কুমিল্লার মুরাদনগরে ট্রিপল মার্ডার: দুই দিন পর মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ২ জন

- আপডেট সময় ০১:১০:৪৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ জুলাই ২০২৫
- / 7
কুমিল্লার মুরাদনগরের কড়ইবাড়ি গ্রামে মা, ছেলে ও মেয়েসহ তিনজনকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে হত্যার ঘটনার দুই দিন পর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে নিহত রোকসানা আক্তার রুবির মেয়ে রিক্তা আক্তার বাদী হয়ে বাঙ্গরা বাজার থানায় এ মামলা করেন। মামলায় ৩৮ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
বাঙ্গরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, ঘটনার পর শুক্রবার রাতে যৌথবাহিনী অভিযান চালিয়ে কড়ইবাড়ি গ্রামের দুই বাসিন্দা মো. সবির আহমেদ (৪৮) ও মো. নাজিমউদ্দীন বাবুল (৫৬) কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ ঘটনায় বাকি আসামিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
পুলিশের তথ্যমতে, শুক্রবার বিকেল ৫টার পর কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গ থেকে নিহত তিনজনের লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। পরে রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশি পাহারায় কড়ইবাড়ি কবরস্থানে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়। তবে দাফনের সময় হাতে গোনা কয়েকজন ছাড়া স্থানীয়দের বা স্বজনদের কাউকে উপস্থিত থাকতে দেখা যায়নি।
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কড়ইবাড়ি গ্রামে ঘটে এ মর্মান্তিক ঘটনা। স্থানীয়রা একটি মোবাইল ফোন চুরি ও মাদক ব্যবসার অভিযোগ তুলে একই পরিবারের চারজনকে গণপিটুনি দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান রোকসানা আক্তার রুবি (৫৮), তার ছেলে রাসেল মিয়া (৩৫) এবং মেয়ে জোনাকি আক্তার (৩২)। হামলায় গুরুতর আহত হন রুবির আরেক মেয়ে রুমা আক্তার (২৫), যিনি বর্তমানে রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
ওসি মাহফুজুর রহমান জানান, ঘটনার তদন্ত এবং বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, ডিবিসহ যৌথবাহিনী কাজ করছে। নিহতদের পরিবারে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। এলাকায় চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে, অনেকেই ঘটনার নৃশংসতায় এখনও হতবিহ্বল।
এদিকে মামলার পর এলাকায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। নিরাপত্তার স্বার্থে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। স্থানীয়দের জিজ্ঞাসাবাদ ও তথ্য যাচাই-বাছাইয়ের মাধ্যমে হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দিয়েছেন পুলিশের কর্মকর্তারা।