মহাসড়কে ২০০ সিলিন্ডারসহ উল্টে গেল ট্রাক, একের পর এক বিস্ফোরণ

- আপডেট সময় ১২:৩৬:১৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ৪ জুন ২০২৫
- / 6
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সদর উপজেলার বিরাসার এলাকায় চট্টগ্রাম-সিলেট মহাসড়কে ভয়াবহ এক দুর্ঘটনায় অন্তত ২০০টিরও বেশি এলপি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে। বুধবার ভোর সাড়ে ৪টার দিকে গ্যাস সিলিন্ডারবাহী একটি ট্রাক উল্টে গিয়ে আগুন ধরে গেলে একের পর এক বিস্ফোরণে এলাকা কেঁপে ওঠে।
সৌভাগ্যবশত এই ভয়ঙ্কর ঘটনার পরেও কেউ হতাহত হয়নি। তবে বিস্ফোরণের প্রচণ্ড শব্দ, আগুন ও ধোঁয়ার কারণে চারপাশে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং মহাসড়কে কয়েক ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে।
জানা গেছে, ঢাকার শাহবাগ থেকে ছেড়ে আসা একটি সিলিন্ডারবাহী ট্রাক ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বর্ডার বাজারের দিকে যাচ্ছিল। শহর বাইপাসের বিরাসার এলাকায় মহাসড়কের বড় একটি গর্তে ট্রাকের চাকা পড়লে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। সামনের একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে সংঘর্ষ হলে সঙ্গে সঙ্গে ট্রাকে আগুন ধরে যায়।
কিছুক্ষণের মধ্যে আগুন ছড়িয়ে পড়ে ট্রাক ভর্তি গ্যাস সিলিন্ডারে এবং একের পর এক বিস্ফোরণ শুরু হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের শব্দ বহু দূর থেকেও শোনা গেছে, এবং আশপাশের ঘরবন্দি মানুষ আতঙ্কে ঘর ছেড়ে রাস্তায় নেমে আসে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া ফায়ার সার্ভিসের উপ-সহকারী পরিচালক নিউটন দাস জানান, “সম্ভবত প্রাইভেট কারটির ইঞ্জিন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে, যা ট্রাকের গ্যাস সিলিন্ডারগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে। ট্রাকে থাকা প্রায় সব সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়েছে। প্রাথমিকভাবে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এক কোটি টাকারও বেশি হতে পারে।”
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে এবং যান চলাচল স্বাভাবিক করতে কাজ শুরু করে। সকাল ৯টা পর্যন্ত উদ্ধার অভিযান চলে।
স্থানীয় বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, মহাসড়কের দীর্ঘদিনের ভাঙাচোরা অবস্থা এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবই এই দুর্ঘটনার পেছনে দায়ী। বর্ষার পানিতে গর্ত ঢাকা পড়ে থাকায় ট্রাকের চাকা পড়ে যায় গভীর গর্তে।
স্থানীয় অটোরিকশাচালক মাহাবুব রহমান সাকিব বলেন, “এই রাস্তার অবস্থা খুবই খারাপ। গর্তের কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। যদি রাস্তাটি ঠিক থাকত, এত বড় বিপর্যয় হতো না।”
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোজাফ্ফর হোসেন বলেন, “দুর্ঘটনার খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ গিয়ে উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে শহরের ভেতর দিয়ে বিকল্প রুটে যান চলাচলের ব্যবস্থা করা হয়।”
এই দুর্ঘটনা আবারও দেশের মহাসড়কগুলোর বেহাল দশা ও ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাস পরিবহনের নিরাপত্তা ব্যবস্থার দুর্বলতা তুলে ধরেছে বলে মন্তব্য করেছেন স্থানীয়রা।