ঢাকা ০২:২৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৩ জুন ২০২৫, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইন্টারকে গোল বন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন রাজা পিএসজি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:৩১:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫
  • / 7

ছবি সংগৃহীত

 

 

প্যারিসের কাতারি মালিকরা এবার যেন শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। ১৪ বছর আগে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ যখন পিএসজি কিনেছিল, তখনই বপন করা হয়েছিল ইউরোপ সেরা হওয়ার স্বপ্নের বীজ। লিওনেল মেসি, নেইমার, এমবাপ্পের মতো মহাতারকারাও সেই স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হলেও শেষমেশ এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ পিএসজি এবার জিতে নিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ, তাও ৫-০ গোলের অবিশ্বাস্য ব্যবধানে!

মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ফাইনালে ইন্টার মিলানকে বিধ্বস্ত করে প্রথমবারের মতো ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করল ফরাসি ক্লাবটি। শুধু তাই নয়, লিগ ও ফ্রেঞ্চ কাপ মিলিয়ে এক মৌসুমে তিন শিরোপা জিতে ত্রিমুকুট (ট্রেবল) জয় করল এনরিকের দল।

অলক্ষ্যে ভাগ্য যেন ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছিল। অবশেষে পিএসজির নতুন যাদুকর, কোচ লুইস এনরিকে এসে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটালেন। তাঁর কৌশলে দারুণ পারফরম্যান্স দেখাল তরুণ দলটি। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে পিএসজি। মাত্র ১২ মিনিটে আশরাফ হাকিমির গোল আর ২০ মিনিটে দেজিরে দুয়ের দ্বিতীয় গোলেই বুঝিয়ে দিয়েছিল, এই রাত তাদের।

বিরতির পর ৬৩ মিনিটে দ্বিতীয়বার এবং ৮৬ মিনিটে তৃতীয়বার গোল করেন দুয়ে। ৭৩ মিনিটে খিচা কাভারেস্কাইয়ার আরেকটি গোল এনে দেয় পিএসজিকে ৫-০ ব্যবধানে জয়ের সুবাস। ইন্টার যেন ভেঙে পড়েছিল বিরতির পরই। কোচ ইনজাঘির উত্তেজনা হারিয়ে যাওয়া, খেলোয়াড়দের হতাশ দৃষ্টিভঙ্গিই বলে দেয় রাতটা তাদের ছিল না।

দুর্দান্ত এই জয়ে কেবল পিএসজিরই নয়, এনরিকে’র ব্যক্তিগত বিজয়ের গল্পও জড়িয়ে আছে। ৯ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যাওয়া মেয়ের স্মৃতিকে উৎসর্গ করলেন তিনি এ জয়। ২০১৫ সালে বার্সার কোচ হিসেবে ট্রেবল জয়ের পর আবারো সেই বিরল অর্জন এবার পিএসজির ডাগআউটে।

ইন্টার ছিল অভিজ্ঞতায় এগিয়ে, একাদশের গড় বয়স ৩০ ছাড়িয়েছে। অথচ পিএসজির তরুণদের গড় বয়স মাত্র ২৫। কিন্তু মাঠে সেই ‘বয়েজ’-রাই দেখাল ‘মেন’দের কীভাবে হারাতে হয়। ইন্টারের শক্তিশালী রক্ষণও পিএসজির গতির কাছে ছিল নিরুপায়। প্রথমার্ধে কিছুটা প্রতিরোধ দিলেও, দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ।

সবচেয়ে বড় কথা, এই জয়ে ইতিহাস গড়েছে পিএসজি। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে এর আগে কোনো দল ৫-০ ব্যবধানে জয় পায়নি। থিয়েরি অঁরি তো বলেই ফেললেন, পিএসজি আরও ২-৩টি গোল করতে পারত।

১৯ বছর বয়সী দেজিরে দুয়ের হয়ে উঠলেন রাতের নায়ক। ফাইনালে জোড়া গোলের পাশাপাশি আরেকটি করালেন। ১৯৬২ সালে ইউসেবিওর পর তিনিই প্রথম টিনএজার হিসেবে ফাইনালে জোড়া গোল করলেন। ইতিহাস গড়লেন, প্রতিশোধও নিলেন পিএসজি যে ট্রফি এত বছর অধরা ছিল, এবার ঘরে তুলল কাতারি মালিকদের ‘স্বপ্নের ক্লাব’।

এই রাত শুধু পিএসজির নয়, ফুটবল ইতিহাসের এক ঐতিহাসিক অধ্যায়।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইন্টারকে গোল বন্যায় ভাসিয়ে চ্যাম্পিয়নস লিগের নতুন রাজা পিএসজি

আপডেট সময় ১০:৩১:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১ জুন ২০২৫

 

 

প্যারিসের কাতারি মালিকরা এবার যেন শান্তিতে ঘুমাতে পারবেন। ১৪ বছর আগে কাতার স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট গ্রুপ যখন পিএসজি কিনেছিল, তখনই বপন করা হয়েছিল ইউরোপ সেরা হওয়ার স্বপ্নের বীজ। লিওনেল মেসি, নেইমার, এমবাপ্পের মতো মহাতারকারাও সেই স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হলেও শেষমেশ এল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ পিএসজি এবার জিতে নিয়েছে চ্যাম্পিয়নস লিগ, তাও ৫-০ গোলের অবিশ্বাস্য ব্যবধানে!

মিউনিখের অ্যালিয়াঞ্জ অ্যারেনায় ফাইনালে ইন্টার মিলানকে বিধ্বস্ত করে প্রথমবারের মতো ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করল ফরাসি ক্লাবটি। শুধু তাই নয়, লিগ ও ফ্রেঞ্চ কাপ মিলিয়ে এক মৌসুমে তিন শিরোপা জিতে ত্রিমুকুট (ট্রেবল) জয় করল এনরিকের দল।

অলক্ষ্যে ভাগ্য যেন ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছিল। অবশেষে পিএসজির নতুন যাদুকর, কোচ লুইস এনরিকে এসে সেই অপেক্ষার অবসান ঘটালেন। তাঁর কৌশলে দারুণ পারফরম্যান্স দেখাল তরুণ দলটি। ম্যাচের শুরু থেকেই আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে পিএসজি। মাত্র ১২ মিনিটে আশরাফ হাকিমির গোল আর ২০ মিনিটে দেজিরে দুয়ের দ্বিতীয় গোলেই বুঝিয়ে দিয়েছিল, এই রাত তাদের।

বিরতির পর ৬৩ মিনিটে দ্বিতীয়বার এবং ৮৬ মিনিটে তৃতীয়বার গোল করেন দুয়ে। ৭৩ মিনিটে খিচা কাভারেস্কাইয়ার আরেকটি গোল এনে দেয় পিএসজিকে ৫-০ ব্যবধানে জয়ের সুবাস। ইন্টার যেন ভেঙে পড়েছিল বিরতির পরই। কোচ ইনজাঘির উত্তেজনা হারিয়ে যাওয়া, খেলোয়াড়দের হতাশ দৃষ্টিভঙ্গিই বলে দেয় রাতটা তাদের ছিল না।

দুর্দান্ত এই জয়ে কেবল পিএসজিরই নয়, এনরিকে’র ব্যক্তিগত বিজয়ের গল্পও জড়িয়ে আছে। ৯ বছর বয়সে ক্যান্সারে মারা যাওয়া মেয়ের স্মৃতিকে উৎসর্গ করলেন তিনি এ জয়। ২০১৫ সালে বার্সার কোচ হিসেবে ট্রেবল জয়ের পর আবারো সেই বিরল অর্জন এবার পিএসজির ডাগআউটে।

ইন্টার ছিল অভিজ্ঞতায় এগিয়ে, একাদশের গড় বয়স ৩০ ছাড়িয়েছে। অথচ পিএসজির তরুণদের গড় বয়স মাত্র ২৫। কিন্তু মাঠে সেই ‘বয়েজ’-রাই দেখাল ‘মেন’দের কীভাবে হারাতে হয়। ইন্টারের শক্তিশালী রক্ষণও পিএসজির গতির কাছে ছিল নিরুপায়। প্রথমার্ধে কিছুটা প্রতিরোধ দিলেও, দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি আত্মসমর্পণ।

সবচেয়ে বড় কথা, এই জয়ে ইতিহাস গড়েছে পিএসজি। চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে এর আগে কোনো দল ৫-০ ব্যবধানে জয় পায়নি। থিয়েরি অঁরি তো বলেই ফেললেন, পিএসজি আরও ২-৩টি গোল করতে পারত।

১৯ বছর বয়সী দেজিরে দুয়ের হয়ে উঠলেন রাতের নায়ক। ফাইনালে জোড়া গোলের পাশাপাশি আরেকটি করালেন। ১৯৬২ সালে ইউসেবিওর পর তিনিই প্রথম টিনএজার হিসেবে ফাইনালে জোড়া গোল করলেন। ইতিহাস গড়লেন, প্রতিশোধও নিলেন পিএসজি যে ট্রফি এত বছর অধরা ছিল, এবার ঘরে তুলল কাতারি মালিকদের ‘স্বপ্নের ক্লাব’।

এই রাত শুধু পিএসজির নয়, ফুটবল ইতিহাসের এক ঐতিহাসিক অধ্যায়।