মৌলভীবাজারে চা মৌসুমের শুভ সূচনা: শ্রমিকদের মুখে আনন্দের হাসি
মৌলভীবাজারে নতুন চা মৌসুমের সূচনা হয়েছে উৎসবমুখর পরিবেশে। জেলার ৯৩টি চা বাগানের মধ্যে শ্রী গোবিন্দপুর চা বাগানে সোমবার (১০ মার্চ) আনুষ্ঠানিকভাবে চা পাতা চয়ন শুরু হয়। মহসিন টি হোল্ডিং কোম্পানির এই বাগানে বিশেষ দোয়া মাহফিল ও পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে নতুন মৌসুমের যাত্রা শুরু হয়।
চা বাগানের স্বত্বাধিকারী ও ন্যাশনাল টি কোম্পানির পরিচালক মো. মহসিন মিয়া মধু জানান, “চা শ্রমিকদের আন্তরিকতা ও কঠোর পরিশ্রম আমাদের সফলতার মূল চাবিকাঠি। আমরা এবারও চায়ের গুণগত মান ধরে রেখে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।” তিনি আরও জানান, শ্রী গোবিন্দপুর চা বাগানের ৯০০ একর জায়গাজুড়ে ৯ লাখ কেজি চা পাতা উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।
বাগানের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) প্রশান্ত কুমার সরকার বলেন, “বৃষ্টিপাতের অভাবে কিছুটা বিলম্ব হলেও সেচের মাধ্যমে নতুন কুঁড়ি গজিয়েছে। কয়েক দিনের মধ্যে বৃষ্টি হলে বাগান আরও সবুজ হয়ে উঠবে।”
দীর্ঘ বিরতির পর চা শ্রমিকদের ব্যস্ততা শুরু হওয়ায় তাদের মধ্যেও আনন্দের আমেজ। শ্রমিক রত্না দেশোয়ারা বলেন, “আবার পাতা চয়ন করতে পেরে খুব ভালো লাগছে। সবাই কাজ নিয়ে খুশি।” চা মৌসুম সাধারণত মার্চ মাসে শুরু হয় এবং এর আগে টানা তিন মাস চা গাছের পরিচর্যা চলে।
এবার বৃষ্টিপাতের ঘাটতির কারণে কিছুটা দেরি হলেও চা সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী। মহসিন মিয়া মধু বলেন, “চায়ের মান বাড়াতে আমরা গাছের পুনিং ও পরিচর্যায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছি। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আশা করছি এবার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।”
চা মৌসুমের শুরুতে বাগানে সবুজ কুঁড়ির সমারোহ এক অপূর্ব দৃশ্যের সৃষ্টি করেছে। শ্রমিকদের ব্যস্ততা আর প্রকৃতির সজীবতা মিলিয়ে পুরো চা বাগান প্রাণবন্ত হয়ে উঠেছে। সামনের দিনগুলোতে পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত হলে চা উৎপাদন আরও সমৃদ্ধ হবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
চা শ্রমিকদের মুখে এখন প্রশান্তির হাসি, আর মালিকদের মনে লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের প্রত্যাশা। মৌলভীবাজারের চা বাগানে এই উৎসবমুখর পরিবেশ যেন চা শিল্পের সম্ভাবনাকে আরও উজ্জ্বল করে তুলছে।