ঢাকা ০৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
২১ আগস্ট মামলায় খালাসের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের আপিলের শুনানি শুরু শ্রীমঙ্গলে করলা চাষে বিপ্লব, বদলে যাচ্ছে গ্রামীণ জীবন গণতন্ত্রের পথে ঐকমত্য প্রয়োজন, মতপার্থক্য নয়: আলী রীয়াজ মেয়র পদে ইশরাক হোসেনকে বসানো নিয়ে উত্তপ্ত গুলিস্তান, চলছেই লাগাতার অবস্থান কর্মসূচি শিক্ষার্থীদের হামলার নিন্দা সারজিস আলমের, ‘ধিক্কার জানাই এমন আচরণে’ সিন্ধু চুক্তি ভাঙার চিন্তা করবেন না, নয়াদিল্লিকে হুঁশিয়ারি পাক প্রধানমন্ত্রীর বাল্যবিবাহ বিরোধী পোস্টের জেরে প্রাণ গেল তরুণের: গ্রেফতার ৬ জন বাজেটে মৎস্য-প্রাণিসম্পদে বাড়তি ভর্তুকি ও ঋণ সুবিধা চান খাতসংশ্লিষ্টরা কুড়িগ্রাম সীমান্তে বজ্রপাতে ১ বিজিবি সদস্য নিহত, আহত আরো ৪ কোটচাঁদপুরে ট্রেনে অভিযান, ৩ কোটির হেরোইন উদ্ধার

ঐতিহ্য আর ভক্তির মিলনমেলা—তিতাস নদীতে গঙ্গাস্নান ও লোকজ উৎসব

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৪:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫
  • / 32

ছবি: সংগৃহীত

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পূর্ব পাইকপাড়ার তিতাস নদীর পাড়জুড়ে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল থেকেই ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। হাজারো ভক্ত-পুণ্যার্থী সমবেত হন বহু প্রাচীন ঐতিহ্যের অংশ গঙ্গাস্নানে অংশ নিতে। চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে প্রতিবছরই এই পবিত্র স্নান অনুষ্ঠিত হয়, যা এই অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে একটি আধ্যাত্মিক মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

সকাল হতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন গোকর্ণঘাটে। কেউ পরিবার নিয়ে, কেউবা একাই এসে গা ভাসিয়ে দেন পুণ্যস্নানে। বিশ্বাস, এই গঙ্গাস্নান দেহ ও আত্মাকে পবিত্র করে তোলে, আর আনে মানসিক প্রশান্তি।

স্নান শেষে প্রার্থনায় মগ্ন হন ভক্তরা। স্বস্তিকা দাস নামে এক পুণ্যার্থী জানান, “প্রতি বছরই আমরা গঙ্গাস্নানে আসি। আজও এসেছি পরিবারের মঙ্গল ও দেশের মানুষের শান্তির জন্য প্রার্থনা করতে।” ভক্ত মোহন সরকার বলেন, “স্নানের পর অনেকেই নদীর তীরে প্রয়াত স্বজনদের স্মরণে তিথি শ্রাদ্ধ ও পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করছেন। বাবা-মায়ের আত্মার শান্তির জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

নদীপাড়ে এসময় ভক্তদের তর্পণ কর্মে সহযোগিতা করছিলেন পুরোহিত নিমাই চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “তর্পণ করার ফলে পিতৃপক্ষ ও মাতৃপক্ষ সন্তুষ্ট হন এবং সন্তানদের আশীর্বাদ করেন।” গঙ্গাস্নানকে কেন্দ্র করে নদীর দুই তীরে বসে গেছে গ্রামবাংলার প্রাণবন্ত লোকজ মেলা। নানা রকম মিষ্টান্ন, খেলনা, হাওয়াই মিঠাই, বাঁশের বাঁশি, বাচ্চাদের খেলাধুলার সামগ্রী সব মিলিয়ে এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়। ছোট-বড় সবার পদচারণায় মুখর ছিল মেলা এলাকা।

দিনভর চলা এই গঙ্গাস্নান ও মেলাকে ঘিরে এলাকার মানুষের মধ্যে ছিল উৎসাহ ও আনন্দের ছাপ। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে লোকজ এই উৎসব। ধর্মীয় গাম্ভীর্যের সঙ্গে উৎসবের রঙ মিশিয়ে এটি হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক গর্বিত ঐতিহ্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

ঐতিহ্য আর ভক্তির মিলনমেলা—তিতাস নদীতে গঙ্গাস্নান ও লোকজ উৎসব

আপডেট সময় ০৪:৫৩:৫৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পূর্ব পাইকপাড়ার তিতাস নদীর পাড়জুড়ে বৃহস্পতিবার (২৭ মার্চ) সকাল থেকেই ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। হাজারো ভক্ত-পুণ্যার্থী সমবেত হন বহু প্রাচীন ঐতিহ্যের অংশ গঙ্গাস্নানে অংশ নিতে। চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীতে প্রতিবছরই এই পবিত্র স্নান অনুষ্ঠিত হয়, যা এই অঞ্চলের ধর্মপ্রাণ মানুষের কাছে একটি আধ্যাত্মিক মিলনক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে।

সকাল হতেই জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ ছুটে আসেন গোকর্ণঘাটে। কেউ পরিবার নিয়ে, কেউবা একাই এসে গা ভাসিয়ে দেন পুণ্যস্নানে। বিশ্বাস, এই গঙ্গাস্নান দেহ ও আত্মাকে পবিত্র করে তোলে, আর আনে মানসিক প্রশান্তি।

স্নান শেষে প্রার্থনায় মগ্ন হন ভক্তরা। স্বস্তিকা দাস নামে এক পুণ্যার্থী জানান, “প্রতি বছরই আমরা গঙ্গাস্নানে আসি। আজও এসেছি পরিবারের মঙ্গল ও দেশের মানুষের শান্তির জন্য প্রার্থনা করতে।” ভক্ত মোহন সরকার বলেন, “স্নানের পর অনেকেই নদীর তীরে প্রয়াত স্বজনদের স্মরণে তিথি শ্রাদ্ধ ও পারলৌকিক ক্রিয়া সম্পন্ন করছেন। বাবা-মায়ের আত্মার শান্তির জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।”

নদীপাড়ে এসময় ভক্তদের তর্পণ কর্মে সহযোগিতা করছিলেন পুরোহিত নিমাই চক্রবর্তী। তিনি বলেন, “তর্পণ করার ফলে পিতৃপক্ষ ও মাতৃপক্ষ সন্তুষ্ট হন এবং সন্তানদের আশীর্বাদ করেন।” গঙ্গাস্নানকে কেন্দ্র করে নদীর দুই তীরে বসে গেছে গ্রামবাংলার প্রাণবন্ত লোকজ মেলা। নানা রকম মিষ্টান্ন, খেলনা, হাওয়াই মিঠাই, বাঁশের বাঁশি, বাচ্চাদের খেলাধুলার সামগ্রী সব মিলিয়ে এক আনন্দঘন পরিবেশ তৈরি হয়। ছোট-বড় সবার পদচারণায় মুখর ছিল মেলা এলাকা।

দিনভর চলা এই গঙ্গাস্নান ও মেলাকে ঘিরে এলাকার মানুষের মধ্যে ছিল উৎসাহ ও আনন্দের ছাপ। আজ সন্ধ্যা পর্যন্ত চলবে লোকজ এই উৎসব। ধর্মীয় গাম্ভীর্যের সঙ্গে উৎসবের রঙ মিশিয়ে এটি হয়ে উঠেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার এক গর্বিত ঐতিহ্য।