কানাডায় ভয়াবহ দাবানল আতঙ্ক, মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলে জরুরি অবস্থা জারি

- আপডেট সময় ০৪:০৩:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ মে ২০২৫
- / 6
উত্তর আমেরিকার দেশ কানাডার বিভিন্ন অঞ্চলে ভয়াবহ দাবানলে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। মধ্য ও পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়া এই দাবানল নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ম্যানিটোবা প্রদেশে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার (২৯ মে) ম্যানিটোবা সরকার জরুরি অবস্থা ঘোষণার পাশাপাশি উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের প্রায় ১৭ হাজার বাসিন্দাকে দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ফ্লিন ফ্লন শহরের অধিবাসীরাও রয়েছেন। আগুন ও ঘন ধোঁয়ার কারণে আশপাশের এলাকায় মারাত্মক পরিবেশগত হুমকি দেখা দিয়েছে।
ম্যানিটোবার প্রিমিয়ার ওয়াব কিনিউ এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, “এটি আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের বাসিন্দা স্থানান্তরের ঘটনা।” তিনি আরও বলেন, বাস্তুচ্যুত মানুষদের উইনিপেগসহ বিভিন্ন শহরের ফুটবল মাঠ ও কমিউনিটি সেন্টারে আশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। উদ্ধার কাজে যোগ দিয়েছে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরাও।
প্রিমিয়ার কিনিউ আরও জানান, “এই সংকট মোকাবিলায় সরকারের সব স্তরের সমন্বিত সহযোগিতা এবং বিপুল পরিমাণ সম্পদের প্রয়োজন হবে।”
এদিকে, দাবানলের ভয়াবহতা আলবার্টা প্রদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফস্টার ক্রিক অঞ্চলে তেল উত্তোলনকারী প্রতিষ্ঠান সিনোভাস এনার্জি তাদের কিছু কর্মীকে সরিয়ে নিয়েছে। আলবার্টার উত্তরাঞ্চলের চিপেওইয়ান লেক এলাকায় প্রায় ২৯০০ হেক্টর জমি দাবানলে পুড়ে যাচ্ছে। ফোর্ট ম্যাকমারির কাছে এই এলাকা হওয়ায় তেল কোম্পানিগুলো রয়েছে উচ্চ সতর্কতায়।
আলবার্টা সরকার জানিয়েছে, বর্তমানে চিপেওইয়ান লেক এলাকায় সরাসরি বড় ঝুঁকি না থাকলেও বাতাসের গতিপথ বদলালে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে। এ জন্য এলাকার বাসিন্দাদের এক ঘণ্টার মধ্যে সরে যেতে বলা হয়েছে।
এছাড়া, স্বান হিলস শহরের উত্তরে আরেকটি ভয়াবহ দাবানল ইতোমধ্যে ১৬০০ হেক্টরেরও বেশি এলাকা গ্রাস করেছে। শহরের প্রায় ১২০০ বাসিন্দাকে সোমবার রাতেই নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়। সেইসঙ্গে, অ্যাসপেনলিফ এনার্জি নামে একটি তেল ও গ্যাস কোম্পানি নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিদিনের প্রায় ৪ হাজার ব্যারেল সমপরিমাণ উৎপাদন সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।
কানাডাজুড়ে দাবানলের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি পরিবেশ ও জনজীবনের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।