জ্বালানি সংকটে শিল্পে ধস, সাথে বিনিয়োগ স্থবির – আতঙ্কে উদ্যোক্তারা

- আপডেট সময় ১০:৫৯:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ মে ২০২৫
- / 9
জ্বালানির সংকট, ঋণের উচ্চ সুদহার, সময়মতো বেতন-ভাতা দিতে না পারলে মালিকদের জেলে পাঠানোর হুমকি এ সবকিছু মিলিয়ে চরম উদ্বেগে দেশের শিল্প উদ্যোক্তারা। গ্যাস সংকটে উৎপাদন স্থবির, চাঁদাবাজি ও মামলা-হামলার ভয়ে কারখানা চালু রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল বলেন, “শিল্পোদ্যোক্তাদের ধ্বংস করে দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন কারখানা বন্ধ হচ্ছে। পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে মানুষ রাস্তায় নামবে।” তিনি বলেন, “বিডা বলছে বিদেশি বিনিয়োগকারী আসবে। একজনকে এনে আমাদের সঙ্গে পার্টনার করতে বলেন কিন্তু বাংলাদেশে ব্যবসার খরচ এত বেশি যে কেউ আসতে চায় না।”
ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত দেড় মাসে গ্যাস সংকটে রপ্তানিনির্ভর ও স্থানীয় টেক্সটাইল ও পোশাক খাতের বহু কারখানা আংশিক বা পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। এতে হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ হুমকির মুখে। নতুন বিনিয়োগ বন্ধ হওয়ায় কর্মসংস্থানের সম্ভাবনাও কমে যাচ্ছে।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ার-উল-আলম পারভেজ বলেন, “গ্যাস দেবেন না, সুদ বাড়াবেন, আবার বেতন না দিলে মালিকদের জেলে দেবেন এটা কেমন নীতি? সরকার প্রতিশ্রুতি রাখতে না পারলে মালিকরা দায় নেবেন কেন?” তাঁর মতে, শিল্প বাঁচাতে হলে সরকারের এখনই কার্যকর উদ্যোগ নেওয়া দরকার।
ব্যবসায়ীরা আরও জানান, চলতি মূলধন সংকুচিত হওয়ায় আসন্ন ঈদুল আজহার আগেও বেতন-ভাতা পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ব্যাংকের ঋণ কিস্তি ও গ্যাস বিল পরিশোধের পাশাপাশি শ্রমিকদের মজুরি দেওয়া এখন দুরূহ।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, “এই সময় গ্যাসের দাম দ্বিগুণ করা হলে শিল্প আরও বিপদে পড়বে। উৎপাদন ব্যয় বাড়বে, প্রতিযোগিতা কমবে, বিনিয়োগ বন্ধ হবে। এর ফলে অনেকে কারখানা বন্ধ করতে বাধ্য হবে, ফলে বেড়ে যাবে মন্দ ঋণের পরিমাণ।”
পরিসংখ্যান বলছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে নিবন্ধিত দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ প্রকল্পের সংখ্যা ৮১৪টি, প্রস্তাবিত বিনিয়োগ ২৭ হাজার ৯৩৬ কোটি টাকা। তবে গত অর্থবছরের তুলনায় তা কম। উদ্যোক্তারা বলছেন, এভাবে চললে শিল্প ধ্বংস হবে, কর্মসংস্থান বন্ধ হবে, আর অর্থনীতি পড়বে গভীর সঙ্কটে।