মিয়ানমারে কেএনডিএফ-এর হামলায় ভূপাতিত জান্তা সরকারের যুদ্ধবিমান

- আপডেট সময় ১১:৪২:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
- / 5
মিয়ানমারের কারেন্নি (কায়া) রাজ্যে সামরিক জান্তা সরকারের একটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন্নি ন্যাশনালিটিস ডিফেন্স ফোর্স (কেএনডিএফ)। বৃহস্পতিবার (৩ জুলাই) মিয়ানমারের সংবাদমাধ্যম ইরাবতি এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সংগঠনটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, মঙ্গলবার রাতে কারেন্নি রাজ্যের হপাসাওং শহরে জান্তা সরকারের পদাতিক ব্যাটালিয়ন-১৩৪ ও ১৩৫ সদর দপ্তরে আক্রমণ চালায় কেএনডিএফ যোদ্ধারা। ওই সময় সরকারি বাহিনীকে আকাশপথে সহায়তা করছিল চীনা প্রযুক্তির তৈরি ‘এফটিসি-২০০০জি’ মডেলের একটি যুদ্ধবিমান।
পরে সীমান্তবর্তী বাগো অঞ্চলের এক গ্রাম থেকে বিমানটির ধ্বংসাবশেষ উদ্ধার হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কেএনডিএফের ডেপুটি কমান্ডার মাউই (মারউই)। তিনি নিজের ফেসবুকে বিধ্বস্ত বিমানটির ছবি ও ভিডিও শেয়ার করেন। ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, কারেন্নি যোদ্ধারা ঘটনাস্থলে উল্লাস করছে এবং স্লোগান দিচ্ছে, “এটি কারেন্নি রাজ্যে ঘটেছে, কারেন্নি যোদ্ধাদের ধন্যবাদ!”
মাউই জানান, “জান্তা সরকার আমাদের ওপর বিভিন্ন ধরনের জেট বিমান দিয়ে হামলা চালাচ্ছে। ভূপাতিত হওয়া বিমানটি তাদেরই একটি, যেটি নিখোঁজ ঘোষণা করা হয়েছিল।”
অন্যদিকে, জান্তা সরকারের পক্ষ থেকেও একটি যুদ্ধবিমান নিখোঁজ হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করা হয়েছে। তবে তারা দাবি করেছে, যান্ত্রিক ত্রুটি বা চরম আবহাওয়ার কারণে বিমানটি হারিয়েছে। পাশাপাশি অনুসন্ধান ও উদ্ধারকারী দল পাঠানোর কথাও জানিয়েছে তারা।
উল্লেখ্য, চীনে তৈরি এই ‘এফটিসি-২০০০জি’ যুদ্ধবিমানটির মূল্য প্রায় ৮.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। ২০২২ সালে চীন থেকে এই মডেলের মোট ছয়টি জেট কিনেছিল জান্তা সরকার।
ইরাবতির প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর থেকে মিয়ানমারের রাখাইন, কাচিন, শান, কারেন্নি, কারেন রাজ্য এবং সাগাইং অঞ্চলে বিদ্রোহীদের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০টি বিমান হারিয়েছে জান্তা সরকার। এর মধ্যে রয়েছে চারটি যুদ্ধবিমান, পাঁচটি হেলিকপ্টার এবং একটি গানশিপ।
সবশেষ গত ১০ জুন সাগাইং অঞ্চলের পালেতে কান ডাউক থানা দখলের সময় সরকারবিরোধী পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) দাবি করেছিল, তারা জান্তা সরকারের আরও একটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করেছে।
কারেন্নি রাজ্যে যুদ্ধবিমান ভূপাতিতের সাম্প্রতিক এই ঘটনা মিয়ানমারের চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং সেনা-বিরোধী লড়াইয়ে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।