ইসরায়েল-ইরান সংঘাতে উত্তপ্ত বিশ্ববাজার, বেড়েছে জ্বালানি তেলের দাম

- আপডেট সময় ১১:৩১:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ জুন ২০২৫
- / 17
মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে চলমান পাল্টাপাল্টি হামলার ফলে বিশ্ববাজারে আবারও তেলের দাম ঊর্ধ্বমুখী। সপ্তাহের শুরুতেই এ বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। সোমবার সকালে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি চার ডলার পর্যন্ত বেড়ে যায়।
বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানায়, আজ ব্রেন্ট ক্রুডের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ দশমিক ১২ ডলার বা ১ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৫ দশমিক ৩৫ ডলারে। অপরদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (ডব্লিউটিআই) তেলের দাম বেড়েছে ১ দশমিক ১০ ডলার বা ১ দশমিক ৫ শতাংশ, যার বর্তমান মূল্য ৭৪ দশমিক ৮ ডলার। গত শনিবারও তেলের দাম প্রায় ৩ শতাংশ বেড়েছিল।
বিশ্লেষকেরা জানান, শুক্রবার ইসরায়েল কর্তৃক ইরানের পরমাণু ও ক্ষেপণাস্ত্র স্থাপনায় বিমান হামলার পর বিশ্ববাজারে তেলের দাম হঠাৎ করেই ১৩ শতাংশ পর্যন্ত লাফিয়ে ওঠে। এ ঘটনায় মধ্যপ্রাচ্যে নতুন করে সামরিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
২০২২ সালের মার্চের পর এটাই ছিল এক দিনে তেলের দামের সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। একইসঙ্গে গত সপ্তাহজুড়ে যুক্তরাষ্ট্রের অপরিশোধিত তেলের দামও বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ।
ইসরায়েল-ইরানের এই সংঘাত এখন চতুর্থ দিনে পড়েছে। দুই পক্ষ একে অপরের দিকে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তবে সংকট নিরসনের কোনো ইঙ্গিত এখনও নেই।
এদিকে, ইরান হরমুজ প্রণালি বন্ধ করার চিন্তা করছে বলে জানিয়েছেন দেশটির এক শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা। আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান গোল্ডম্যান স্যাকস বলেছে, বিশ্ববাজারে ব্যবহৃত মোট তেলের প্রায় ২০ শতাংশ এই প্রণালির মাধ্যমে পরিবাহিত হয়। এটি বন্ধ হলে তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১০০ ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তবে আরবিসি ক্যাপিটাল মার্কেটসের বিশ্লেষক হেলিমা ক্রফট মনে করেন, বাহরাইনে অবস্থানরত যুক্তরাষ্ট্রের পঞ্চম নৌবহরের কারণে ইরানের পক্ষে পুরো প্রণালি বন্ধ করা সহজ হবে না। তবে ইরান ট্যাংকারে হামলা চালাতে বা প্রণালিতে মাইন পেতে রাখতে পারে এই সতর্কতাও দিয়েছেন তিনি।
হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে বিশ্বজুড়ে পণ্য পরিবহন ব্যাহত হবে। এতে আমদানি-রপ্তানির খরচ ও সময় বাড়বে, যা বাংলাদেশের মতো রপ্তানিনির্ভর অর্থনীতির জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়াতে পারে। সময়মতো পণ্য সরবরাহ না করতে পারলে চুক্তি বাতিলের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে।
এই সংঘাত এমন এক সময় ঘটছে, যখন বিশ্ব অর্থনীতি আগেই নানা অনিশ্চয়তায় ভুগছে। যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি শুল্কনীতি এবং বিনিয়োগ হ্রাসের প্রেক্ষিতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিও মন্থর হয়ে পড়ছে।