ধরলা তীরের পতিত জমিতে মিষ্টি কুমড়ার বাম্পার ফলল, সোনার ফসলে কৃষকের হাসি
লালমনিরহাটের ধরলা নদীর তীরবর্তী পতিত জমিগুলো যেন এখন স্বর্ণক্ষেত্র। আগে যেখানে কোনো ফসল হতো না, এখন সেখানে চাষ হচ্ছে মিষ্টি কুমড়া। আর সেই কুমড়াই বদলে দিচ্ছে কৃষকদের ভাগ্য। কৃষি বিভাগের পরামর্শ ও বিনা মূল্যের বীজে এবার আশাতীত ফলনে খুশি স্থানীয় চাষিরা।
পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন স্থানে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণ করা হয় উন্নতমানের মিষ্টি কুমড়ার বীজ। নদীর পলিমাটিতে চাষ হওয়া গাছে ধরেছে গড়ে পাঁচ থেকে দশটি কুমড়া। প্রতিটি কুমড়ার ওজন প্রায় পাঁচ থেকে সাত কেজি। বাজারে বর্তমানে কেজি প্রতি ৩০-৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা থেকে ভালো লাভ করছেন চাষিরা।
চাষি সাফিউল ইসলাম বলেন, “ধরলা নদীর পাড়ের কাদা মাটিতে বীজ রোপণ করেই এমন ফলন পেয়েছি। এক-দুই মাসের মধ্যেই কুমড়া তুলবো। বর্ষাকালে বাজারে তুললে আরও ভালো দাম পাব।”
জেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, চলতি রবি মৌসুমে ২০০ হেক্টর জমিতে চাষের লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও বাস্তবে কুমড়া চাষ হয়েছে প্রায় ৩০০ হেক্টরে। এতে বোঝা যাচ্ছে কৃষকদের আগ্রহ কতটা বেড়েছে। পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও তারা বাজারে বিক্রি করে বাড়তি আয় করছেন।
পাটগ্রাম উপজেলা কৃষি উপসহকারী শাহিনুর রহমান বলেন, “আমরা চাষিদের বিনা মূল্যে বীজ দিয়েছি, পরামর্শ দিয়েছি। প্রতিটি গাছে গড়ে ৫-১০টি কুমড়া ধরেছে। এটা তাদের জীবিকায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।”
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল গফফার জানান, “ধরলা তীরের পতিত জমি কাজে লাগিয়ে আমরা মিষ্টি কুমড়ার চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করছি। আগামীতে আরও বড় পরিসরে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে।”
পটভূমিতে একসময় অনাবাদি পড়ে থাকা এই জমিগুলো আজ স্থানীয় কৃষকের জীবনে এনে দিয়েছে নতুন সম্ভাবনার আলো। মিষ্টি কুমড়ার সুবাস ছড়িয়ে পড়ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এই সাফল্য নিঃসন্দেহে বদলে দিচ্ছে লালমনিরহাটের কৃষিচিত্র।