০৯:০৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫
শিরোনাম :
নিজামী-মীর কাসেম-সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে: মির্জা ফখরুল ২০২৩ সাল থেকে ইসরায়েলের যুদ্ধের খরচ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৫৯ থেকে ৬৭ বিলিয়ন ডলার। মার্কিন সেনা ও সিআইএ এজেন্টদের বহিষ্কারের চিন্তা কলম্বিয়া প্রেসিডেন্ট পেত্রোর পেন্টাগনের বড় চুক্তি পেল ট্রাম্পের ছেলের ড্রোন কোম্পানি কেন ট্রাম্প-পুতিনের বুদাপেস্ট বৈঠক বাতিল হলো? হুমকিতে বিশ্বব্যাপী পোলিও টিকাদান কর্মসূচি যুক্তরাষ্ট্রকে ভেনেজুয়েলার হুঁশিয়ারি: “আমাদের হাতে ৫ হাজার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র” সিইসির সঙ্গে বিএনপির বৈঠক বঙ্গোপসাগরে সুস্পষ্ট লঘুচাপ, গভীর সমুদ্রে যাত্রা নিষেধ আতলেতিকোর জালে ১৪ মিনিটে ৪ গোল, দাপুটে জয়ে আর্সেনাল

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এগোচ্ছে ইসি, এগিয়ে প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৫৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫
  • / 40

ছবি সংগৃহীত

 

দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হয়ে ওঠা এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারা ভোট দিতে না পারায় হতাশ ছিলেন দীর্ঘদিন। তবে এবার সেই বঞ্চনার অবসান ঘটতে পারে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে।

সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসিরউদ্দিন জানিয়েছেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর ভোটিং পদ্ধতি চূড়ান্ত করা হবে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এ বিষয়ে কয়েক মাস ধরে নানা পর্যালোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কমিশন।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, প্রবাসীদের জন্য চারটি বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে—প্রক্সি ভোটিং, অনলাইন ভোটিং, পোস্টাল ব্যালট এবং সরাসরি ভোট। প্রতিটি পদ্ধতির সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় নিয়ে একটি কার্যকর ও বাস্তবায়নযোগ্য পদ্ধতি চূড়ান্ত করার কাজ করছে কমিশন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোসাদ্দেক হোসেন কামাল বলেন, “বর্তমানে ইসির হাতে সময় সীমিত। এ অবস্থায় যেসব দেশে সুযোগ আছে, সেখানে সরাসরি ভোট এবং অন্য ক্ষেত্রে পোস্টাল ভোটিং চালু করা যেতে পারে।”

ইসি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের কাছ থেকে মতামত চেয়ে ১৫ মে পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল। কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করে চলতি মাসের মধ্যেই একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে সবচেয়ে সহজ ও সম্ভাব্য বাস্তবায়নযোগ্য পদ্ধতি হিসেবে ‘প্রক্সি ভোটিং’ পদ্ধতিকে এগিয়ে রাখছে নির্বাচন কমিশন। এই পদ্ধতিতে প্রবাসীরা একটি অ্যাপে ফেস রিকগনিশনের মাধ্যমে নিজেরা রেজিস্ট্রেশন করবেন এবং ভোট দেওয়ার আগ্রহ জানাবেন। এরপর তারা দেশের মধ্যে একজন প্রতিনিধিকে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করবেন, যিনি প্রবাসীর পক্ষ থেকে ভোট দিতে পারবেন।

প্রক্সি ভোটারকে রেজিস্ট্রেশনের সময় জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এই পদ্ধতি অনেকটাই ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’র মতো। তবে এখানে একটি আইনি জটিলতা রয়েছে। কারণ, একজন নাগরিককে দুইটি ভোট দেওয়ার আইনি সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে সংবিধানে সংশোধন আনতে হবে।

প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতি নিয়ে ইতোমধ্যে একটি ধারণাপত্র নির্বাচন কমিশনের কাছে উপস্থাপন করেছে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি)। এতে বলা হয়, এই পদ্ধতিটি প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে তুলনামূলক সহজ এবং বাস্তবায়নযোগ্য। তবে কার্যকর করতে হলে মিশন অফিসগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রবাসীদের ডিজিটাল স্বাক্ষরতা নিশ্চিতকরণ, প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো তৈরি এবং আইনগত কাঠামো ঠিক করতে হবে।

ইসির পরামর্শক কমিটির সদস্য ড. আব্দুল আলীম বলেন, “প্রক্সি ভোটিংয়ে কিছু দুর্বলতা থাকলেও, এটি এখন পর্যন্ত প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে সহজ ও বাস্তবসম্মত পদ্ধতি।”

এখন অপেক্ষা শুধু কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের। দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেলে তা হবে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।

নিউজটি শেয়ার করুন

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে এগোচ্ছে ইসি, এগিয়ে প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতি

আপডেট সময় ০৩:৫৭:২৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ মে ২০২৫

 

দীর্ঘদিন ধরে প্রবাসীরা ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছেন। দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হয়ে ওঠা এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারা ভোট দিতে না পারায় হতাশ ছিলেন দীর্ঘদিন। তবে এবার সেই বঞ্চনার অবসান ঘটতে পারে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে জোরালো উদ্যোগ নিয়েছে।

সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসিরউদ্দিন জানিয়েছেন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে দ্রুত কার্যকর ভোটিং পদ্ধতি চূড়ান্ত করা হবে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শে এ বিষয়ে কয়েক মাস ধরে নানা পর্যালোচনা চালিয়ে যাচ্ছে কমিশন।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, প্রবাসীদের জন্য চারটি বিকল্প পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হচ্ছে—প্রক্সি ভোটিং, অনলাইন ভোটিং, পোস্টাল ব্যালট এবং সরাসরি ভোট। প্রতিটি পদ্ধতির সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় নিয়ে একটি কার্যকর ও বাস্তবায়নযোগ্য পদ্ধতি চূড়ান্ত করার কাজ করছে কমিশন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মোসাদ্দেক হোসেন কামাল বলেন, “বর্তমানে ইসির হাতে সময় সীমিত। এ অবস্থায় যেসব দেশে সুযোগ আছে, সেখানে সরাসরি ভোট এবং অন্য ক্ষেত্রে পোস্টাল ভোটিং চালু করা যেতে পারে।”

ইসি ইতোমধ্যে রাজনৈতিক দল, বিশেষজ্ঞ ও অংশীজনদের কাছ থেকে মতামত চেয়ে ১৫ মে পর্যন্ত সময়সীমা নির্ধারণ করেছিল। কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ জানিয়েছেন, প্রাপ্ত মতামত বিশ্লেষণ করে চলতি মাসের মধ্যেই একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতি চূড়ান্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।

এদিকে সবচেয়ে সহজ ও সম্ভাব্য বাস্তবায়নযোগ্য পদ্ধতি হিসেবে ‘প্রক্সি ভোটিং’ পদ্ধতিকে এগিয়ে রাখছে নির্বাচন কমিশন। এই পদ্ধতিতে প্রবাসীরা একটি অ্যাপে ফেস রিকগনিশনের মাধ্যমে নিজেরা রেজিস্ট্রেশন করবেন এবং ভোট দেওয়ার আগ্রহ জানাবেন। এরপর তারা দেশের মধ্যে একজন প্রতিনিধিকে ভোট দেওয়ার ক্ষমতা প্রদান করবেন, যিনি প্রবাসীর পক্ষ থেকে ভোট দিতে পারবেন।

প্রক্সি ভোটারকে রেজিস্ট্রেশনের সময় জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিস্তারিত তথ্য দিতে হবে। এই পদ্ধতি অনেকটাই ‘পাওয়ার অব অ্যাটর্নি’র মতো। তবে এখানে একটি আইনি জটিলতা রয়েছে। কারণ, একজন নাগরিককে দুইটি ভোট দেওয়ার আইনি সুযোগ সৃষ্টি করতে হলে সংবিধানে সংশোধন আনতে হবে।

প্রক্সি ভোটিং পদ্ধতি নিয়ে ইতোমধ্যে একটি ধারণাপত্র নির্বাচন কমিশনের কাছে উপস্থাপন করেছে মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি)। এতে বলা হয়, এই পদ্ধতিটি প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে তুলনামূলক সহজ এবং বাস্তবায়নযোগ্য। তবে কার্যকর করতে হলে মিশন অফিসগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধি, প্রবাসীদের ডিজিটাল স্বাক্ষরতা নিশ্চিতকরণ, প্রযুক্তিগত পরিকাঠামো তৈরি এবং আইনগত কাঠামো ঠিক করতে হবে।

ইসির পরামর্শক কমিটির সদস্য ড. আব্দুল আলীম বলেন, “প্রক্সি ভোটিংয়ে কিছু দুর্বলতা থাকলেও, এটি এখন পর্যন্ত প্রবাসীদের জন্য সবচেয়ে সহজ ও বাস্তবসম্মত পদ্ধতি।”

এখন অপেক্ষা শুধু কমিশনের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের। দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রবাসীদের ভোটাধিকার প্রয়োগের সুযোগ পেলে তা হবে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।