ঢাকা ০৮:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫, ১৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

“চাঁদাবাজদের অভয়াশ্রম হবে না এনসিপি”— ময়মনসিংহে হুঁশিয়ারি হাসনাত আবদুল্লাহর

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১১:৫১:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫
  • / 12

ছবি সংগৃহীত

 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলের দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, এনসিপিকে কেউ চাঁদাবাজদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত করতে পারবে না।

সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহ শহরের টাউন হল মাঠে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ ও পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। বৃষ্টির মধ্যে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কেউ কেউ এনসিপির নাম ও ব্যানার ব্যবহার করে চাঁদাবাজির মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন। দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের অপকর্ম কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। যিনি রাজনীতির নামে এ পথে হাঁটছেন, তাকে দলের বাইরে যেতে হবে।

তিনি বলেন, লাখ লাখ কর্মীর প্রয়োজন নেই, বরং দরকার আদর্শবান কিছু মানুষের, যারা জনগণের পাশে থাকবে। কিছু নেতা-কর্মী রয়েছেন যারা বাস্তব কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ না নিয়ে শুধু নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চালান। তারা শুধু ফেসবুক আর প্রশাসনের দপ্তরে ছবি–বাণিজ্যে ব্যস্ত। এই সংস্কৃতি দলকে দুর্বল করে, নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এনসিপি এ সংস্কৃতি চায় না। এ ধরনের তেলবাজ, সেলফিবাজদের দলে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। সবার আগে নিজেদের ভেতর থেকেই শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে।

সভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, চলমান রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। তিনি জানান, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিতে সাংবিধানিক কমিটি গঠন করতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী ৫ আগস্টের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তব রূপ পাবে।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ময়মনসিংহবাসী যদি এনসিপির পাশে থাকে, তবে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব। তিনি জানান, ৩ আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে ময়মনসিংহবাসীকে আগাম আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ এখনও অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। পরিবেশ বিপর্যয় প্রকট, ব্রহ্মপুত্র নদকে কার্যত ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, বিগত সরকার শুধু গণতন্ত্র ও মানুষই হত্যা করেনি, তারা প্রকৃতিকে, নদ-নদীকেও হত্যা করেছে। এনসিপি পরিবেশবান্ধব ও সুষম উন্নয়ন চায়, যেখানে মানুষ ও প্রকৃতি উভয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

সভার আরেক বক্তা, দলের মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপির সদ্য সমাপ্ত ওয়াকআউট প্রসঙ্গে বলেন, শহীদের রক্তের সঙ্গে কেউ ওয়াকআউট করতে পারে না। তিনি বলেন, যখন খুনি হাসিনার নির্দেশে আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছিল, তখন আমরা পিছু হটিনি। আহতদের কেউ পিছু হটেনি। এখন, সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময়, সেখানে কিছু দল ওয়াকআউট করে জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করছে। তবে তিনি বলেন, যারা ফিরে এসেছে, তাদের স্বাগত জানানো হয়।

সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্যসচিব তাসনিম জারা এবং শহীদ সাগরের পিতা মো. আসাদুজ্জামান।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

“চাঁদাবাজদের অভয়াশ্রম হবে না এনসিপি”— ময়মনসিংহে হুঁশিয়ারি হাসনাত আবদুল্লাহর

আপডেট সময় ১১:৫১:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ জুলাই ২০২৫

 

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নাম ব্যবহার করে চাঁদাবাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন দলের দক্ষিণাঞ্চলীয় মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। তিনি বলেন, এনসিপিকে কেউ চাঁদাবাজদের নিরাপদ আশ্রয়স্থলে পরিণত করতে পারবে না।

সোমবার বিকেলে ময়মনসিংহ শহরের টাউন হল মাঠে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ ও পথসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন। বৃষ্টির মধ্যে আয়োজিত সভায় তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কেউ কেউ এনসিপির নাম ও ব্যানার ব্যবহার করে চাঁদাবাজির মতো অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছেন। দলের পক্ষ থেকে এ ধরনের অপকর্ম কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। যিনি রাজনীতির নামে এ পথে হাঁটছেন, তাকে দলের বাইরে যেতে হবে।

তিনি বলেন, লাখ লাখ কর্মীর প্রয়োজন নেই, বরং দরকার আদর্শবান কিছু মানুষের, যারা জনগণের পাশে থাকবে। কিছু নেতা-কর্মী রয়েছেন যারা বাস্তব কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রমে অংশ না নিয়ে শুধু নেতাদের সঙ্গে ছবি তুলে সামাজিক মাধ্যমে প্রচার চালান। তারা শুধু ফেসবুক আর প্রশাসনের দপ্তরে ছবি–বাণিজ্যে ব্যস্ত। এই সংস্কৃতি দলকে দুর্বল করে, নৈতিক ভিত্তিকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। এনসিপি এ সংস্কৃতি চায় না। এ ধরনের তেলবাজ, সেলফিবাজদের দলে থাকার কোনো প্রয়োজন নেই। সবার আগে নিজেদের ভেতর থেকেই শুদ্ধি অভিযান চালাতে হবে।

সভায় এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেন, চলমান রাজনৈতিক সংস্কার প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়ন এখন সময়ের দাবি। তিনি জানান, ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) নিরপেক্ষ নিয়োগ নিশ্চিতে সাংবিধানিক কমিটি গঠন করতে হবে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামী ৫ আগস্টের মধ্যেই ‘জুলাই সনদ’ ও ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ বাস্তব রূপ পাবে।

নাহিদ ইসলাম আরও বলেন, ময়মনসিংহবাসী যদি এনসিপির পাশে থাকে, তবে কাঙ্ক্ষিত বাংলাদেশের পথে অগ্রসর হওয়া সম্ভব। তিনি জানান, ৩ আগস্ট ঢাকায় কেন্দ্রীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতে ময়মনসিংহবাসীকে আগাম আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে।

তিনি অভিযোগ করেন, বিভাগীয় শহর ময়মনসিংহ এখনও অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত। পরিবেশ বিপর্যয় প্রকট, ব্রহ্মপুত্র নদকে কার্যত ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে। তিনি বলেন, বিগত সরকার শুধু গণতন্ত্র ও মানুষই হত্যা করেনি, তারা প্রকৃতিকে, নদ-নদীকেও হত্যা করেছে। এনসিপি পরিবেশবান্ধব ও সুষম উন্নয়ন চায়, যেখানে মানুষ ও প্রকৃতি উভয়ের সুরক্ষা নিশ্চিত হবে।

সভার আরেক বক্তা, দলের মুখ্য সমন্বয়কারী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বিএনপির সদ্য সমাপ্ত ওয়াকআউট প্রসঙ্গে বলেন, শহীদের রক্তের সঙ্গে কেউ ওয়াকআউট করতে পারে না। তিনি বলেন, যখন খুনি হাসিনার নির্দেশে আমাদের ওপর গুলি চালানো হয়েছিল, তখন আমরা পিছু হটিনি। আহতদের কেউ পিছু হটেনি। এখন, সেই রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে নতুন বাংলাদেশ গড়ার সময়, সেখানে কিছু দল ওয়াকআউট করে জনগণের সঙ্গে বেঈমানি করছে। তবে তিনি বলেন, যারা ফিরে এসেছে, তাদের স্বাগত জানানো হয়।

সভায় আরও বক্তব্য দেন এনসিপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, সদস্যসচিব তাসনিম জারা এবং শহীদ সাগরের পিতা মো. আসাদুজ্জামান।