ধর্ষণের বিরুদ্ধে ঢাবি শিক্ষার্থীদের ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে অন্তর্বর্তী সরকারকে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছেন। শনিবার (৮ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে রাজু ভাস্কর্যের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখপাত্র উমামা ফাতেমা এই ঘোষণা দেন। তিনি বলেন, “আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্ষণের দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে, অন্যথায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে পদত্যাগ করতে হবে।”
দেশজুড়ে সাম্প্রতিক ধর্ষণের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ধর্ষণবিরোধী মঞ্চ’ নামে একটি ফেসবুক গ্রুপ চালু করেছেন। সেখানে আনিকা তাহসিনা নামের এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, “ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই চলবে। আজ থেকে রাজু ভাস্কর্য আমাদের প্রতিবাদের প্রতীক।”
শনিবার মধ্যরাতে কবি সুফিয়া কামাল হলের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ-মিছিল নিয়ে বেরিয়ে আসেন। তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ হলসহ অন্যান্য হলের শিক্ষার্থীরাও যোগ দেন। একপর্যায়ে তারা রাজু ভাস্কর্যের সামনে সমবেত হন এবং সেখানে বিভিন্ন স্লোগান দেন “ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই”, “আমার সোনার বাংলায়, ধর্ষকদের ঠাঁই নাই”, “ধর্ষকদের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও”।
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীরা বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে দেশে একের পর এক ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে, কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া ধীরগতির হওয়ায় অপরাধীরা শাস্তি এড়িয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে মাগুরায় ৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণের ঘটনায় তারা তীব্র নিন্দা জানিয়ে দোষীদের দ্রুত সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় রোকেয়া হলের শিক্ষার্থীরা ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসির দাবিতে মশাল মিছিল করেন। মিছিলটি রোকেয়া হল থেকে শুরু হয়ে ভিসি চত্বর ঘুরে আবার হলে ফিরে আসে। শিক্ষার্থীরা বলেন, “বিগত বছরগুলোতে ধর্ষণের ঘটনায় যারা জড়িত ছিল, তাদেরও দ্রুত বিচার নিশ্চিত করতে হবে।”
রোকেয়া হলের মিছিলে শিক্ষার্থীরা আরও স্লোগান দেন “উই ওয়ান্ট জাস্টিস, হ্যাং দ্য রেপিস্ট”, “সারা বাংলায় খবর দে, ধর্ষকদের কবর দে”। ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে এই আন্দোলন কতদূর যাবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে শিক্ষার্থীদের দৃঢ় অবস্থান প্রমাণ করে, তারা আর চুপ থাকতে রাজি নয়।