ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ০১ জুন ২০২৫, ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সিলেট-মৌলভীবাজারে বন্যার প্রকোপ, বাড়ছে নদ-নদীর পানি রাশিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইউক্রেনে ১২ সেনা নিহত, আহত ৬০’র বেশি ২ জুন ঘোষণা আসছে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট: গুরুত্ব পাচ্ছে মূল্যস্ফীতি ও করনীতি চট্টগ্রামে পৃথক অভিযানে ছিনতাই ও ডাকাত চক্রের ৯ সদস্য গ্রেপ্তার ‘শেখ হাসিনার এ বিচার প্রতিশোধ নয়, ভবিষ্যতের প্রতিজ্ঞা’: চিফ প্রসিকিউটর জুলাইয়ে বাংলাদেশ সফরে আসছে পাকিস্তান, চূড়ান্ত হলো সূচি তীব্র গরমে সুস্থ থাকার ঘরোয়া টিপস: সহজেই মানুন, সুস্থ থাকুন পশুর হাটে অতিরিক্ত হাসিল ও অনিয়মে কঠোর ব্যবস্থা নেবে ডিএমপি: ডিএমপি কমিশনার সোমবার দ্বিতীয় দফায় রাজনৈতিক সংলাপে বসছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সুনামগঞ্জে ভারত থেকে চোরাইপথে আনা প্রায় দুই কোটি টাকার প্রসাধনসামগ্রী জব্দ

নববর্ষের উৎসব: পহেলা বৈশাখ ও আনন্দ শোভাযাত্রার রূপান্তর

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০২:২৮:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
  • / 46

ছবি সংগৃহীত

 

বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ—বাংলা নববর্ষ—শুধু একটি ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টানোর দিন নয়; এটি বাঙালির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রাণের উৎসব। বছরের প্রথম দিনটি ঘিরে দেশের প্রতিটি প্রান্তে চলে নানা আয়োজন, যার মধ্যমণি হয়ে উঠেছে আনন্দ শোভাযাত্রা—মঙ্গল শোভাযাত্রার একটি বিবর্তিত রূপ।

মঙ্গল শোভাযাত্রার সূচনা হয়েছিল একটি যৌথ সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি হিসেবে—সমাজে শান্তি, সাম্য ও শুভ শক্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে। এটি ছিল একটি প্রতীকী প্রতিবাদও, যেটি গানের, নৃত্যের, এবং লোকজ শিল্পের মাধ্যমে সমাজে উদারতাবোধ ও সম্প্রীতির বাতাবরণ গড়ে তোলে। সময়ের সঙ্গে এই শোভাযাত্রার রূপ পাল্টায়, রঙে ও রূপে আরও বৈচিত্র্য নিয়ে তা রূপ নেয় আনন্দ শোভাযাত্রায়।

আনন্দ শোভাযাত্রা শুধুই একটি শোভাযাত্রা নয়—এটি বাঙালির ঐতিহ্য, শিল্প ও সৃজনশীলতার এক মহা প্রদর্শনী। অংশগ্রহণকারীরা রঙিন পোশাকে, মুখোশ পরে, নানা প্রতীকী কাঠামো বহন করে এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। এটি যেন জীবন্ত হয়ে ওঠা লোকসংস্কৃতি—বাঘ, পাখি, মাছ, রঙিন ফুল আর ঢাকের আওয়াজে মুখরিত এক চলমান শিল্পকর্ম।

এই শোভাযাত্রা নতুন প্রজন্মের সামনে বাঙালি সংস্কৃতির গভীর শিকড়কে তুলে ধরে। এখানে শুধু আনন্দের প্রকাশই নয়, রয়েছে ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করার আহ্বানও। এটি একটি সামাজিক বার্তা—ধর্ম, বর্ণ, বয়স নির্বিশেষে সবাই মিলে একত্রিত হওয়ার, নতুন বছরে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার।

আনন্দ শোভাযাত্রা আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনাকে জাগ্রত করে, শিকড়ের সাথে সংযোগ গড়ে তোলে এবং জাতীয় পরিচয়কে নতুনভাবে চিনতে শেখায়। এই শোভাযাত্রা একদিকে যেমন নববর্ষকে বরণ করে নেয় রঙে-আলোয়, তেমনি আমাদের অতীতকে স্মরণ করে ভবিষ্যতের পথচলায় শক্তি যোগায়।

ফলে বলা যায়, পহেলা বৈশাখ ও আনন্দ শোভাযাত্রা একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে—বাঙালির প্রাণের উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি কেবল একটি দিন উদযাপন নয়, বরং এটি আমাদের সংস্কৃতি, ঐক্য, ও আশাবাদের বহিঃপ্রকাশ।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

নববর্ষের উৎসব: পহেলা বৈশাখ ও আনন্দ শোভাযাত্রার রূপান্তর

আপডেট সময় ০২:২৮:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫

 

বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ—বাংলা নববর্ষ—শুধু একটি ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টানোর দিন নয়; এটি বাঙালির সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও প্রাণের উৎসব। বছরের প্রথম দিনটি ঘিরে দেশের প্রতিটি প্রান্তে চলে নানা আয়োজন, যার মধ্যমণি হয়ে উঠেছে আনন্দ শোভাযাত্রা—মঙ্গল শোভাযাত্রার একটি বিবর্তিত রূপ।

মঙ্গল শোভাযাত্রার সূচনা হয়েছিল একটি যৌথ সাংস্কৃতিক অভিব্যক্তি হিসেবে—সমাজে শান্তি, সাম্য ও শুভ শক্তির বার্তা ছড়িয়ে দিতে। এটি ছিল একটি প্রতীকী প্রতিবাদও, যেটি গানের, নৃত্যের, এবং লোকজ শিল্পের মাধ্যমে সমাজে উদারতাবোধ ও সম্প্রীতির বাতাবরণ গড়ে তোলে। সময়ের সঙ্গে এই শোভাযাত্রার রূপ পাল্টায়, রঙে ও রূপে আরও বৈচিত্র্য নিয়ে তা রূপ নেয় আনন্দ শোভাযাত্রায়।

আনন্দ শোভাযাত্রা শুধুই একটি শোভাযাত্রা নয়—এটি বাঙালির ঐতিহ্য, শিল্প ও সৃজনশীলতার এক মহা প্রদর্শনী। অংশগ্রহণকারীরা রঙিন পোশাকে, মুখোশ পরে, নানা প্রতীকী কাঠামো বহন করে এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন। এটি যেন জীবন্ত হয়ে ওঠা লোকসংস্কৃতি—বাঘ, পাখি, মাছ, রঙিন ফুল আর ঢাকের আওয়াজে মুখরিত এক চলমান শিল্পকর্ম।

এই শোভাযাত্রা নতুন প্রজন্মের সামনে বাঙালি সংস্কৃতির গভীর শিকড়কে তুলে ধরে। এখানে শুধু আনন্দের প্রকাশই নয়, রয়েছে ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে বুকে ধারণ করার আহ্বানও। এটি একটি সামাজিক বার্তা—ধর্ম, বর্ণ, বয়স নির্বিশেষে সবাই মিলে একত্রিত হওয়ার, নতুন বছরে একসাথে এগিয়ে যাওয়ার।

আনন্দ শোভাযাত্রা আমাদের সাংস্কৃতিক চেতনাকে জাগ্রত করে, শিকড়ের সাথে সংযোগ গড়ে তোলে এবং জাতীয় পরিচয়কে নতুনভাবে চিনতে শেখায়। এই শোভাযাত্রা একদিকে যেমন নববর্ষকে বরণ করে নেয় রঙে-আলোয়, তেমনি আমাদের অতীতকে স্মরণ করে ভবিষ্যতের পথচলায় শক্তি যোগায়।

ফলে বলা যায়, পহেলা বৈশাখ ও আনন্দ শোভাযাত্রা একে অপরের পরিপূরক হয়ে উঠেছে—বাঙালির প্রাণের উৎসবের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এটি কেবল একটি দিন উদযাপন নয়, বরং এটি আমাদের সংস্কৃতি, ঐক্য, ও আশাবাদের বহিঃপ্রকাশ।