১১:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস: নারীর অধিকার ও সমতার সংগ্রাম

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:১৫:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫
  • / 74

ছবি: সংগৃহীত

 

‘বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল, নারী দিল তাহে রূপ-রস-সূধা-গন্ধ সুনির্মল’—জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই পঙক্তিগুলোর মর্মার্থ গ্রহণ করতে পারলে বিশ্ব নারীদের জন্য আরও নিরাপদ হয়ে উঠবে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করতে হবে না, নারীদের অবহেলিত হতে হবে না।

এ কারণেই প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়, যাতে নারীর অধিকার এবং সমতার ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। এবছর ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই দিবসটি বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হবে। ঢাকা মেইল থেকে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের সকল নারীদের জন্য শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

বিজ্ঞাপন

নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের পথ ধরে আসে বিশ্ব নারী দিবস। ১৮৫৭ সালে নিউইয়র্কের সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা মজুরিবৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা এবং অমানবিক কাজের পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছিলেন। সেই মিছিলে সরকারি বাহিনী দমন-পীড়ন চালায়।

১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের আয়োজনে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন নেতৃত্ব দেন। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সেখানে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেন।

১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হতে থাকে। সমাজতন্ত্রীরা এই দিবসে এগিয়ে আসে এবং ১৯১৪ সাল থেকে এটি বেশ কয়েকটি দেশে পালিত হতে থাকে। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই দিবসটি পালন করা হয়। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এবং ১৯৭৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।

নারী দিবস হচ্ছে সেই দিন, যেখানে জাতিগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে নারীর অর্জনকে সম্মান জানানো হয়। এই দিনে নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের ইতিহাস স্মরণ করে এবং ভবিষ্যতের পথ নির্ধারণ করে।

নারী দিবসের কর্মসূচি

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নানা আয়োজন হয়। সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে (৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ মানববন্ধন আয়োজন করছে। আজ সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হবে।

সকাল এগারোটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের আয়োজনে এক নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সমমর্যাদা, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন, সাইবার বুলিং এবং মব ভায়োলেন্স বন্ধে আইন প্রয়োগের দাবি থাকবে।

‘সারাদেশে অব্যাহত নারী শিশু ধর্ষণ বন্ধ কর’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ সকাল ১০টায় ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব নারী দিবস উপলক্ষে সকাল ১০টায় একটি সেমিনারের আয়োজন করবে। এছাড়া নারী সংহতির আয়োজনে ‘নারীমুক্তির আকাঙ্ক্ষা: গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাস্তবতা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা হবে সকাল ১০টায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস: নারীর অধিকার ও সমতার সংগ্রাম

আপডেট সময় ১২:১৫:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ মার্চ ২০২৫

 

‘বিশ্বের যা কিছু মহান সৃষ্টি, চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। এ বিশ্বে যত ফুটিয়াছে ফুল, ফলিয়াছে যত ফল, নারী দিল তাহে রূপ-রস-সূধা-গন্ধ সুনির্মল’—জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই পঙক্তিগুলোর মর্মার্থ গ্রহণ করতে পারলে বিশ্ব নারীদের জন্য আরও নিরাপদ হয়ে উঠবে। নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করতে হবে না, নারীদের অবহেলিত হতে হবে না।

এ কারণেই প্রতি বছর ৮ মার্চ আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করা হয়, যাতে নারীর অধিকার এবং সমতার ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা স্মরণ করিয়ে দেওয়া হয়। এবছর ‘অধিকার, সমতা, ক্ষমতায়ন: নারী ও কন্যার উন্নয়ন’ প্রতিপাদ্য নিয়ে এই দিবসটি বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হবে। ঢাকা মেইল থেকে বাংলাদেশের পাশাপাশি বিশ্বের সকল নারীদের জন্য শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা।

বিজ্ঞাপন

নারী শ্রমিকের অধিকার আদায়ের সংগ্রামের পথ ধরে আসে বিশ্ব নারী দিবস। ১৮৫৭ সালে নিউইয়র্কের সুতা কারখানার নারী শ্রমিকেরা মজুরিবৈষম্য, নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা এবং অমানবিক কাজের পরিবেশের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে রাস্তায় নেমেছিলেন। সেই মিছিলে সরকারি বাহিনী দমন-পীড়ন চালায়।

১৯০৯ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি নিউইয়র্কের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাট নারী সংগঠনের আয়োজনে প্রথম আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে জার্মান সমাজতান্ত্রিক নেত্রী ক্লারা জেটকিন নেতৃত্ব দেন। ১৯১০ সালে ডেনমার্কের কোপেনহেগেনে দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক নারী সম্মেলনে ১৭টি দেশ থেকে ১০০ জন নারী প্রতিনিধি অংশ নেন। সেখানে ক্লারা প্রতি বছর ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে পালনের প্রস্তাব দেন।

১৯১১ সাল থেকে নারীদের সম-অধিকার দিবস হিসেবে দিনটি পালিত হতে থাকে। সমাজতন্ত্রীরা এই দিবসে এগিয়ে আসে এবং ১৯১৪ সাল থেকে এটি বেশ কয়েকটি দেশে পালিত হতে থাকে। বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পূর্ব থেকেই দিবসটি পালন করা হয়। জাতিসংঘ ১৯৭৫ সালে আন্তর্জাতিক নারীবর্ষে ৮ মার্চকে আন্তর্জাতিক নারী দিবস হিসেবে ঘোষণা করে এবং ১৯৭৭ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।

নারী দিবস হচ্ছে সেই দিন, যেখানে জাতিগত, ভাষাগত, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সব ক্ষেত্রে নারীর অর্জনকে সম্মান জানানো হয়। এই দিনে নারীরা তাদের অধিকার আদায়ের ইতিহাস স্মরণ করে এবং ভবিষ্যতের পথ নির্ধারণ করে।

নারী দিবসের কর্মসূচি

আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নানা আয়োজন হয়। সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে (৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যালির আয়োজন করা হয়েছে। এতে সভাপতিত্ব করবেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ডা. ফওজিয়া মোসলেম।

কর্মক্ষেত্র ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যৌন হয়রানি প্রতিরোধের জন্য আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের দাবিতে জেন্ডার প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ মানববন্ধন আয়োজন করছে। আজ সকাল সাড়ে দশটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন হবে।

সকাল এগারোটায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নারীমুক্তি কেন্দ্রের আয়োজনে এক নারী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে সমমর্যাদা, সমঅধিকার প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি খুন, ধর্ষণ, নিপীড়ন, সাইবার বুলিং এবং মব ভায়োলেন্স বন্ধে আইন প্রয়োগের দাবি থাকবে।

‘সারাদেশে অব্যাহত নারী শিশু ধর্ষণ বন্ধ কর’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে নারী সংগঠন হিল উইমেন্স ফেডারেশন কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আজ সকাল ১০টায় ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশ হবে।
জাতীয় প্রেস ক্লাব নারী দিবস উপলক্ষে সকাল ১০টায় একটি সেমিনারের আয়োজন করবে। এছাড়া নারী সংহতির আয়োজনে ‘নারীমুক্তির আকাঙ্ক্ষা: গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাস্তবতা’ শীর্ষক মতবিনিময় সভা হবে সকাল ১০টায় বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রে।