ঢাকা ০৮:৩৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৭ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা-বিরোধী দুটি গোষ্ঠীর তীব্র সংঘর্ষ, পালিয়ে আসছে হাজারো মানুষ চলতি মাসের ৬ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৪২৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার: বাংলাদেশ ব্যাংক সাভারে বিশেষ অভিযান শীর্ষ সন্ত্রাসী টুটুল গ্রেপ্তার, বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার কিশোরগঞ্জে সবাইকে অচেতন করে ‘দুর্ধর্ষ চুরি, ১০ লাখ টাকার মালামাল লুট রাজনৈতিক পরিবর্তন ছাড়া কোনো নীতিই ব্যাংক খাতকে শক্তিশালী করতে পারবে না: গভর্নর গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৩ জনের মৃত্যু, নতুন ভর্তি ৪৯২ ঝিনাইদহে এসআই মিরাজুল হত্যা মামলায় ৪ জনের মৃত্যুদণ্ড, ৪ জনের যাবজ্জীবন নির্বাচনের বিলম্বে দেশের অগ্রগতি ব্যাহত হবে: মির্জা ফখরুল দায়িত্বশীলভাবে কাজ করলে কর্মকর্তাদের জন্য ভয়ের কিছু নেই: এনবিআর চেয়ারম্যান বধিরতা জয় করল বিজ্ঞান: শ্রবণশক্তি ফেরাতে জিন থেরাপির নতুন কৌশল

টেকনাফের পাহাড় থেকে উদ্ধার ছয় রাজমিস্ত্রী, মানব পাচারের জাল উন্মোচিত

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৪৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
  • / 52

ছবি: সংগৃহীত

 

সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারে কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ছয়জন রাজমিস্ত্রীকে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে তাদের স্বজনরা টেকনাফ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া পাহাড়ি অঞ্চল থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া রাজমিস্ত্রীদের নাম রশিদ আহমদ (২০), মারুফ আহমদ (১৮), শাহিন আহমদ (২১), এমাদ উদ্দিন (২২), খালেদ হাসান (১৯) ও আব্দুল জলিল (৫৫)। তারা সবাই সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ঈদগাঁও বাজার এলাকার বাসিন্দা।

অপহৃতদের একজন, রশিদ আহমদ, অপহরণের সময় তার পরিবারের সঙ্গে ০০৬২৮২১৭২৪৩৩২৫০ নম্বর থেকে যোগাযোগ করে জানায়, তাদের ইন্দোনেশিয়া নেওয়া হচ্ছে। তবে পরে পুলিশি তদন্তে জানা যায়, তারা আসলে টেকনাফের হাবিরছড়ার একটি পাচারকারি আস্তানায় আটক ছিল।

অভিযোগ পাওয়ার পরপরই টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা অভিযানে নামে। দ্রুত অভিযানে গিয়ে পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টেকনাফের হাবিরছড়া, লেদা, কচ্ছপিয়া ও বড়ডেইলসহ বেশ কিছু পাহাড়ি অঞ্চলে মানব পাচারকারী চক্র সক্রিয়। এরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষকে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে এখানে এনে আটক রাখে। অপহৃতদের আত্মীয়দের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়।

টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় এই চক্রগুলোর পৃথক আস্তানা রয়েছে। এসব স্থানে রয়েছে গোপন খামারবাড়ি, যা মুরগির খামারের মতো দেখতে হলেও আসলে এখানে মানুষ আটকে রাখা হয়। এইসব খামার ইয়াবা ব্যবসা ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেরও কেন্দ্রবিন্দু।

টেকনাফের লেদা পাহাড়ে নুরুল হুদার ছেলে শাহ আজমের খামারেও এই ধরনের অপরাধের প্রমাণ মিলেছে। এখানে রোহিঙ্গা সশস্ত্র পাহারাদাররা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ ধরনের চক্রগুলো মানব পাচার, অপহরণ এবং মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

পুলিশের এই দ্রুত অভিযানে অপহৃতদের উদ্ধার সম্ভব হলেও, পুরো পাচারচক্রের মূল হোতাদের ধরতে আরও অভিযান চালানো হচ্ছে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই চক্রের দালালদের শনাক্তে তদন্ত চলমান।

নিউজটি শেয়ার করুন

টেকনাফের পাহাড় থেকে উদ্ধার ছয় রাজমিস্ত্রী, মানব পাচারের জাল উন্মোচিত

আপডেট সময় ১১:৪৮:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫

 

সিলেটের জকিগঞ্জ থেকে কক্সবাজারে কাজ করতে গিয়ে নিখোঁজ হওয়া ছয়জন রাজমিস্ত্রীকে টেকনাফের পাহাড়ি এলাকা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে তাদের স্বজনরা টেকনাফ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে টেকনাফ সদর ইউনিয়নের হাবিরছড়া পাহাড়ি অঞ্চল থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।

উদ্ধার হওয়া রাজমিস্ত্রীদের নাম রশিদ আহমদ (২০), মারুফ আহমদ (১৮), শাহিন আহমদ (২১), এমাদ উদ্দিন (২২), খালেদ হাসান (১৯) ও আব্দুল জলিল (৫৫)। তারা সবাই সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার ঈদগাঁও বাজার এলাকার বাসিন্দা।

অপহৃতদের একজন, রশিদ আহমদ, অপহরণের সময় তার পরিবারের সঙ্গে ০০৬২৮২১৭২৪৩৩২৫০ নম্বর থেকে যোগাযোগ করে জানায়, তাদের ইন্দোনেশিয়া নেওয়া হচ্ছে। তবে পরে পুলিশি তদন্তে জানা যায়, তারা আসলে টেকনাফের হাবিরছড়ার একটি পাচারকারি আস্তানায় আটক ছিল।

অভিযোগ পাওয়ার পরপরই টেকনাফ থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন জানান, পুলিশ এবং অন্যান্য নিরাপত্তা সংস্থা অভিযানে নামে। দ্রুত অভিযানে গিয়ে পাহাড়ি এলাকা থেকে অপহৃতদের উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, টেকনাফের হাবিরছড়া, লেদা, কচ্ছপিয়া ও বড়ডেইলসহ বেশ কিছু পাহাড়ি অঞ্চলে মানব পাচারকারী চক্র সক্রিয়। এরা দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষকে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়া পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে এখানে এনে আটক রাখে। অপহৃতদের আত্মীয়দের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করা হয়।

টেকনাফের পাহাড়ি এলাকায় এই চক্রগুলোর পৃথক আস্তানা রয়েছে। এসব স্থানে রয়েছে গোপন খামারবাড়ি, যা মুরগির খামারের মতো দেখতে হলেও আসলে এখানে মানুষ আটকে রাখা হয়। এইসব খামার ইয়াবা ব্যবসা ও অন্যান্য অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডেরও কেন্দ্রবিন্দু।

টেকনাফের লেদা পাহাড়ে নুরুল হুদার ছেলে শাহ আজমের খামারেও এই ধরনের অপরাধের প্রমাণ মিলেছে। এখানে রোহিঙ্গা সশস্ত্র পাহারাদাররা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, এ ধরনের চক্রগুলো মানব পাচার, অপহরণ এবং মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত।

পুলিশের এই দ্রুত অভিযানে অপহৃতদের উদ্ধার সম্ভব হলেও, পুরো পাচারচক্রের মূল হোতাদের ধরতে আরও অভিযান চালানো হচ্ছে। দেশজুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই চক্রের দালালদের শনাক্তে তদন্ত চলমান।