ড্রোনের সহায়তায় মাধ্যমে অভিযাত্রীদের এভারেস্ট অভিযানে নতুন দিগন্ত

- আপডেট সময় ০১:৫৫:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৫
- / 49
হিমালয়ের শ্রেষ্ঠ শিখর এভারেস্টে যখন নীরবতা ভর করে, তখনও যেন প্রকৃতির গভীর রহস্যময়তা ছুঁয়ে যায় মন। এমনই এক মুহূর্তে আকাশ থেকে ধীরে ধীরে নামছে একটি ড্রোন। হিমবাহে ঘেরা উঁচু পাথরের ভিড়ে এই দৃশ্য যেন এক নতুন আশার আলো। এভারেস্টের বেজক্যাম্পে বসে মিলান পাণ্ডে এমনই চিত্রের সাক্ষী। দুর্গম পথ না পেরিয়েই তিনি সাহায্যের হাত বাড়াচ্ছেন সাহসী অভিযাত্রীদের দিকে।
মিলান পাণ্ডে একজন দক্ষ ড্রোনচালক। বেজক্যাম্প থেকেই তিনি ড্রোনের মাধ্যমে অভিযাত্রীদের কাছে অক্সিজেন সিলিন্ডার, দড়ি, মইসহ নানা প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম পৌঁছে দিচ্ছেন। তাঁর এই কার্যক্রম শুধু সময় সাশ্রয়ই করছে না, বরং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় শেরপাদের জীবন বাঁচাতেও সহায়ক হতে পারে।
বিশেষ করে খুম্বু আইসফল অঞ্চলে, যা ক্যাম্প ওয়ান ও বেজক্যাম্পের মাঝামাঝি অবস্থিত, সেখানে প্রতিবছর অনেক শেরপা প্রাণ হারান। এই বিপজ্জনক পথ পেরিয়ে সরঞ্জাম বহন করাটা দীর্ঘদিন ধরে একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল। এখন পাণ্ডের ড্রোন সেই চ্যালেঞ্জকে অনেকটাই সহজ করে তুলছে।
এভারেস্টের পথে সহায়ক শেরপারা সাত দশকেরও বেশি সময় ধরে অভিযাত্রীদের জন্য পথ তৈরি করে আসছেন। এই দীর্ঘ অভিজ্ঞতা তাঁদের সাহসী করেছে, কিন্তু প্রাণের ঝুঁকি রয়ে গেছে আগের মতোই। পাণ্ডের মতে, ড্রোন প্রযুক্তি এবং শেরপাদের অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটলে এভারেস্ট অভিযাত্রা হতে পারে আরও নিরাপদ এবং কার্যকর।
মিলান পাণ্ডে স্থানীয় একটি ড্রোন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ‘এয়ারলিফট টেকনোলজি’-তে কাজ করেন। তাঁর লক্ষ্য, পর্বতারোহণের পথে আধুনিক প্রযুক্তিকে যুক্ত করে অভিযাত্রীদের জীবন বাঁচানো এবং দুর্গমতা দূর করা।
ড্রোন শুধু সরঞ্জাম পরিবহনই নয়, বরং ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা পর্যবেক্ষণ, পথ নির্ধারণ এবং জরুরি পরিস্থিতিতে দ্রুত সহায়তা পৌঁছে দেওয়ার কাজেও ব্যবহৃত হচ্ছে। এই প্রযুক্তির মাধ্যমে এভারেস্ট অভিযানের এক নতুন যুগের সূচনা হচ্ছে, যেখানে প্রকৃতির চ্যালেঞ্জের মোকাবেলায় মানুষ পাশে পাচ্ছে আধুনিকতার হাত।
মিলান পাণ্ডে ও তাঁর ড্রোন যেন হিমালয়ের শিখরে পৌঁছে দিয়েছে মানবিকতা আর প্রযুক্তির এক নতুন সংযোগ।