সিরিয়া-ইসরাইল শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা, সৌদি-মার্কিন তৎপরতায় নতুন কূটনৈতিক সমীকরণ

- আপডেট সময় ১১:৪৩:২৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ জুলাই ২০২৫
- / 1
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা জানিয়েছে, সিরিয়া ও ইসরাইলের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরবের মধ্যস্থতা, গোপন বৈঠক এবং মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন উদ্যোগ মিলিয়ে মধ্যপ্রাচ্যে বড় ধরনের কূটনৈতিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত মিলছে। যদিও গোলান মালভূমি ও ফিলিস্তিন প্রশ্নে দীর্ঘদিনের বিরোধ এখনো দূর হবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
১৯৪৮ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের পর থেকে দুই দেশের সম্পর্ক কার্যত যুদ্ধাবস্থাতেই রয়েছে। ১৯৭৪ সালে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হলেও তা বেশিদিন স্থায়ী হয়নি। বাশার আল আসাদের শাসনামলে সিরিয়ার গৃহযুদ্ধ পরিস্থিতিতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে ওঠে।
সিরিয়ায় সরকার পরিবর্তনের পর নতুন প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল শারা যুক্তরাষ্ট্র, আরব দেশ এবং এমনকি ইসরাইলের সাথেও সম্পর্কের নতুন মাত্রা তৈরির চেষ্টা করছেন। তবে ফিলিস্তিনে ইসরাইলি আগ্রাসনের কারণে এই প্রচেষ্টা কতটা এগোবে তা নিয়ে সংশয় রয়ে গেছে।
এরই মধ্যে ইসরাইলি গণমাধ্যমে সিরিয়া-ইসরাইল সরাসরি যোগাযোগের খবর প্রকাশিত হয়েছে। আল জাজিরা জানিয়েছে, আব্রাহাম চুক্তির আদলে এবার দামেস্ক-তেল আবিবের মধ্যে নতুন অধ্যায় সূচনা হতে পারে। এই আলোচনার সূত্রপাত করেছে সংযুক্ত আরব আমিরাত, আর পুরো উদ্যোগের পেছনে রয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সৌদি সফরে সিরিয়ার প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে বাস্তবতা বলছে, চূড়ান্ত সমাধান এখনো অনেক দূরে। বিশেষ করে গোলান মালভূমির দখল এবং ইসরাইলি আগ্রাসন প্রশ্নে সিরিয়ার সরকার কোনো আপস করবে না বলে মনে করেন বিশ্লেষকরা।
এদিকে আল জাজিরা জানায়, ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বর্তমানে সিরিয়ার সঙ্গে একটি নিরাপত্তা চুক্তি করতে আগ্রহী। অপরদিকে সিরিয়া চায়, গাজায় ইসরাইলি হামলা বন্ধ হোক। এছাড়া তুর্কি সামরিক ঘাঁটি, ইরানি মিলিশিয়া এবং হিজবুল্লাহ বিষয়েও ইসরাইলের কড়া শর্ত রয়েছে।
চলমান গাজা যুদ্ধের মধ্যেই ইসরাইল লেবাননেও সামরিক অভিযান চালিয়েছে। একই সঙ্গে সিরিয়া ও লেবাননের সঙ্গে সম্পর্কের একটি কাঠামো দাঁড় করানোর চেষ্টায়ও আছে তারা। বিশ্লেষকদের মতে, যখন ইরান দুর্বল এবং ফিলিস্তিন ইস্যু অনিশ্চিত, ঠিক সেই সময় এই কূটনৈতিক প্রচেষ্টা মধ্যপ্রাচ্যের নতুন রাজনৈতিক মানচিত্র গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে।