ঢাকা ০৫:২২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৬ জুন ২০২৫, ২২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আইপিএলের শিরোপা হাতে কোহলির কান্না: বেঙ্গালুরুর ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
  • / 13

ছবি সংগৃহীত

অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত বিরাট কোহলির হাতে উঠল আইপিএল ট্রফি। ১৮ বার চেষ্টা, চারটি ফাইনাল সব হতাশা পেছনে ফেলে চতুর্থবারে এসে সাফল্যের মুখ দেখলেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম মহাতারকা। ফাইনালের শেষ বলটি করতে আসা জশ হ্যাজলউডের ওভার শেষ হতেই কোহলির চোখ ছলছল করে উঠল। বোঝাই যাচ্ছিল, এই জয় তাঁর জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

আইপিএল ইতিহাসে এটি বেঙ্গালুরুর প্রথম শিরোপা। আর এই শিরোপা জয়ের পথটাও ছিল তুলনামূলক মসৃণ। প্রথমে ব্যাট করে বেঙ্গালুরু ৯ উইকেটে তোলে ১৯০ রান। জবাবে পাঞ্জাব কিংস থামে ৭ উইকেটে ১৮৪ রানে। যদিও ব্যবধান মাত্র ৬ রানের, তবে ম্যাচের গতিপথ দেখে বোঝা যাচ্ছিল পাঞ্জাব কয়েক ওভার আগেই ছিটকে গেছে।

১৯০ রান আইপিএলে বড় কোনো স্কোর না হলেও এবারের আহমেদাবাদ ভেন্যুতে এটি প্রথম ইনিংসে সর্বনিম্ন স্কোর। এই চাপটাই সম্ভবত পাঞ্জাবের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে বেঙ্গালুরুর স্পিনার ক্রুনাল পান্ডিয়া ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট, যা ফাইনালের জন্য যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে।

পাঞ্জাবের ব্যাটিং লাইনআপ যেন খোলসবন্দি ছিল। ওপেনার প্রভসিমরান সিং ও প্রিয়াংশ আর্য যথাক্রমে ২২ বলে ২৬ ও ১৯ বলে ২৪ রান করেন। তবে ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে হতাশাজনক চিত্র ছিল নেহাল ওয়াধেরার ইনিংস। ১৮ বলে মাত্র ১৫ রান করে দলের গতির চাকায় বড়সড় ধাক্কা দেন তিনি। ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল জশ ইংলিশ।

তার আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা বেঙ্গালুরুও শুরুটা খুব একটা ঝোড়ো করতে পারেনি। প্রথম ওভারেই ফিল সল্ট ১৩ রান এনে দেন, কিন্তু খুব দ্রুতই থেমে যান তিনি। দলীয় ১৮ রানে ফেরেন সল্ট (১৬)। এরপর ছোট ছোট দুটি ইনিংস খেলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল (২৪) ও অধিনায়ক রজত পাতিদার (২৬), যা দলের রানের গতি ধরে রাখে।

তবে ম্যাচে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব নিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। ইনিংস গড়ার চাপ নিজের কাঁধে তুলে নেন, ৩৫ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। কিছুটা ওয়ানডে ঘরানার সেই ইনিংস হয়তো চাপ তৈরি করেছিল, তবে সেটিই হয়তো ছিল প্রয়োজনীয়।

শেষদিকে লিয়াম লিভিংস্টোন (২৫) ও জিতেশ শর্মা (২৪)-এর ঝলমলে ইনিংস আর রোমারিও শেফার্ডের ১৭ রানে ভর করে বেঙ্গালুরু প্রায় দুই শ’ ছুঁয়ে ফেলে। তবে শেষ ওভারে ভারতীয় পেসার আর্শদ্বীপ সিং মাত্র ৩ রান দিয়ে তুলে নেন ৩টি উইকেট, যা বেঙ্গালুরুর স্কোরকে কিছুটা থামিয়ে দেয়।

বেঙ্গালুরুর হয়ে কাইল জেমিসনও দারুণ বোলিং করেছেন, নিয়েছেন ৩টি উইকেট।

শেষ পর্যন্ত ফাইনালের চাপ সামলে জয় তুলে নিয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরলেন কোহলি। ক্যারিয়ারের এই বিশেষ মুহূর্তে কান্না যেন বলে দিচ্ছিল এটা ছিল শুধু এক ম্যাচের জয় নয়, এটা ছিল স্বপ্নের বাস্তবায়ন।

নিউজটি শেয়ার করুন

আইপিএলের শিরোপা হাতে কোহলির কান্না: বেঙ্গালুরুর ১৮ বছরের অপেক্ষার অবসান

আপডেট সময় ১০:১১:৩৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫

অবশেষে সেই কাঙ্ক্ষিত মুহূর্ত বিরাট কোহলির হাতে উঠল আইপিএল ট্রফি। ১৮ বার চেষ্টা, চারটি ফাইনাল সব হতাশা পেছনে ফেলে চতুর্থবারে এসে সাফল্যের মুখ দেখলেন ভারতীয় ক্রিকেটের অন্যতম মহাতারকা। ফাইনালের শেষ বলটি করতে আসা জশ হ্যাজলউডের ওভার শেষ হতেই কোহলির চোখ ছলছল করে উঠল। বোঝাই যাচ্ছিল, এই জয় তাঁর জীবনে কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

আইপিএল ইতিহাসে এটি বেঙ্গালুরুর প্রথম শিরোপা। আর এই শিরোপা জয়ের পথটাও ছিল তুলনামূলক মসৃণ। প্রথমে ব্যাট করে বেঙ্গালুরু ৯ উইকেটে তোলে ১৯০ রান। জবাবে পাঞ্জাব কিংস থামে ৭ উইকেটে ১৮৪ রানে। যদিও ব্যবধান মাত্র ৬ রানের, তবে ম্যাচের গতিপথ দেখে বোঝা যাচ্ছিল পাঞ্জাব কয়েক ওভার আগেই ছিটকে গেছে।

১৯০ রান আইপিএলে বড় কোনো স্কোর না হলেও এবারের আহমেদাবাদ ভেন্যুতে এটি প্রথম ইনিংসে সর্বনিম্ন স্কোর। এই চাপটাই সম্ভবত পাঞ্জাবের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। বিশেষ করে বেঙ্গালুরুর স্পিনার ক্রুনাল পান্ডিয়া ৪ ওভারে মাত্র ১৭ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট, যা ফাইনালের জন্য যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছে।

পাঞ্জাবের ব্যাটিং লাইনআপ যেন খোলসবন্দি ছিল। ওপেনার প্রভসিমরান সিং ও প্রিয়াংশ আর্য যথাক্রমে ২২ বলে ২৬ ও ১৯ বলে ২৪ রান করেন। তবে ব্যাটিংয়ের সবচেয়ে হতাশাজনক চিত্র ছিল নেহাল ওয়াধেরার ইনিংস। ১৮ বলে মাত্র ১৫ রান করে দলের গতির চাকায় বড়সড় ধাক্কা দেন তিনি। ব্যতিক্রম ছিলেন কেবল জশ ইংলিশ।

তার আগে টস হেরে ব্যাট করতে নামা বেঙ্গালুরুও শুরুটা খুব একটা ঝোড়ো করতে পারেনি। প্রথম ওভারেই ফিল সল্ট ১৩ রান এনে দেন, কিন্তু খুব দ্রুতই থেমে যান তিনি। দলীয় ১৮ রানে ফেরেন সল্ট (১৬)। এরপর ছোট ছোট দুটি ইনিংস খেলেন মায়াঙ্ক আগারওয়াল (২৪) ও অধিনায়ক রজত পাতিদার (২৬), যা দলের রানের গতি ধরে রাখে।

তবে ম্যাচে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব নিয়েছিলেন বিরাট কোহলি। ইনিংস গড়ার চাপ নিজের কাঁধে তুলে নেন, ৩৫ বলে ৪৩ রানের ইনিংস খেলেন তিনি। কিছুটা ওয়ানডে ঘরানার সেই ইনিংস হয়তো চাপ তৈরি করেছিল, তবে সেটিই হয়তো ছিল প্রয়োজনীয়।

শেষদিকে লিয়াম লিভিংস্টোন (২৫) ও জিতেশ শর্মা (২৪)-এর ঝলমলে ইনিংস আর রোমারিও শেফার্ডের ১৭ রানে ভর করে বেঙ্গালুরু প্রায় দুই শ’ ছুঁয়ে ফেলে। তবে শেষ ওভারে ভারতীয় পেসার আর্শদ্বীপ সিং মাত্র ৩ রান দিয়ে তুলে নেন ৩টি উইকেট, যা বেঙ্গালুরুর স্কোরকে কিছুটা থামিয়ে দেয়।

বেঙ্গালুরুর হয়ে কাইল জেমিসনও দারুণ বোলিং করেছেন, নিয়েছেন ৩টি উইকেট।

শেষ পর্যন্ত ফাইনালের চাপ সামলে জয় তুলে নিয়ে ট্রফি উঁচিয়ে ধরলেন কোহলি। ক্যারিয়ারের এই বিশেষ মুহূর্তে কান্না যেন বলে দিচ্ছিল এটা ছিল শুধু এক ম্যাচের জয় নয়, এটা ছিল স্বপ্নের বাস্তবায়ন।