রুশ ড্রোন-ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাঁপল ইউক্রেন, নিহত অন্তত ২

- আপডেট সময় ১০:২৪:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫
- / 5
রাশিয়ার ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ফের কাঁপল ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চল। শুক্রবার (১২ জুলাই) গভীর রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত টানা আক্রমণে রোমানিয়া সীমান্তঘেঁষা অঞ্চলে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত দু’জন। ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে লভিভ ও লুৎস্ক শহর।
লভিভ শহরে রাশিয়ার চালানো শত শত ড্রোন ও একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় বিশাল আগুনের কুণ্ডলী তৈরি হয়। স্থানীয় সময় রাতভর এই হামলায় শহরের অন্তত ৪৬টি আবাসিক ভবন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভবন, একটি আদালত ভবন ও প্রায় ২০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান আংশিক বা পুরোপুরি ধ্বংস হয়েছে। ধ্বংসস্তূপে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে রাতভর কাজ করে ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা।
ইউক্রেনের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের লুৎস্ক শহর এবং রোমানিয়া সীমান্তবর্তী চেরনিভতসিতেও হামলা চালায় রুশ বাহিনী। এসব হামলায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন, কিছু প্রাণহানির খবরও পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন।
এছাড়া পূর্ব ইউক্রেনের খারকিভ শহরেও হামলা চালায় মস্কো। শহরের পরিত্যক্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠান ও একাধিক গুদামঘর ছিল রাশিয়ার নিশানায়। সেখানে অন্তত ১০টি শক্তিশালী বিস্ফোরণের খবর নিশ্চিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। জুলাই মাসে এটিই রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ও চতুর্থ দফার হামলা বলে জানিয়েছে ইউক্রেনীয় প্রতিরক্ষা সূত্র।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন তুলেছে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের একটি মন্তব্য। উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উনের সঙ্গে এক বৈঠকে ল্যাভরভ দাবি করেন, রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলে সামরিক বিজয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে উত্তর কোরীয় সেনারা। তিনি বলেন, “উত্তর কোরিয়ার সেনারা তাদের রক্ত ও জীবন দিয়ে রাশিয়ার পক্ষে লড়েছে।”
এই অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে কুরস্কে উত্তর কোরীয় সেনাদের স্মরণে একটি বিশেষ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণের কথা জানান ল্যাভরভ। পাশাপাশি তিনি বলেন, কিম জং উনের নির্দেশে আরও ছয় হাজার সেনা রাশিয়ায় পাঠানো হচ্ছে, যাদের মধ্যে এক হাজার মাইন নিষ্ক্রিয়কারী এবং পাঁচ হাজার সামরিক প্রকৌশলী রয়েছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে তার অবস্থান পরিষ্কার করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ফিন্যান্সিয়াল টাইমসে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ট্রাম্প মনে করেন, ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের ক্ষেত্রে তার প্রধান আলোচনার অংশীদার হচ্ছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি নন।
ট্রাম্পের মতে, মস্কো-কিয়েভ সংঘাত বন্ধের সবচেয়ে বড় বাধা জেলেনস্কি নিজেই। ফলে যুদ্ধ থামাতে হলে সরাসরি পুতিনের সঙ্গে আলোচনা করাই হবে যুক্তরাষ্ট্রের কৌশল। তাঁর এই মন্তব্য ঘিরে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, ততই বাড়ছে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ এবং হস্তক্ষেপের মাত্রা। তবে হামলার ধারাবাহিকতায় রাশিয়ার আগ্রাসন স্পষ্টত আরও ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে।