ঢাকা ১০:৪৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুন ২০২৫, ১৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জন্মদিনে ফুলেল শুভেচ্ছায় সিক্ত ড. মুহাম্মদ ইউনূস, তারেক রহমানের অভিনন্দন থাইল্যান্ডে প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ, সড়কে জনতার ঢল করোনায় আরও দুজনের মৃত্যু, ২৪ ঘণ্টায় নতুন শনাক্ত ৭ জন শিক্ষা সমাজ ও রাষ্ট্রের উপযোগী মানুষ গড়ে তোলে : প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা পরিবেশই নয়, অর্থনীতি ও জীববৈচিত্র্যও টিকিয়ে রাখতে বন নিরাপত্তার অন্যতম ভিত্তি: রিজওয়ানা জোটবদ্ধ ইসলামি দলই আগামী দিনে দেশের প্রধান রাজনৈতিক শক্তি হয়ে উঠবে: চরমোনাই পীর কুষ্টিয়ার দৌলতপুর সীমান্তে বিজিবির ৯ কোটি টাকার এলএসডি ও ফেনসিডিল উদ্ধার গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে দুই বছরের শিশুর মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ২৬২ জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে জামায়াতের ৩৬ দিনের কর্মসূচি ঘোষণা বিশেষ অভিযানে ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে গ্রেফতার ১,৫৪০ জন

ইউরোপের কারাগারে বন্দী ভিড়: ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বন্দী সংকট

খবরের কথা ডেস্ক
  • আপডেট সময় ১০:০২:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫
  • / 20

ছবি সংগৃহীত

 

ইউরোপের অনেক দেশের কারাগারে বর্তমানে এমন অবস্থা বিরাজ করছে যে, সেখানে ধারণক্ষমতার তুলনায় অনেক বেশি বন্দী রাখা হচ্ছে। ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে, কিছু দেশে এই সংখ্যা চরম মাত্রায় পৌঁছেছে, যা মানবাধিকার ও কারা ব্যবস্থার ওপর গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জরিপ অনুযায়ী, যেসব দেশে প্রতি ১০০ জন ধারণক্ষমতার স্থানে ১০৫ জন বা তার চেয়েও বেশি বন্দী রাখা হচ্ছে, সেই দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সাইপ্রাস। সেখানে প্রতি ১০০ জনের জায়গায় রাখা হচ্ছে ১৬৬ জন বন্দী। এরপর আছে রোমানিয়া (১২০), ফ্রান্স (১১৯), বেলজিয়াম (১১৫), হাঙ্গেরি (১১২), ইতালি (১০৯) এবং স্লোভেনিয়া (১০৭)।

এছাড়াও কিছু দেশে অতিরিক্ত হলেও তুলনামূলকভাবে একটু কম মাত্রায় এই সমস্যা বিরাজ করছে। ১০০ থেকে ১০৫ জন বন্দী প্রতি ১০০ জনের জায়গায় রাখা হচ্ছে গ্রিস (১০৩), সুইডেন (১০২), উত্তর ম্যাসেডোনিয়া (১০১), ক্রোয়েশিয়া (১০১) এবং তুরস্কে (১০০)।

এই অতিরিক্ত বন্দীসংখ্যা শুধু কারা কর্তৃপক্ষের জন্যই নয়, বন্দীদের জন্যও এক ভয়াবহ সংকট তৈরি করছে। সীমিত স্থানে গাদাগাদি করে রাখা বন্দীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে মানসিক চাপ, শারীরিক অসুস্থতা, এবং সহিংসতার ঝুঁকি। বন্দীদের মৌলিক মানবাধিকার যেমন নিরাপদ আবাসন, পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন – এসব নিশ্চিত করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।

এ অবস্থায় ইউরোপের অনেক দেশ বিকল্প শাস্তি ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে। ছোটখাটো অপরাধের ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের পরিবর্তে সামাজিক সেবা, আর্থিক জরিমানা বা মনিটরিংয়ের মতো বিকল্প পন্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে, কিছু দেশে নতুন কারাগার নির্মাণ এবং পুরনো কারাগার সংস্কার করার উদ্যোগও শুরু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র অবকাঠামো বাড়ালেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। অপরাধীদের পুনর্বাসন, শিক্ষা ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণ বাড়িয়ে অপরাধ পুনরাবৃত্তির হার কমানো এবং ন্যায়বিচারের মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করাই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।

ইউরোপের এই কারা সংকট এখন আর শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি মানবিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ যার সমাধান প্রয়োজন নীতিগত, প্রশাসনিক এবং মানবিক সমন্বয়ে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ইউরোপের কারাগারে বন্দী ভিড়: ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত বন্দী সংকট

আপডেট সময় ১০:০২:৪৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫

 

ইউরোপের অনেক দেশের কারাগারে বর্তমানে এমন অবস্থা বিরাজ করছে যে, সেখানে ধারণক্ষমতার তুলনায় অনেক বেশি বন্দী রাখা হচ্ছে। ইউরোপীয় কাউন্সিলের সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে, কিছু দেশে এই সংখ্যা চরম মাত্রায় পৌঁছেছে, যা মানবাধিকার ও কারা ব্যবস্থার ওপর গভীর উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

জরিপ অনুযায়ী, যেসব দেশে প্রতি ১০০ জন ধারণক্ষমতার স্থানে ১০৫ জন বা তার চেয়েও বেশি বন্দী রাখা হচ্ছে, সেই দেশগুলোর তালিকায় শীর্ষে রয়েছে সাইপ্রাস। সেখানে প্রতি ১০০ জনের জায়গায় রাখা হচ্ছে ১৬৬ জন বন্দী। এরপর আছে রোমানিয়া (১২০), ফ্রান্স (১১৯), বেলজিয়াম (১১৫), হাঙ্গেরি (১১২), ইতালি (১০৯) এবং স্লোভেনিয়া (১০৭)।

এছাড়াও কিছু দেশে অতিরিক্ত হলেও তুলনামূলকভাবে একটু কম মাত্রায় এই সমস্যা বিরাজ করছে। ১০০ থেকে ১০৫ জন বন্দী প্রতি ১০০ জনের জায়গায় রাখা হচ্ছে গ্রিস (১০৩), সুইডেন (১০২), উত্তর ম্যাসেডোনিয়া (১০১), ক্রোয়েশিয়া (১০১) এবং তুরস্কে (১০০)।

এই অতিরিক্ত বন্দীসংখ্যা শুধু কারা কর্তৃপক্ষের জন্যই নয়, বন্দীদের জন্যও এক ভয়াবহ সংকট তৈরি করছে। সীমিত স্থানে গাদাগাদি করে রাখা বন্দীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ছে মানসিক চাপ, শারীরিক অসুস্থতা, এবং সহিংসতার ঝুঁকি। বন্দীদের মৌলিক মানবাধিকার যেমন নিরাপদ আবাসন, পর্যাপ্ত চিকিৎসা ও পুনর্বাসন – এসব নিশ্চিত করাও কঠিন হয়ে পড়ছে।

এ অবস্থায় ইউরোপের অনেক দেশ বিকল্প শাস্তি ব্যবস্থার দিকে ঝুঁকছে। ছোটখাটো অপরাধের ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের পরিবর্তে সামাজিক সেবা, আর্থিক জরিমানা বা মনিটরিংয়ের মতো বিকল্প পন্থা গ্রহণ করা হচ্ছে। একই সঙ্গে, কিছু দেশে নতুন কারাগার নির্মাণ এবং পুরনো কারাগার সংস্কার করার উদ্যোগও শুরু হয়েছে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, শুধুমাত্র অবকাঠামো বাড়ালেই সমস্যার স্থায়ী সমাধান হবে না। অপরাধীদের পুনর্বাসন, শিক্ষা ও কর্মমুখী প্রশিক্ষণ বাড়িয়ে অপরাধ পুনরাবৃত্তির হার কমানো এবং ন্যায়বিচারের মাধ্যমে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করাই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান।

ইউরোপের এই কারা সংকট এখন আর শুধুমাত্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষার বিষয় নয়, এটি হয়ে উঠেছে একটি মানবিক ও সামাজিক চ্যালেঞ্জ যার সমাধান প্রয়োজন নীতিগত, প্রশাসনিক এবং মানবিক সমন্বয়ে।