বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে এ অঞ্চলের জন্য একটি আদর্শ মডেল হতে পারে: মাহফুজ আলম
সাম্প্রদায়িক সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশ যে দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে, তা দক্ষিণ এশিয়ার জন্য একটি অনুসরণীয় মডেল হতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। সোমবার দিবাগত রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘এ অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা, ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা ও ইসলামবিদ্বেষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বিশেষত মুসলিম নারী ও শিশুদের প্রতি ঘৃণাসূচক মনোভাব সামগ্রিকভাবে দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য উদ্বেগজনক। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এ ধরনের মনোভাব বা মিডিয়ার মাধ্যমে উসকানি এ অঞ্চলের স্থিতিশীলতাকে গভীর সংকটে ফেলতে পারে।’
জুলাই-পরবর্তী বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার বিরুদ্ধে নেওয়া পদক্ষেপ সম্পর্কে মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা কঠোর ও কার্যকর ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রতিটি ঘটনার সত্যতা যাচাইয়ের মাধ্যমে অপরাধীদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, অধিকাংশ সহিংসতা মূলত সাম্প্রদায়িক নয়, বরং রাজনৈতিক উদ্দেশ্য বা ব্যক্তিগত বিদ্বেষপ্রসূত।’
মাহফুজ আলম মনে করেন, বাংলাদেশের এখন প্রয়োজন একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে শুধু উত্তর-পশ্চিমের সীমান্ত অঞ্চলের দিকে তাকালে চলবে না, আমাদের দৃষ্টি আরও প্রসারিত করতে হবে বঙ্গোপসাগরের দিকে। একটি সমুদ্রকেন্দ্রিক আঞ্চলিক সহযোগিতা ও সমঝোতা গড়ে তুলতে হবে, যেখানে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চল ও বঙ্গোপসাগর অঞ্চল বিশেষ গুরুত্ব পাবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘দারা শিকো, রাজা রামমোহন রায় ও কাজী নজরুল ইসলামের মতো মহান মনীষীরা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তা অবশ্যই বাস্তবায়ন সম্ভব। ধর্মের নামে চরমপন্থা ও ইসলামবিদ্বেষকে আমাদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে। কোনো রাষ্ট্রই তার নাগরিকদের অন্যের চোখে দেখতে পারে না, বরং স্বীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে পথ নির্ধারণ করতে হয়।’
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মধ্যেই দক্ষিণ এশিয়ার দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা নিহিত রয়েছে এই বাস্তবতাকে সামনে রেখে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতার ওপর জোর দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।