০৩:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫
শিরোনাম :
ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উপলক্ষ্যে রাজধানীতে জশনে জুলুস শোভাযাত্রা কুষ্টিয়ায় নিখোঁজের দুই দিন পর পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার তুরাগ নদীর ১৭ কিলোমিটার ড্রেজিংয়ে অর্থ দেবে বিশ্বব্যাংক যারা ডিসেম্বরে নির্বাচন চেয়েছে, তারাই এখন বানচালের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত: আসিফ মাহমুদ বিষাক্ত মদ্যপানে মুন্সিগঞ্জে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে আরও ৩ লেবাননে সব অস্ত্র রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পরিকল্পনা অনুমোদন বৈশ্বিক ড্রোন বিক্রি বাড়াতে ১৯৮৭ সালের ব্যাখ্যা পরিবর্তন করছে যুক্তরাষ্ট্র নথি ফাঁস: ২০১৯ সালে মার্কিন বাহিনী উত্তর কোরিয়ার বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা করে যুক্তরাজ্য–নরওয়ের মধ্যে ১০ বিলিয়ন পাউন্ডের প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সিরিয়া থেকে বেআইনিভাবে তেল উত্তোলন করছে SDF/YPG, AANES

চোকার্স’ তকমা ও ২৭ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৭:১৯:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫
  • / 17

ছবি সংগৃহীত

 

 

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল যেন ছিল পেন্ডুলামের মতো কখনো দক্ষিণ আফ্রিকা এগিয়ে, কখনো অস্ট্রেলিয়া। টানটান উত্তেজনার এ লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছে প্রোটিয়ারা। বহুদিনের ‘চোকার্স’ তকমা ঘুচিয়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রথম দিন টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ শেষে স্পষ্ট, সেটিই ছিল তাদের সেরা সিদ্ধান্ত। কারণ দ্বিতীয় দিন থেকে ব্যাটিং অনেকটাই সহজ হয়ে যায়, যার পূর্ণ ফায়দা তুলে নেন এইডেন মার্করাম ও অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।

শেষ ইনিংসে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে স্টার্ক, কামিন্স কিংবা হ্যাজেলউডদের মতো বোলাররাও বল সুইং করাতে পারেননি। যদিও নাথান লায়ন কিছুটা স্পিন আদায় করেছিলেন, তবে প্রোটিয়াদের দৃঢ় প্রতিরোধ ভাঙা সম্ভব হয়নি। ফলে ২৮১ রানের টার্গেটও অজিদের কাছে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বরং চতুর্থ ইনিংসে ৫ উইকেট হাতে রেখে ২৮২ রান করে জয় ছিনিয়ে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান এইডেন মার্করামের। তার ১৩৬ রানের অনবদ্য ইনিংস ছিল নিখুঁত—দায়িত্বশীলতা, ধৈর্য, ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী শট নির্বাচন—সবকিছুই ছিল পরিপূর্ণ। ২০৭ বলের এ ইনিংস যেন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দীর্ঘ অপেক্ষার শেষ প্রহরের নিখুঁত উত্তর। জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে আউট হলেও কাজের কাজ তিনি আগেই সেরে ফেলেছিলেন।

অধিনায়ক বাভুমার কথাও না বললেই নয়। দলের সবচেয়ে কঠিন সময়টিতে ১৩৪ বলে ৬৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেছেন তিনি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা উইকেটে থেকে যেভাবে লড়াই করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রথম ইনিংসেও ৩৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। দুই ইনিংসে ব্যাট হাতে দারুণ ভূমিকা রাখেন ডেভিড বেন্ডিংহামও—প্রথম ইনিংসে ৪৫ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ইনিংস।

বোলিংয়ে কাগিসো রাবাদা ছিলেন দুর্দান্ত। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট নিয়ে প্রমাণ করেছেন, বড় ম্যাচ মানেই তিনি। তাকে সমর্থন দিয়েছেন মার্কো জেনসেন (৪ উইকেট) ও লুঙ্গি এনগিডি (৩ উইকেট)।

প্রথম দিনেই অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ব্যাটারদের বিপদে ফেলে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ৬৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় অজিরা। রাবাদা ফিরিয়ে দেন খাজা ও ক্যামেরন গ্রিনকে, আর জেনসেন তুলে নেন লাবুশেনের উইকেট। হেডও ফিরেন মাত্র ১১ রানে।

পরবর্তীতে স্টিভ স্মিথ ও বেউ ওয়েবস্টার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও শেষ পাঁচ উইকেট হারায় মাত্র ২০ রানে। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় ২১২ রানে।

এই ম্যাচ শুধু একটি ট্রফি জয়ের গল্প নয়, বরং দক্ষিণ আফ্রিকার লম্বা হতাশার ইতিহাসে একটি গৌরবময় নতুন অধ্যায়। এবার তারা আর ‘চোকার্স’ নয় তারা এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।

নিউজটি শেয়ার করুন

চোকার্স’ তকমা ও ২৭ বছরের আক্ষেপ ঘুচিয়ে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা

আপডেট সময় ০৭:১৯:৫৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জুন ২০২৫

 

 

টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল যেন ছিল পেন্ডুলামের মতো কখনো দক্ষিণ আফ্রিকা এগিয়ে, কখনো অস্ট্রেলিয়া। টানটান উত্তেজনার এ লড়াইয়ে শেষ হাসি হেসেছে প্রোটিয়ারা। বহুদিনের ‘চোকার্স’ তকমা ঘুচিয়ে প্রথমবারের মতো টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা।

প্রথম দিন টস জিতে বল করার সিদ্ধান্ত নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। ম্যাচ শেষে স্পষ্ট, সেটিই ছিল তাদের সেরা সিদ্ধান্ত। কারণ দ্বিতীয় দিন থেকে ব্যাটিং অনেকটাই সহজ হয়ে যায়, যার পূর্ণ ফায়দা তুলে নেন এইডেন মার্করাম ও অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।

শেষ ইনিংসে ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে স্টার্ক, কামিন্স কিংবা হ্যাজেলউডদের মতো বোলাররাও বল সুইং করাতে পারেননি। যদিও নাথান লায়ন কিছুটা স্পিন আদায় করেছিলেন, তবে প্রোটিয়াদের দৃঢ় প্রতিরোধ ভাঙা সম্ভব হয়নি। ফলে ২৮১ রানের টার্গেটও অজিদের কাছে রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। বরং চতুর্থ ইনিংসে ৫ উইকেট হাতে রেখে ২৮২ রান করে জয় ছিনিয়ে নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।

এই জয়ে সবচেয়ে বড় অবদান এইডেন মার্করামের। তার ১৩৬ রানের অনবদ্য ইনিংস ছিল নিখুঁত—দায়িত্বশীলতা, ধৈর্য, ম্যাচের পরিস্থিতি অনুযায়ী শট নির্বাচন—সবকিছুই ছিল পরিপূর্ণ। ২০৭ বলের এ ইনিংস যেন ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার দীর্ঘ অপেক্ষার শেষ প্রহরের নিখুঁত উত্তর। জয় থেকে মাত্র ৬ রান দূরে থাকতে আউট হলেও কাজের কাজ তিনি আগেই সেরে ফেলেছিলেন।

অধিনায়ক বাভুমার কথাও না বললেই নয়। দলের সবচেয়ে কঠিন সময়টিতে ১৩৪ বলে ৬৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলেছেন তিনি। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা উইকেটে থেকে যেভাবে লড়াই করেছেন, তা সত্যিই প্রশংসনীয়। প্রথম ইনিংসেও ৩৬ রান আসে তার ব্যাট থেকে। দুই ইনিংসে ব্যাট হাতে দারুণ ভূমিকা রাখেন ডেভিড বেন্ডিংহামও—প্রথম ইনিংসে ৪৫ ও দ্বিতীয় ইনিংসে অপরাজিত ইনিংস।

বোলিংয়ে কাগিসো রাবাদা ছিলেন দুর্দান্ত। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ উইকেট নিয়ে প্রমাণ করেছেন, বড় ম্যাচ মানেই তিনি। তাকে সমর্থন দিয়েছেন মার্কো জেনসেন (৪ উইকেট) ও লুঙ্গি এনগিডি (৩ উইকেট)।

প্রথম দিনেই অস্ট্রেলিয়ার শীর্ষ ব্যাটারদের বিপদে ফেলে দেয় দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ৬৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাকফুটে চলে যায় অজিরা। রাবাদা ফিরিয়ে দেন খাজা ও ক্যামেরন গ্রিনকে, আর জেনসেন তুলে নেন লাবুশেনের উইকেট। হেডও ফিরেন মাত্র ১১ রানে।

পরবর্তীতে স্টিভ স্মিথ ও বেউ ওয়েবস্টার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও শেষ পাঁচ উইকেট হারায় মাত্র ২০ রানে। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়া গুটিয়ে যায় ২১২ রানে।

এই ম্যাচ শুধু একটি ট্রফি জয়ের গল্প নয়, বরং দক্ষিণ আফ্রিকার লম্বা হতাশার ইতিহাসে একটি গৌরবময় নতুন অধ্যায়। এবার তারা আর ‘চোকার্স’ নয় তারা এখন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন।