ঢাকা ০৭:৩৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সারাদেশে জেলা ও উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ অ-১৮ এশিয়া কাপ হকিতে জাপানের কাছে বাংলাদেশের নারী দলের বড় হার: ১১-০ গোলে বিধ্বস্ত! গাজায় আরও এক ফুটবলারের মৃত্যু, ইসরায়েলি হামলায় প্রাণ গেল মুহান্নাদের ঈদে শাকিব খানের নতুন চমক, অ্যাকশন সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হলিউড অভিনেতা মাইকেল ম্যাডসেন আর নেই আশুগঞ্জে অবৈধ সীসা কারখানায় অভিযান, তিন চীনা নাগরিকসহ ৬ জনের কারাদণ্ড মিয়ানমারে কেএনডিএফ-এর হামলায় ভূপাতিত জান্তা সরকারের যুদ্ধবিমান বিশ্বে প্রথমবার তালেবান সরকারকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিলো রাশিয়া শুটিংয়ের মাঝে অসুস্থ স্বস্তিকা দত্ত, হাসপাতালে ভর্তি চূড়ান্ত হলো দুই এল ক্লাসিকো, ঐতিহাসিক ক্যাম্প ন্যুতে ফিরছে রোমাঞ্চ

ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কৃষক মিজানুরের ড্রাগন চাষে সাফল্য

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:২০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
  • / 26

ছবি সংগৃহীত

 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চাঁদবা গ্রামের খন্দকার মিজানুর রহমান এখন এলাকার সফল ও অনুপ্রেরণাদায়ী কৃষকের প্রতিচ্ছবি। একসময় তিনি ব্র্যাক ব্যাংকে চাকরিরত ছিলেন। কিন্তু শহরের চাকরিজীবন ত্যাগ করে তিনি ফিরে আসেন নিজ গ্রামে। ফিরেই নেমে পড়েন কৃষিকাজে যার ফল আজ এলাকাজুড়ে প্রশংসিত।

কৃষিকাজের শুরুটা ছোট পরিসরে হলেও ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন একজন সফল ড্রাগন ফল চাষি। শুধু মৌসুমেই নয়, বরং শীতকাল বা অফ-সিজনেও তিনি বিপুল পরিমাণ ড্রাগন ফল উৎপাদন করছেন, যার পেছনে মূল চালিকাশক্তি আধুনিক ‘চায়না লাইটিং’ পদ্ধতি।

মিজানুর রহমান জানান, গত বছর ড্রাগন ফলের বাজারমূল্য কম থাকায় অনেক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে ‘চায়না লাইটিং’ পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেন। এতে তার মোট খরচ হয় প্রায় চার লাখ টাকা। তবে শুধুমাত্র শীতকালেই তিনি এই খরচ উত্তোলন করে বাড়তি কয়েক লাখ টাকা লাভ করেন। বর্তমানে তার বাগানভর্তি পাকা ও গোলাপি রঙের ড্রাগন ফল।

তিনি জানান, স্থানীয় কোটচাঁদপুর বাজারে এই ফল ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত শনিবার (২ মে) তিনি একদিনেই ৬০০ কেজি ড্রাগন বিক্রি করেন প্রায় দুই লাখ টাকায়। অনেক সময় পাইকাররা সরাসরি বাগানেই এসে ফল কিনে নিয়ে যান। বর্তমানে তার বাগানে আরও চার লাখ টাকার ড্রাগন ফল রয়েছে, যা অচিরেই বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী।

তার মতে, সঠিক পদ্ধতি, নিয়মিত পরিচর্যা এবং আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে অফ-সিজনেও ড্রাগন চাষে লাভবান হওয়া সম্ভব। শহরের চাকরি ছেড়ে গ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি। তার সাহসী সিদ্ধান্ত এবং নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ অন্য কৃষকদের জন্য হয়ে উঠেছে এক অনুপ্রেরণার গল্প।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান রনি বলেন, “মিজানুর রহমান আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে যে পদ্ধতিতে অফ-সিজনে ড্রাগন ফল উৎপাদন করছেন, তা নিঃসন্দেহে অন্য কৃষকদের জন্য অনুকরণীয়। আমরা কৃষি অফিস থেকে তাকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।”

খন্দকার মিজানুরের সফলতা প্রমাণ করে, কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ বদলে দিতে পারে একজন কৃষকের ভাগ্য আর সেই পরিবর্তন ছড়িয়ে দিতে পারে পুরো সমাজে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ব্যাংকের চাকরি ছেড়ে কৃষক মিজানুরের ড্রাগন চাষে সাফল্য

আপডেট সময় ০৩:২০:৩৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫

 

ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ত্রিলোচনপুর ইউনিয়নের চাঁদবা গ্রামের খন্দকার মিজানুর রহমান এখন এলাকার সফল ও অনুপ্রেরণাদায়ী কৃষকের প্রতিচ্ছবি। একসময় তিনি ব্র্যাক ব্যাংকে চাকরিরত ছিলেন। কিন্তু শহরের চাকরিজীবন ত্যাগ করে তিনি ফিরে আসেন নিজ গ্রামে। ফিরেই নেমে পড়েন কৃষিকাজে যার ফল আজ এলাকাজুড়ে প্রশংসিত।

কৃষিকাজের শুরুটা ছোট পরিসরে হলেও ধীরে ধীরে তিনি হয়ে ওঠেন একজন সফল ড্রাগন ফল চাষি। শুধু মৌসুমেই নয়, বরং শীতকাল বা অফ-সিজনেও তিনি বিপুল পরিমাণ ড্রাগন ফল উৎপাদন করছেন, যার পেছনে মূল চালিকাশক্তি আধুনিক ‘চায়না লাইটিং’ পদ্ধতি।

মিজানুর রহমান জানান, গত বছর ড্রাগন ফলের বাজারমূল্য কম থাকায় অনেক কৃষক ক্ষতির মুখে পড়েন। সেই অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার তিনি দুই বিঘা জমিতে ‘চায়না লাইটিং’ পদ্ধতিতে চাষ শুরু করেন। এতে তার মোট খরচ হয় প্রায় চার লাখ টাকা। তবে শুধুমাত্র শীতকালেই তিনি এই খরচ উত্তোলন করে বাড়তি কয়েক লাখ টাকা লাভ করেন। বর্তমানে তার বাগানভর্তি পাকা ও গোলাপি রঙের ড্রাগন ফল।

তিনি জানান, স্থানীয় কোটচাঁদপুর বাজারে এই ফল ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত শনিবার (২ মে) তিনি একদিনেই ৬০০ কেজি ড্রাগন বিক্রি করেন প্রায় দুই লাখ টাকায়। অনেক সময় পাইকাররা সরাসরি বাগানেই এসে ফল কিনে নিয়ে যান। বর্তমানে তার বাগানে আরও চার লাখ টাকার ড্রাগন ফল রয়েছে, যা অচিরেই বিক্রি হবে বলে তিনি আশাবাদী।

তার মতে, সঠিক পদ্ধতি, নিয়মিত পরিচর্যা এবং আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ করে অফ-সিজনেও ড্রাগন চাষে লাভবান হওয়া সম্ভব। শহরের চাকরি ছেড়ে গ্রামের মাটিতে দাঁড়িয়ে নিজের স্বপ্ন পূরণ করেছেন তিনি। তার সাহসী সিদ্ধান্ত এবং নতুন প্রযুক্তি গ্রহণ অন্য কৃষকদের জন্য হয়ে উঠেছে এক অনুপ্রেরণার গল্প।

কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান রনি বলেন, “মিজানুর রহমান আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে যে পদ্ধতিতে অফ-সিজনে ড্রাগন ফল উৎপাদন করছেন, তা নিঃসন্দেহে অন্য কৃষকদের জন্য অনুকরণীয়। আমরা কৃষি অফিস থেকে তাকে প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত সহায়তা দিয়ে যাচ্ছি।”

খন্দকার মিজানুরের সফলতা প্রমাণ করে, কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ বদলে দিতে পারে একজন কৃষকের ভাগ্য আর সেই পরিবর্তন ছড়িয়ে দিতে পারে পুরো সমাজে।