সচিবালয়ে আজ তালা ঝোলানোর হুঁশিয়ারি

- আপডেট সময় ০৩:৫৮:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
- / 8
সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর গেজেট জারির প্রতিবাদে আজ সোমবার সচিবালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করেছে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এর আগে রোববার সচিবালয়ের ভেতরে পাঁচ শতাধিক কর্মকর্তা-কর্মচারী বিক্ষোভ করেন।
বাংলাদেশ সচিবালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী সংযুক্ত পরিষদের ব্যানারে দু’দিন ধরে চলমান এই আন্দোলনের মূল দাবি হলো, সংশোধিত আইন প্রত্যাহার। কর্মচারীরা এই খসড়াকে ‘নিবর্তনমূলক’ এবং ‘কালাকানুন’ আখ্যা দিয়ে বলেন, এটি অবিলম্বে বাতিল করতে হবে। দাবি মানা না হলে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য আন্দোলনে যাওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন।
সরকার গত রোববার সন্ধ্যায় সংশোধিত সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর গেজেট জারি করে জানায়, ‘ইহা অবিলম্বে কার্যকর হবে।’ এতে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮–এর ধারা ৩৭-এর পর একটি নতুন ধারা ‘৩৭ক’ যুক্ত করা হয়েছে, যেখানে সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা ও আচরণসংক্রান্ত কঠোর বিধান যুক্ত হয়েছে।
চার অপরাধ ও তিন শাস্তি
নতুন বিধানে সরকারি কর্মচারীদের জন্য চার ধরনের অপরাধ চিহ্নিত করা হয়েছে:
১. অন্য কর্মচারীদের মধ্যে অনানুগত্য বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির মতো কাজ
২. ছুটি বা যুক্তিসংগত কারণ ছাড়া অনুপস্থিত থাকা
৩. অন্যকে অনুপস্থিত থাকতে উস্কানি দেওয়া
৪. দায়িত্ব পালনে বিরত রাখতে প্ররোচনা দেওয়া
এই অপরাধের শাস্তি হিসেবে তিনটি ব্যবস্থা গ্রহণযোগ্য হবে— বরখাস্ত, অব্যাহতি, পদাবনতি বা বেতন হ্রাস
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অধ্যাদেশ মূলত ১৯৭৯ সালের সরকারি কর্মচারী (বিশেষ বিধান) অধ্যাদেশ পুনরায় কার্যকর করার মাধ্যমে চাকরির নিরাপত্তা হ্রাস করেছে।
অন্যদিকে, কর্মচারীদের দাবিগুলো পর্যালোচনা ও সুপারিশ দেওয়ার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এক স্থায়ী কমিটি পুনর্গঠন করেছে। কমিটির সভাপতির দায়িত্বে রয়েছেন জনপ্রশাসনের অতিরিক্ত সচিব। এছাড়া সংশ্লিষ্ট বিভাগের বিভিন্ন যুগ্ম সচিব এবং মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধিরা এতে সদস্য হিসেবে যুক্ত রয়েছেন।
এই কমিটি প্রতি মাসে বৈঠক করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী কর্মচারী প্রতিনিধি দলের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ থাকবে। কমিটি প্রয়োজনে অতিরিক্ত সদস্য কো-অপ্ট করতেও পারবে।
সচিবালয়ের ভেতরে এমন আন্দোলন অত্যন্ত ব্যতিক্রমী। আজকের তালা ঝোলানো কর্মসূচি ঘিরে সচিবালয়ে উত্তেজনা বিরাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও দাপ্তরিক কাজ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
সরকারের পক্ষ থেকে এখনও এই আন্দোলন নিয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেওয়া হয়নি।