ঢাকা ১২:০৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জাতীয় নির্বাচন ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে: প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পবিত্র ঈদুল আযহায় স্বাস্থ্যসচেতনতা: সুস্থ থাকুন, নিরাপদে ঈদ করুন আর্জেন্টিনার জয় চিলিতে, গোল আলভারেজের ঈদুল আজহা উপলক্ষে ওমানে ৬৪৫ কারাবন্দিকে ক্ষমা দিলেন সুলতান হাইথাম দুবাইয়ে ঈদুল আজহার নামাজ সম্পন্ন, ঈদগাহে মুসল্লিদের ঢল বাংলাদেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ বিলিয়ন ডলারে ফের অন্তঃসত্ত্বা ‘দৃশ্যম’ অভিনেত্রী ঈশিতা দত্ত, প্রকাশ্যে বেবি বাম্প বেলুন, রশি আর জেদ, এই তিন দিয়েই ডুবন্ত যুদ্ধজাহাজ তুলল উত্তর কোরিয়া 🕋 পবিত্র হজ আজ পুলিশের জন্য কেনা হচ্ছে ২০০ গাড়ি

যুদ্ধবিরতিতে ভারত-পাকিস্তান, কিন্তু অনিশ্চিত সিন্ধু পানিচুক্তি

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১২:১০:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • / 9

ছবি সংগৃহীত

 

 

টানা কয়েক দিনের সীমান্ত উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি গোলাগুলির পর অবশেষে ভারত ও পাকিস্তান গতকাল শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনের গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিচুক্তি এখনো স্থগিত রয়েছে, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন অব্যাহত রয়েছে।

রয়টার্স-কে দেওয়া এক যৌথ প্রতিবেদনে উভয় দেশের সরকারি সূত্র জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত কার্যকর হলেও পানিচুক্তি বিষয়ক অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ভারতের একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, “চুক্তি নিয়ে আমাদের অবস্থানে এখনো কোনো নড়চড় হয়নি।” পাকিস্তানের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “সিন্ধু চুক্তি যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু নদী ও এর উপনদীগুলোর পানি দু’দেশের মধ্যে ভাগ করে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্রে এই পানির ওপর প্রায় ৮০ শতাংশ নির্ভরশীল। এই চুক্তিকে দুই দেশের সম্পর্কের ‘জল কূটনীতি’র ভিত্তি হিসেবে দেখা হয়।

তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কাশ্মীরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে চুক্তি স্থগিত করা হয়। দিল্লির দাবি, এই হামলার পেছনে ইসলামাবাদের মদদ রয়েছে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে এবং চুক্তি বাতিলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

কাশ্মীর হামলার পর পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সীমান্তে সামরিক তৎপরতা, বাণিজ্যিক যোগাযোগ বন্ধ এবং ভিসা কার্যক্রম স্থগিতসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে দুই দেশ। এমনকি ভারত দাবি করে, ৭ মে তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে একাধিক সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

এর পর প্রতিদিনই সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে শেষ পর্যন্ত ১০ মে সন্ধ্যায় দু’পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। পাকিস্তান এই সমঝোতিকে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করলেও, ভারতের পক্ষ থেকে একে বলা হয়েছে ‘সকল সামরিক তৎপরতা বন্ধে সম্মতি’।

যুদ্ধবিরতি স্বস্তি দিলেও দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত, বিশেষ করে সিন্ধু পানিচুক্তি ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় কূটনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

যুদ্ধবিরতিতে ভারত-পাকিস্তান, কিন্তু অনিশ্চিত সিন্ধু পানিচুক্তি

আপডেট সময় ১২:১০:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

 

 

টানা কয়েক দিনের সীমান্ত উত্তেজনা ও পাল্টাপাল্টি গোলাগুলির পর অবশেষে ভারত ও পাকিস্তান গতকাল শনিবার (১০ মে) সন্ধ্যায় যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে দীর্ঘদিনের গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিচুক্তি এখনো স্থগিত রয়েছে, যার ফলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপোড়েন অব্যাহত রয়েছে।

রয়টার্স-কে দেওয়া এক যৌথ প্রতিবেদনে উভয় দেশের সরকারি সূত্র জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্ত কার্যকর হলেও পানিচুক্তি বিষয়ক অবস্থানে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ভারতের একটি উচ্চ পর্যায়ের সূত্র জানিয়েছে, “চুক্তি নিয়ে আমাদের অবস্থানে এখনো কোনো নড়চড় হয়নি।” পাকিস্তানের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেন, “সিন্ধু চুক্তি যুদ্ধবিরতির আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত ছিল না।”

উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি অনুযায়ী, সিন্ধু নদী ও এর উপনদীগুলোর পানি দু’দেশের মধ্যে ভাগ করে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। পাকিস্তানের কৃষিক্ষেত্রে এই পানির ওপর প্রায় ৮০ শতাংশ নির্ভরশীল। এই চুক্তিকে দুই দেশের সম্পর্কের ‘জল কূটনীতি’র ভিত্তি হিসেবে দেখা হয়।

তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাসে কাশ্মীরে হিন্দু পর্যটকদের ওপর প্রাণঘাতী হামলার পর ভারতের পক্ষ থেকে চুক্তি স্থগিত করা হয়। দিল্লির দাবি, এই হামলার পেছনে ইসলামাবাদের মদদ রয়েছে। যদিও পাকিস্তান এই অভিযোগ স্পষ্টভাবে অস্বীকার করেছে এবং চুক্তি বাতিলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়েছে।

কাশ্মীর হামলার পর পরিস্থিতি দ্রুত উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। সীমান্তে সামরিক তৎপরতা, বাণিজ্যিক যোগাযোগ বন্ধ এবং ভিসা কার্যক্রম স্থগিতসহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করে দুই দেশ। এমনকি ভারত দাবি করে, ৭ মে তারা পাকিস্তানের অভ্যন্তরে একাধিক সন্ত্রাসী ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।

এর পর প্রতিদিনই সীমান্তে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। তবে শেষ পর্যন্ত ১০ মে সন্ধ্যায় দু’পক্ষ একটি সমঝোতায় পৌঁছায়। পাকিস্তান এই সমঝোতিকে ‘যুদ্ধবিরতি চুক্তি’ হিসেবে অভিহিত করলেও, ভারতের পক্ষ থেকে একে বলা হয়েছে ‘সকল সামরিক তৎপরতা বন্ধে সম্মতি’।

যুদ্ধবিরতি স্বস্তি দিলেও দুই দেশের সম্পর্কের ভবিষ্যৎ এখনো অনিশ্চিত, বিশেষ করে সিন্ধু পানিচুক্তি ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় কূটনৈতিক অচলাবস্থা দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।