কুরস্কে ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ পুতিনের, যুদ্ধবিরতি নিয়ে অনিশ্চয়তা
যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনা চললেও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন কুরস্কে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যারা আত্মসমর্পণ করবে, তাদের জীবনের নিরাপত্তা দেওয়া হবে।
শুক্রবার রাশিয়ার নিরাপত্তা পরিষদের এক বৈঠকে পুতিন দাবি করেন, ইউক্রেনীয় সেনারা কুরস্ক অঞ্চলে বেসামরিক নাগরিকদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে। সেই কারণেই রাশিয়া কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে। ইতোমধ্যেই রুশ বাহিনী কুরস্কে ইউক্রেনীয় সেনাদের ঘিরে ফেলেছে এবং শহরটির নিয়ন্ত্রণ নিতে তীব্র হামলা চালাচ্ছে।
এদিকে, যুদ্ধবিরতি নিয়ে রুশ প্রতিনিধিদের সঙ্গে মার্কিন কর্মকর্তাদের আলোচনা চলছে। প্রাথমিকভাবে ৩০ দিনের যুদ্ধবিরতির পরিকল্পনা থাকলেও পুতিনের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তে সেই আলোচনা অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি অভিযোগ করেছেন, যুদ্ধবিরতির প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করতে চাইছেন পুতিন এবং কুরস্কের পরিস্থিতি তারই প্রমাণ।
এই সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তিনি পুতিনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন কুরস্কে আটকে পড়া হাজার হাজার ইউক্রেনীয় সেনাকে হত্যা করা না হয়। ট্রাম্প সতর্ক করে বলেছেন, যদি এটি ঘটে, তবে তা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী সবচেয়ে বড় গণহত্যা হয়ে উঠবে।
পুতিন অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি যুদ্ধবিরতির আলোচনা নিয়ে আগ্রহী, তবে তার শর্ত স্পষ্ট কুরস্কে অবস্থানরত ইউক্রেনীয় বাহিনীকে আত্মসমর্পণ করতেই হবে। তবে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এই শর্ত মানতে নারাজ।
কূটনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কুরস্কের সামরিক সংঘাত শুধুমাত্র রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই; বরং এটি আন্তর্জাতিক ভূ-রাজনীতির এক জটিল মোড় নিয়েছে। একদিকে যুদ্ধবিরতির আলোচনা, অন্যদিকে পুতিনের কঠোর অবস্থান সব মিলিয়ে যুদ্ধের গতি কোন দিকে মোড় নেবে, তা নিয়ে সংশয় আরও গভীর হচ্ছে।