আজ থেকে তিন দফা দাবি নিয়ে কর্মবিরতিতে প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ

- আপডেট সময় ০৯:৪৯:৫৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৫ মে ২০২৫
- / 22
সারা দেশের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা তিন দফা দাবিতে টানা কর্মবিরতিতে যাচ্ছেন। প্রধান দাবি চাকরির শুরু থেকেই ১১তম গ্রেডে বেতন। অথচ সরকার নির্ধারণ করেছে ১২তম গ্রেড। দাবি আদায়ে আজ সোমবার থেকে তাঁরা এক ঘণ্টার কর্মবিরতিতে নেমেছেন।
এর আগে রবিবার পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়ে দাবি পূরণের আল্টিমেটাম দিয়েছিলেন শিক্ষকরা। শুরুতে ১০ম গ্রেড চাইলেও এখন তাঁদের দাবি—অন্তত ১১তম গ্রেডে বেতন দিতে হবে। পাশাপাশি, ১০ ও ১৬ বছর চাকরির পর উচ্চতর গ্রেডের জটিলতা নিরসন এবং প্রধান শিক্ষক পদে শতভাগ পদোন্নতির দাবিও রেখেছেন।
ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী, ১৫ মে পর্যন্ত প্রতিদিন এক ঘণ্টা কর্মবিরতি চলবে। এরপর ১৬ থেকে ২০ মে দুই ঘণ্টা এবং ২১ থেকে ২৫ মে পর্যন্ত অর্ধদিবস কর্মবিরতি হবে। দাবি না মানলে ২৬ মে থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পূর্ণদিবস কর্মবিরতিতে যাবেন শিক্ষকরা।
জানা গেছে, দেশে ৬৫ হাজার ৬২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রায় পৌনে ৪ লাখ শিক্ষক কর্মরত। তাঁদের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের বেতন বর্তমানে ১৩তম গ্রেডে। অপরদিকে, প্রধান শিক্ষকরা পান ১১তম গ্রেডের বেতন।
গত ১৩ মার্চ উচ্চ আদালতের এক রায়ে ৩০ হাজার প্রধান শিক্ষককে দ্বিতীয় শ্রেণির কর্মকর্তা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়ে ১০ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণের নির্দেশ দেয়। এরপর সরকারের পক্ষ থেকে সহকারী শিক্ষকদের বেতনও এক ধাপ উন্নীত করার নীতিগত সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
পরামর্শক কমিটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সহকারী শিক্ষক’ পদ বিলুপ্ত করে শুরুতেই ‘শিক্ষক’ পদ চালু করা উচিত, যেখানে প্রথমে ১২তম গ্রেডে নিয়োগ দিয়ে দুই বছর পর চাকরি স্থায়ী হবে এবং আরও দুই বছর পর ‘সিনিয়র শিক্ষক’ পদে ১১তম গ্রেডে উন্নীত হবেন। প্রধান শিক্ষকরা পাবেন ১০ম গ্রেড।
তবে শিক্ষক সংগঠনগুলোর দাবি চার বছর নয়, চাকরির শুরু থেকেই ১১তম গ্রেডে বেতন এবং পদোন্নতির ক্ষেত্রে শতভাগ স্বচ্ছতা।
এ বিষয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সচিব মন্তব্য না করলেও শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, দাবি আদায়ে প্রয়োজনে দীর্ঘ সময় কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন তাঁরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড দিতে চাইলে আলাদা বেতন কাঠামো গঠন জরুরি, যা এই মুহূর্তে সম্ভব নয়। তবে পরামর্শক কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়নে মন্ত্রণালয় কাজ করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।