ঢাকা ০৭:৩১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫, ২৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সাগরিকার হ্যাটট্রিক: শ্রীলঙ্কাকে গোলবন্যায় ভাসাল বাংলাদেশ বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ: পাবনায় ১০ নেতাকর্মীর বহিষ্কার কর্ণফুলী ইপিজেডে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড: আগুন নিয়ন্ত্রণে ৮ ইউনিটের অভিযান চারদিন সাগরে ভেসে থাকা ৯ জেলেকে উদ্ধার: এখনও নিখোঁজ ৩ বাংলাদেশে প্রথমবার মুক্তি পাচ্ছে নেপালি ছবি: ‘ন ডরাই’ এর বিনিময়ে ফয়জুল করীম: ‘দেশের রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়’ বিশ্বাসীদের কবি আল মাহমুদের ৯০তম জন্মদিন আজ ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের পথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন হাসপাতাল নিতে বলায় গৃহবধূকে কুপিয়ে হত্যা: আতঙ্কজনক ঘটনা ডেঙ্গু আতঙ্ক: মৃত্যু ২, হাসপাতালে ভর্তি ৩৩৭

জানুয়ারি ২০২৬ থেকে সৌদিতে বিদেশিদের দখলে: নতুন রিয়্যাল এস্টেট আইন কী বলছে?

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ০৩:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫
  • / 6

ছবি সংগৃহীত

 

 

সৌদি আরব ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে—প্রথমবারের মতো বিদেশি নাগরিকদের জন্য দেশটিতে রিয়েল এস্টেট বা স্থাবর সম্পত্তি কেনা এবং মালিকানা অর্জনের দ্বার খুলে দিচ্ছে। দেশটির শাসনব্যবস্থা এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সংস্কারে “ভিশন ২০৩০”-এর আওতায় এই উদ্যোগকে একটি বড় রূপান্তর হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সৌদির “জেনারেল রিয়েল এস্টেট অ্যাথরিটি (REGA)” ২০২৪ সালের মাঝামাঝি একটি খসড়া আইন প্রকাশ করে, যেখানে উল্লেখ করা হয়—
বিদেশিরা এখন থেকে সৌদি আরবের যেকোনো স্থানে, নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা ব্যতীত, রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি কিনতে পারবেন। এতে আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং এমনকি কৃষিজমির মালিকানাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মক্কা ও মদিনার ক্ষেত্রে এখনো কিছু নিষেধাজ্ঞা থাকবে, তবে বিশেষ অনুমতিপত্র বা “প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি” থাকলে সুযোগ মিলতে পারে।

 

এই আইনটি সৌদির অর্থনীতি বৈচিত্র্যময় করার লক্ষ্যে গৃহীত বড় এক পদক্ষেপ। বর্তমানে দেশটির অর্থনীতি তেলনির্ভর। কিন্তু Vision 2030 অনুযায়ী সৌদি সরকার ট্যুরিজম, বিনিয়োগ, আবাসন ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে চায়।
নতুন আইনের মাধ্যমে সৌদি সরকার চায়—
বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করতে,

রিয়েল এস্টেট খাতে প্রতিযোগিতা বাড়াতে,

শহরগুলোকে আধুনিক ও স্মার্ট নগরীতে রূপান্তর করতে।

নতুন আইনের সুবিধা পেতে হলে নিচের যে কোনও একটি থাকতে হবে:
সাধারণ বিদেশি নাগরিকরা নির্দিষ্ট ফি ও অনুমতির ভিত্তিতে কিনতে পারবেন সম্পত্তি;

প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি প্রাপ্তরা (Saudi Green Card holders) পূর্ণ মালিকানার অধিকার পাবেন;

বিনিয়োগকারীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করলে মালিকানার সুযোগ পাবেন;

বিদেশি কোম্পানিগুলোও এখন স্থায়ী অফিস বা প্রকল্প পরিচালনার জন্য সম্পত্তি কিনতে পারবে।

সৌদি আরবের প্রধান শহরগুলো যেমন:
রিয়াদ,

জেদ্দা,

আল-খোবার,

নিওম (নতুন উন্নয়ন প্রকল্প)

এইসব এলাকায় বিশেষভাবে বিদেশিদের জন্য অঞ্চল নির্ধারণ করা হবে, যাকে বলা হচ্ছে “Foreign Investment Zones”।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নতুন আইন:
সৌদিতে আবাসন খাতে নতুন চাহিদা সৃষ্টি করবে,

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে আকৃষ্ট করবে,

ভবিষ্যতের শহর গড়ার পথে বড় সহায়ক হবে।

তবে সমালোচকরাও বলছেন, বিদেশিদের অতিরিক্ত সম্পত্তি মালিকানা স্থানীয় নাগরিকদের জন্য সম্পত্তি দামের চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে সুষম নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ জরুরি।

২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে সৌদিতে রিয়েল এস্টেট কেনার সুযোগ বিদেশিদের জন্য নতুন এক দিগন্তের সূচনা করছে। এটি শুধুমাত্র একটি আইন পরিবর্তন নয়, বরং পুরো সমাজব্যবস্থার মধ্যে এক নতুন বাস্তবতার চিত্র। সৌদি আরবের রূপান্তরের পথে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

জানুয়ারি ২০২৬ থেকে সৌদিতে বিদেশিদের দখলে: নতুন রিয়্যাল এস্টেট আইন কী বলছে?

আপডেট সময় ০৩:৪৭:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

 

 

সৌদি আরব ২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে—প্রথমবারের মতো বিদেশি নাগরিকদের জন্য দেশটিতে রিয়েল এস্টেট বা স্থাবর সম্পত্তি কেনা এবং মালিকানা অর্জনের দ্বার খুলে দিচ্ছে। দেশটির শাসনব্যবস্থা এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক সংস্কারে “ভিশন ২০৩০”-এর আওতায় এই উদ্যোগকে একটি বড় রূপান্তর হিসেবে দেখা হচ্ছে।

সৌদির “জেনারেল রিয়েল এস্টেট অ্যাথরিটি (REGA)” ২০২৪ সালের মাঝামাঝি একটি খসড়া আইন প্রকাশ করে, যেখানে উল্লেখ করা হয়—
বিদেশিরা এখন থেকে সৌদি আরবের যেকোনো স্থানে, নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতা ব্যতীত, রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি কিনতে পারবেন। এতে আবাসিক, বাণিজ্যিক এবং এমনকি কৃষিজমির মালিকানাও অন্তর্ভুক্ত থাকবে। মক্কা ও মদিনার ক্ষেত্রে এখনো কিছু নিষেধাজ্ঞা থাকবে, তবে বিশেষ অনুমতিপত্র বা “প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি” থাকলে সুযোগ মিলতে পারে।

 

এই আইনটি সৌদির অর্থনীতি বৈচিত্র্যময় করার লক্ষ্যে গৃহীত বড় এক পদক্ষেপ। বর্তমানে দেশটির অর্থনীতি তেলনির্ভর। কিন্তু Vision 2030 অনুযায়ী সৌদি সরকার ট্যুরিজম, বিনিয়োগ, আবাসন ও প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পে বিদেশি বিনিয়োগ বাড়াতে চায়।
নতুন আইনের মাধ্যমে সৌদি সরকার চায়—
বিদেশি বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের আকৃষ্ট করতে,

রিয়েল এস্টেট খাতে প্রতিযোগিতা বাড়াতে,

শহরগুলোকে আধুনিক ও স্মার্ট নগরীতে রূপান্তর করতে।

নতুন আইনের সুবিধা পেতে হলে নিচের যে কোনও একটি থাকতে হবে:
সাধারণ বিদেশি নাগরিকরা নির্দিষ্ট ফি ও অনুমতির ভিত্তিতে কিনতে পারবেন সম্পত্তি;

প্রিমিয়াম রেসিডেন্সি প্রাপ্তরা (Saudi Green Card holders) পূর্ণ মালিকানার অধিকার পাবেন;

বিনিয়োগকারীরা নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ রিয়েল এস্টেটে বিনিয়োগ করলে মালিকানার সুযোগ পাবেন;

বিদেশি কোম্পানিগুলোও এখন স্থায়ী অফিস বা প্রকল্প পরিচালনার জন্য সম্পত্তি কিনতে পারবে।

সৌদি আরবের প্রধান শহরগুলো যেমন:
রিয়াদ,

জেদ্দা,

আল-খোবার,

নিওম (নতুন উন্নয়ন প্রকল্প)

এইসব এলাকায় বিশেষভাবে বিদেশিদের জন্য অঞ্চল নির্ধারণ করা হবে, যাকে বলা হচ্ছে “Foreign Investment Zones”।
বিশ্লেষকরা বলছেন, এই নতুন আইন:
সৌদিতে আবাসন খাতে নতুন চাহিদা সৃষ্টি করবে,

আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাগুলোকে আকৃষ্ট করবে,

ভবিষ্যতের শহর গড়ার পথে বড় সহায়ক হবে।

তবে সমালোচকরাও বলছেন, বিদেশিদের অতিরিক্ত সম্পত্তি মালিকানা স্থানীয় নাগরিকদের জন্য সম্পত্তি দামের চাপ সৃষ্টি করতে পারে। সেক্ষেত্রে সুষম নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ জরুরি।

২০২৬ সালের জানুয়ারি থেকে সৌদিতে রিয়েল এস্টেট কেনার সুযোগ বিদেশিদের জন্য নতুন এক দিগন্তের সূচনা করছে। এটি শুধুমাত্র একটি আইন পরিবর্তন নয়, বরং পুরো সমাজব্যবস্থার মধ্যে এক নতুন বাস্তবতার চিত্র। সৌদি আরবের রূপান্তরের পথে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।