পাকিস্তানকে অশান্ত করতেই ট্রেনে সন্ত্রাসী হামলা চালানো হয়েছে: জাতিসংঘে পাকিস্তান

- আপডেট সময় ০৩:২৫:২৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ মার্চ ২০২৫
- / 39
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে (ইউএনএসসি) পাকিস্তান প্রথমবারের মতো বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ)-এর সন্ত্রাসী হামলার বিষয়টি উত্থাপন করেছে। দেশটির অভিযোগ, আফগানিস্তান সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে এবং সীমান্তবর্তী হামলায় মদদ দিচ্ছে।
পাকিস্তানের স্থায়ী প্রতিনিধি মুনির আকরাম জাতিসংঘে বলেন, বেলুচিস্তানের জাফর এক্সপ্রেসে হামলার সময় সন্ত্রাসীরা সরাসরি আফগানিস্তানে অবস্থানরত পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। এই হামলার পরিকল্পনা ও অর্থায়ন আফগানিস্তান থেকেই করা হয়েছে বলে পাকিস্তানের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ রয়েছে। তিনি জানান, ইসলামাবাদের প্রধান প্রতিপক্ষ আফগানিস্তানে আশ্রিত গোষ্ঠীগুলোর মাধ্যমে পাকিস্তানে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করছে।
এই হামলায় শতাধিক যাত্রী জিম্মি হয় এবং ২৫ জন নিরীহ নাগরিক নিহত হন। পাকিস্তানি বিশেষ বাহিনী পাল্টা অভিযানে ৩৩ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করে। এ ঘটনার পর পাকিস্তান নিরাপত্তা পরিষদকে পশ্চিমা সীমান্ত থেকে আসা সন্ত্রাসী হামলা ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে এবং শিগগিরই সন্ত্রাসবিরোধী পদক্ষেপের প্রস্তাব উত্থাপন করবে।
জাতিসংঘের আফগানিস্তান সহায়তা মিশনের (ইউএনএএমএ) মেয়াদ এক বছর বাড়ানোর প্রস্তাব গৃহীত হওয়ার সময় পাকিস্তানও তাতে সমর্থন জানায়। মুনির আকরাম বলেন, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার এখনই সময়। বিশেষ করে আইএসআইএস, আল-কায়েদা, তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি), বিএলএ এবং মাজিদ ব্রিগেডের মতো গোষ্ঠীগুলো আফগানিস্তানসহ গোটা অঞ্চলে নিরাপত্তার জন্য হুমকি হয়ে উঠেছে।
আফগানিস্তানে তালেবান সরকারকে কড়া সমালোচনা করে তিনি বলেন, তালেবান প্রশাসন দায়েশ দমনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে এবং সন্ত্রাসীদের প্রতি নীরব সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে। টিটিপি, বিএলএ এবং মাজিদ ব্রিগেডকে ব্যবহার করে পাকিস্তানে হামলা চালানোর জন্য সরাসরি সহযোগিতা করছে।
তিনি আরও বলেন, জাফর এক্সপ্রেসে হামলাসহ পাকিস্তানে সাম্প্রতিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড দেশটির স্থিতিশীলতা ব্যাহত করার পরিকল্পনার অংশ। বিশেষ করে চীন-পাকিস্তান অর্থনৈতিক করিডোর (সিপিইসি) বাধাগ্রস্ত করতেই এই হামলা হচ্ছে।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের সাম্প্রতিক বিবৃতিতে আফগানিস্তানে সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর উপস্থিতির বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এবং তালেবানদের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। পাকিস্তান এটিকে ইতিবাচক হিসেবে দেখলেও দেশটি বারবার সন্ত্রাসী হামলার শিকার হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করছে। এর মধ্যেও পাকিস্তান জাতিসংঘের মাধ্যমে আফগানিস্তানে শান্তি, নিরাপত্তা ও উন্নয়নে সহযোগিতা করার প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।