আধুনিক সভ্যতা ভেঙে পড়েছে, গণতন্ত্রও ব্যর্থ: মাহাথির মোহাম্মদ

- আপডেট সময় ১১:৪৮:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫
- / 9
আধুনিক সভ্যতা আজ ভেঙে পড়েছে এবং গণতন্ত্রও ব্যর্থ হয়েছে এমন মন্তব্য করেছেন মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রখ্যাত রাজনীতিবিদ মাহাথির মোহাম্মদ। সম্প্রতি ১০০তম জন্মদিনে তুরস্কের বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
মাহাথির বলেন, “গণতন্ত্র মানুষ তৈরিকৃত একটি পদ্ধতি, এটি নিখুঁত নয়। যেকোনো ব্যবস্থার মতো একে যথাযথভাবে প্রয়োগ না করলে তা সুফল বয়ে আনে না। বহুদলীয় গণতন্ত্র দুর্বলতা সৃষ্টি করে।” তার মতে, দুটি রাজনৈতিক দল থাকলেই একটি জয়ী হয়, অন্যটি বিরোধী হয় এভাবে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন সম্ভব হয়। কিন্তু সবাই নেতা হতে চায় বলে ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে পড়ে, ফলে গণতন্ত্র কার্যকরভাবে চলে না।
তিনি বলেন, আধুনিক সভ্যতা এখন এমন অবস্থায় পৌঁছেছে, যেখানে মানবিক মূল্যবোধ ধ্বংস হয়ে গেছে। “মানুষ আজ আবার বর্বরতার দিকে ফিরে যাচ্ছে,” উল্লেখ করেন তিনি। গাজায় ইসরায়েলের হামলার প্রসঙ্গ টেনে মাহাথির বলেন, “এটা এক ধরনের গণহত্যা। একটি জাতিকে ধ্বংস করতে যুদ্ধ ও অনাহারকে হাতিয়ার বানানো হয়েছে, আর যুক্তরাষ্ট্র এই অপরাধের পেছনে দাঁড়িয়ে থেকে সহায়তা করছে। এটি পশ্চিমা সভ্যতার পতনের ইঙ্গিত।”
মাহাথিরের ভাষ্য, “যুক্তরাষ্ট্র আজ বিশ্বনেতা হিসেবে বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছে। তারা আর মানবাধিকারের কথা বলে না, মানুষের জীবনের মূল্য বোঝে না।” ফিলিস্তিন ইস্যুতে মুসলিম বিশ্বের নির্লিপ্ততা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বলেন, “ওআইসি কাগজে-কলমে কাজ করে, কিন্তু বাস্তবে কেউ একজন আপত্তি করলেই সিদ্ধান্ত স্থগিত হয়ে যায়। ফলে তারা কিছুই করতে পারে না।”
নিজের অর্জন নিয়ে মাহাথির বলেন, “আমি নিজেকে মূল্যায়ন করব না। ইতিহাস বলবে আমি কী করেছি। তবে আমার দেশের জন্য কাজ করাটাই আমার জীবনের সবচেয়ে বড় তৃপ্তি।”
উল্লেখ্য, মাহাথির মোহাম্মদ ১৯২৫ সালের ১০ জুলাই ব্রিটিশ উপনিবেশাধীন মালয়েশিয়ার কেদাহ প্রদেশে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় চিকিৎসক হলেও মাত্র ২১ বছর বয়সে রাজনীতিতে সক্রিয় হন। ১৯৬৪ সালে তিনি প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং ১৯৮১ সালে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। টানা ২২ বছর প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে মালয়েশিয়াকে একটি উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।