট্রিক টন আনারস উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
চাষিরা বলছেন, সঠিক পরিকল্পনা ওরপ্তানির সুযোগ তৈরি হলে মধুপুরের আনারস ফের ঘুরে দাঁড়াবে, ফিরবে চাষিদের মুখে হাসি।